হৃদ রোগের
প্রাকৃতিক প্রতিকার বিধান
Dr.Shebendra karmakar
Doctorate & Ph.D in
Natural Medicine,USA
সংবহন তন্ত্র বা ভাসকুলার সিসটেম প্রধান দুটি অংশে বিভক্ত।
১/ রক্ত সংবহন পদ্ধতি যা হার্ট , রক্ত এবং রক্ত নালী দিয়ে গঠিত হয়।
২/ লিম্ফফেটিক পদ্ধতি যা লিম্ফনোড , এবং লিম্ফনালী , লিম্ফ ফ্লুইড দিয়ে গঠিত হয়।
হার্ট এবং রক্ত পরিবহন ব্যবস্থা:
মানুষের হার্ট ৪টি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত , পেশিবহুল একটি পাম্প ব্যবস্থা । এটির ওজন ৩০০ গ্রাম। দেহে মোট রক্তের পরিমান ৫-৬ লিটার। হার্ট প্রতি পাম্পে (বিট) ৮০মিলি রক্ত েেদহে (মহাধমনী ) নিক্ষেপ করে। একেই ‘স্ট্রোক ভলিউম বা ইজেকশন ফ্র্যাকশন ’ বলে। হার্ট প্রতি মিনিটে ৫-৬ লিটার রক্ত মহাধমনী তে নিক্ষেপ করে। একেই ‘মিনিট ভলিউম বা কার্ডিয়াক আউটপুট’ বলে। কার্ডিয়াক আউটপুট প্রয়োজনে ৪-৫ গুন বেশি হতে পারে। হার্ট বিশেষ ধরনের পেশি দিয়ে তৈরি।
হার্ট পেশির কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিন্মে উল্লেখ করা হলো।
১/ অটোম্যাটিসিটি (Automaticity): হৃদ সংকোচন ও প্রসারনের
জন্য এটি নিজে নিজে স্পন্দন তৈরি করে।
২/ কনট্র্যাকটিলিটি (Contractility): হৃদ পিন্ড সম্পূর্ন বা অধিকাংশ সংকোচিত হয়। সব পেশি বা কোন পেশিই নয় এমন টি হয় না (All or None) । হার্ট পেশি প্রথম সংকোচন এর পর দ্বিতীয় সংকোচনের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে । অর্থাৎ পেশির সংকোচনে একটি নির্দিষ্ট তাল রয়েছে।
৩/ কনডাকটিভিটি বা হৃদমিসিটি (Conductivity or Rythmicity): হৃদ পেশির সংকোচন ও প্রসারন এর জন্য এটি সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে স্পন্দন পরিবহন করতে পারে। এটিকে পারকিনজি পদ্ধতি বলে। এই পদ্ধতি এস-এ নোড (S-A Node) এ-ভি নোড (A-V Node) বান্ডেল অব হিজ (Bundle of His ) এবং এটির শাখা (Branch ) নিয়ে গঠিত হয় । এ গুলি বিশেষ ধরনের কোষ নিয়ে তৈরি পেশি তন্তু।
হার্ট পেশি কিভাবে স্পন্দন তৈরি করে:
হার্ট পেশির কোষ মধ্যস্থ এবং কোষ বহিস্থঃ কিছূ নির্দিষ্ট খনিজ আয়ন (সোডিয়াম , পটাশিয়াম , ক্যালশিয়াম) হার্টের স্বাভাবিক স্পন্দন সৃষ্টি ও পরিবহনের জন্য কাজ করে।
হৃদ পেশির স্পন্দনে পটাশিয়াম আায়নের প্রভাব:
পটাশিয়াম হৃদ পেশির প্রোটিন , ‘একটিন ও মায়োসিন’ এর
একত্রিত এবং বিচ্ছিন্ন হতে কাজ করে । হৃদ পেশির প্রতি স্পন্দনে কিছু পটাশিয়াম কোষ মধ্যস্থ তরল হতে বেরিয়ে আসে
এবং কিছু পটাশিয়াম আয়ন কোষ বহিস্থ স্তর হতে, কোষ মধ্যে প্রবেশ করে। পটাশিয়াম প্রবেশ প্রোটিন দ্বয়ের (একটিন ও মায়োসিন) বিচ্ছিন্ন হতে কাজ করে। এটিই হৃদপেশির প্রসারন (ডায়াস্টোল)। এবং পটাশিয়াম বাহির প্রোটিন দ্বয়ের (একটিন ও মায়োসিন) একত্রিত হতে সাহায্য করে। এটিই হৃদ পেশির সংকোচন বা সিসটোল। অতিারক্ত পটাসিয়াম এর কারনে ডায়াস্টোল বেশী ক্ষন থাকলে ‘হার্ট বিট ’ কমে যেতে থাকে। এ অবস্থায় ‘ পটাসিয়াম চ্যানেল ব্লকার ড্রাগ’ ডিজিটালিস ব্যবহার করে হার্ট বিট স্বাভাবিক করা হয়।
অর্থাৎ অতিরিক্ত পটাশিয়াম হৃদ পেশির প্রসারন বা ডায়াস্টোল বৃদ্ধি করে এবং কম পটাশিয়াম পেশির সংকোাচন বা সিসটোল বৃদ্ধি করে।
হৃদ পেশির স্পন্দনে ক্যালসিয়াম আয়নের ভূমিকা:
হৃদ পেশির কোষ বহিস্থ স্তরে ক্যালসিয়াম আয়ন বেড়ে গেলে হার্ট পেশির স্পন্দন সংকোচন (সিসটোল) অবস্থায় থেমে যায়। এটিকেই ‘ক্যালসিয়াম রিগর’ বলে। হৃদ পেশির কোষ মধ্যস্থ ক্যালসিয়াম,
কোষের এটিপি-এইজ (এটিপি থেকে তৈরি কৃত এনজাইম) কে উত্তেজিত করে যা এটিপি (এডিনোসিন ট্রাই ফসফেট-কোষের রাসায়নিক শক্তি) কে এডিপি (রাসায়নিক শক্তির ভিন্ন রূপ) তে রূপান্তরিত হতে কাজ করে। এই এডিপি , প্রোটিন ‘একটিন ও মায়োসিন ’ এর যুক্ত হয়ে ; একটিন +মায়োসিন +এডিপি যৌগ তৈরি করে। এই যৌগ পেশির সংকোচন অবস্থা তৈরি করে। অতিরিক্ত যৌগ অর্থাৎ বেশি ক্যালসিয়াম হৃদ পেশির সংকোচন বৃদ্ধি করে এবং থেমে যায়। এ অবস্থায় পেশির স্পন্দন কে চালু রাখার জন্য ডাক্তার গন এ্যালোপ্যাথিক ড্রাগ ‘ ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার ড্রাগ ’ এমলোডিপিন (Amlodipine) ব্যবহার করেন।
হৃদ পেশির স্পন্দনে সোডিয়াম আয়নের প্রভাব:
সোডিয়াম আয়ন ; রক্ত , কোষ মধ্যস্থ ও কোষ বহিস্থঃ স্তরের মধ্যে বিভিন্ন পদার্থের আদান প্রদান ও অসমোটিক চাপ রক্ষা করে থাকে। সোডিয়াম ও ক্যালসিয়াম আয়ন উভয়েই পেশির সংকোচনের জন্য কাজ করে । হৃদ পেশি কোষে সোডিয়াম ও ক্যালসিয়াম গ্রহনের জন্য ‘রিসেপ্টর ’ আছে। সোডিয়াম, রিসেপ্টর এর সাথে যুক্ত হয়ে
; সোডিয়াম+রিসেপ্টর যৌগ তৈরি করে । একই ভাবে ক্যালসিয়াম , রিসেপ্টর এর সাথে যুক্ত হয়ে ; ক্যালসিয়াম + রিসেপ্টর যৌগ তৈরি করে। স্বাভাবিক শরীর বৃত্তিয় কাজে এ দুটি যৌগ সাম্য অবস্থায় থাকে। কিন্তু কোষ বর্হিভূত সোডিয়াম এর অভাব হলে , কিছু সোডিয়াম , যৌগ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোষ বহিস্থ স্তরে প্রবেশ করে। ফলে হৃদ পেশি কোষ রিসেপ্টরের অধিকাংশ ‘ক্যালসিয়াম’ আয়ন দখল করে নেয় এবং পেশি কোষে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম আয়নের প্রবেশ ঘটে এবং পেশি কোষের সংকোচনশীলতা বৃদ্ধি করে।
হৃদ পেশির নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবহন পদ্ধতি:
হৃদ পেশি কোষ বৈদ্যুতিক প্রবাহ সৃষ্টির মাধ্যমে স্পন্দন পরিবহন করে। কোষের ভিতর সোডিয়ামের প্রবেশ এবং কোষ মধ্যস্থ পটাসিয়াম বাহির হওয়ার পর্যায়ক্রমিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বৈদ্যুতিক বিভব এবং বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়। কোষের ভিতর + ২০ মি: ভোল্ট বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সৃষ্টি পর্যন্ত সোডিয়াম প্রবেশ অব্যহত থাকে এবং এই অবস্থাকে হার্টের ডিপোলারাইজেশন অর্থাৎ সিসটোলিক বা সংকোচন বলে। এরপর কোষ মধ্যস্থ পটাসিয়াম বের হতে শুরু করে এবং কোষ বহিস্থঃ বিদ্যুৎ -৮০ মি:ভোল্ট পৌঁছা পর্যন্ত পটাসিয়াম বের হয় এবং এই অবস্থাকে হার্টের রিপোলারাইজেসন অর্থাৎ ডায়াস্টোল বা প্রসারন বলে। এ ভাবে ডিপোলারাইজেসন ও রিপোলাইরেজসন প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ প্রবাহ চলতে থাকে। হৃদ পেশির পারকিনজি সিসটেম এর এস-এ নোড থেকে প্রধান বৈদ্যুতিক স্পন্দন এর সৃষ্টি হয়।
এর এস-এ নোড হচ্ছে দেহের ‘পেসমেকার’। হৃদ পেশির এস-এ নোড নষ্ট হলে ডাক্তারগন কৃত্রিম পেসমেকার স্থাপন করে হৃদ পেশির বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা চালু রাখার চেষ্টা করেন।
হৃদ স্পন্দন তৈরির মাধ্যমে হার্ট কি ভাবে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া চালু রাখে:
আমরা জেনেছি হার্টের ৪টি প্রোকষ্ঠ থাকে। । উপরের দুটি প্রোকষ্ঠ কে ‘অলিন্দ’ (এট্রিয়াম) এবং নিচের দুটি প্রোকষ্ঠ কে ‘
নিলয়’ (ভেনট্রিকিউল) বলে। এদরে কে বাম ও ডান ‘অলিন্দ’ এবং বাম ও ডান ‘নিলয়’ নামে অভিহিত করা হয়। বাম ও ডান সম্পূর্ন রুপে পেশি (সেপটাম) দ্বারা বিভক্ত থাকে। এস-এ নোড থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হওয়ার পর ‘হৃদ চক্র’ (কার্ডিয়াক সাইকেল) শরু হয়।
দেহের উপর ও নিচের অঙ্গ গুলি থেকে রক্ত ‘ ডান অলিন্দ’ এ প্রবেশ করে। এস-এ নোড এর স্পন্দন এ বাম ও ডান অলিন্দ সংকোচিত হয় (এট্রিয়াম সিসটোল .১ সেকেন্ড) এবং রক্ত বাম ও ডান অলিন্দ হতে , বাম ও ডান নিলয় এ প্রবেশ করে। এস-এ নোড থেকে উৎসরিত স্পন্দন ধারাবাহিক ভাবে এ-ভি নোড প্রবাহিত হয়ে বাম ও ডান নিলয়ে সংকোচন (ভেনট্রিকল সিসটোল .৩ সেকেন্ড) তৈরি করে। রক্ত বাম নিলয় হতে ‘ফুসফুস’ এবং ডান নিলয় হতে ‘
মহাধমনী ’ তে প্রেরিত হয়। এই মহাধমনীর মাধ্যমে রক্ত সমস্ত দেহে সঞ্চালিত হয়। অলিন্দদ্বয় প্রসারিত (ডায়াস্টোল) অবস্থায় .৭ সেকেন্ড এবং নিলয়দ্বয় প্রসারিত (ডায়াস্টোল) অবস্থায় .৫ সেকেন্ড থাকে।
রক্ত সবসময় একদিকে প্রবাহিত হয়। তাই হৃদপিন্ডের রক্ত প্রবাহ এক মুখি রাখার জন্য কপাটিকা বা ভালব এর ব্যবস্থা রয়েছে। হৃদপিন্ডের ভিতর ৪টি ভালব রয়েছে যারা সঠিক সময়ে বন্ধ ও খোলার মাধ্যমে রক্ত প্রবাহের গতি ঠিক রাখে। প্রতি .৮ সেকেন্ডে লেফ্ট ভেন্ট্রিকল (ডান নিলয়) ৮০ মিলি রক্ত মহাধমনীতে প্রেরন করে। এটিই হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক কাজ। রক্ত প্রবাহ একমুখি রাখার ‘ভালব’ নষ্ট হলে ডাক্তারগন ‘কৃত্রিম ভালব’ প্রতিস্থাপন করে রোগিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
হৃদপিন্ডের
‘হৃদ চক্র’ (কার্ডিয়াক সাইকেল) টি ইসিজি এর মাধ্যমে রের্কড করা যায়।
দেহের রক্ত নালী পথ ধমনী ও শিরায় বিভক্ত। হৃদপিন্ড থেকে রক্ত ধমনী পথে বাহিত হয়ে সমস্ত দেহে পরিভ্রমন করে আবার শিরা পথে হৃদপিন্ডে ফিরে আসে। দেহে মোট রক্তবাহী নালী পথ ১লক্ষ কিলো মিটার। হৃদপিন্ড প্রতি মিনিটে ৫-৬ লিটার রক্ত ধমনীতে প্রেরন করে এবং এক মিনিট এর মধ্যই ১ লক্ষ কি:মিটার পথ পরিভ্রমন করে পুনরায় হৃদপিন্ডে ফিরে আসে। এই এক মিনিট সময়ে দেহের সব অঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমান রক্ত সঞ্চালিত হয়। যেমন; কিডনি ১৩০০ মিলি/মিনিট , মস্তিষ্ক ৭০০-৮০০ মিলি/মিনিট , করোনারী ২০০মিলি/মিনিট , পেশি ৬০০-৯০০ মিলি/মিনিট , লিভার ১৫০০ মিলি/মিনিট। বাকী রক্ত চর্ম , হাড় এবং পাকস্থলীতে প্রবেশ করে। হৃদপিন্ড এই বিস্ময়কর কাজটি কিভাবে সম্পাদন করে চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা এর ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি।
হার্ট এবং রক্ত নালী রোেেগর ঝুঁকি সমূহ:
১/ ডায়বেটিস।
২/ উচ্চ রক্ত চাপ।
৩/ স্থূলতা।
৪/ উচ্চ কোলেষ্টেরল।
৫/ ধুমপান।
৬/ অতিরিক্ত মদ্যপান।
৭/ অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
হার্ট ও রক্ত নালীর রোগ সমূহ:
১/ এনজাইনা পেকটোরিস: এটি হৃদপেশির অক্সিজেন, চাহিদার তুলনায় কম থাকলে বুকে ব্যাথা , বুক ভারী বোধ , শ্বাসকষ্ট অনুভব করে। দেহের অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় , হৃদ পেশির অক্সিজেন চাহিদা অনেক বেশি। হৃদ পেশির রক্ত নালীতে কোন বাঁধা থাকলে অক্সিজের সরবরাহ বিঘœ ঘটে। অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক হলেই লক্ষনটি দূর হয়। ক্রনিকেল এনজাইনা পেকটোরিসের ক্ষেত্রে ডাক্তারগন রক্তনালী সম্প্রসারন ড্রাগ (গ্লিসারাইল ট্রাইনাইট্রেট , ট্রেড নেইম এনজিসড ) এবং জরুরী ভিত্তিতে অক্সিজেন দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
২/ উচ্চ রক্ত চাপ: সিসটোলিক (সংকোচন) 120mmHg এবং ডায়সটোলিক (প্রসারন) 80mmHg
প্রতি মিনিটে স্বাভাবিক রক্ত চাপ সুস্থ্য জীবনের জন্য অপরিহার্য। এই নির্দিষ্ট রক্ত চাপে দেহের ভিতর রক্ত নালী ও কোষের মধ্যে সব পদার্থে আদান প্রদান সম্পন্ন হয়।
সিসটোলিক 160mmHg এবং ডায়াস্টলিক 95mmHg এর বেশি হলে এটিকে প্রতিষ্ঠিত রক্ত চাপ বলে। রক্ত নালী সঞ্চালন পথ সরু হয়ে গেলে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল বিঘœ ঘটে। দেহের রক্তের সম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য হৃদ পেশিকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এর ফলেই ‘উচ্চ রক্তচাপ’
দেখা দেয়। এ ছাড়া হৃদ পেশি নিয়ন্ত্রনকারী মস্তিষ্কের স্নায়ু (ভেগাস) গুলির অতিারিক্ত উত্তেজনার কারনেও
উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। কিডনি , ফুসফুস , লিভার
এর অসুখের কারনে দেহে পানির পরিমান বেড়ে গিয়ে ‘রক্তের ভলিউম’ বৃদ্ধি পায়। ফলে অতিরিক্ত রক্ত ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে হৃদ পেশির কাজ বাড়ে এবং রক্ত চাপ বৃদ্ধি পায়। কিডনির ‘এড্রেনাল গ্ল্যান্ড’ এর হরমোন ‘এড্রেনালিন’ অতিরিক্ত সক্রিয় থাকলে হৃদ পেশির উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং রক্তচাপ বাড়ে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ ,ভয় ও আতঙ্ক ‘এড্রেনাল’ হরমোনের নিঃসরন বৃদ্ধি করে। ডাক্তার গন বিভিন্ন ধরনের রক্ত নালী সম্প্রসারন ড্রাগ ব্যবহার করে উচ্চ রক্ত চাপ নিয়নন্ত্রন এর চেষ্টা করেন। বা হৃদ পেশির স্পন্দন প্রক্রিয়ার সাথে
জড়িত বিভিন্ন আয়ন (সোডিয়াম ,পটাসিয়াম ,ক্যালসিয়াম) এর
গমনাগমন নিয়ন্ত্রনকারী ড্রাগ (ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার-এমলোডিপিন , পটাসিয়াম চ্যানেল ব্লকার-ডিজি টালিস) ব্যবহার করে ,পেশির কাজ নিয়ন্ত্রন এর মাধ্যমে ,রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করেন।
৩/ করোনারী হার্ট ডিজিজ : হৃদ পেশির সরবরাহকৃত ধমনীর অভ্যন্তরে চর্বি জমে রক্ত চলাচল পথ সরু হয়ে যায় । ফলে হৃদ পেশি কোষে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহে বিঘœ ঘটে। হদ পেশি কোষ সার্বক্ষনিক ক্রিয়াশীল থাকে বিধায়, পর্যাপ্ত পরিমান ‘ অক্সিজেন ও পুষ্টি ’ প্রয়োজন হয়। পুষ্টি ও অক্সিজেন এর অভাবে
পেশি কোষের কার্যকারীতা কমতে থাকে এবং এক পর্যায়ে হৃদ পেশি বিকল হয়ে পরে।
একেই ‘কার্ডিয়াক ইনফার্কশন’ বলে।
৪/ কনজেসটিভ হার্ট ডিজিজ : হার্টের ডান ভেন্ট্রিকল ঠিকমত সংকোচিত হতে পারে না। কার্ডিয়াক ইনফার্কশন এর কারনে ডান ভেন্ট্রিকল এর পেশিগুলো কার্যক্ষম থাকেনা। ফলে ডান ভেনট্রিকল থেকে রক্ত
দেহে প্রবেশ বিঘœ ঘটায় , হৃদ পেশিতে তরল জমে ভারী হয়ে যায়। ফলে পেশির সংকোচন ক্ষমতা ও হার্ট বিট কমে আসে এবং এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়।
৫/ এথেরোসক্লেরোসিস : রক্ত চর্বি পদার্থ কোলেষ্টরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড বহন করে। কোলেষ্টরল প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে ‘লিপোপ্রোটিন ’ তৈরি করে। লিপোপ্রোটিন বড় অনু ও ছোট আকারের হতে পারে। বড় আকারের লিপোপ্রোটিন কে এই্ছডিএল (HDL-High density Lipoprotein) বলে। অতিরিক্ত এইছডিএল (HDL-High density Lipoprotein) শরীরের কোথাও সঞ্চিত হয় না। ছোট আকারের লিপোপ্রোটিনকে ভিএলডিএল (VLDL-Very Low density Lipoprotein ) ও এলডিএল (LDL-Low density Lipoprotein) বলে। এটি বেশি হলে ধমনীর অভ্যন্তররের আস্তরনী কোষ এন্ডোথেলিয়াম এ থিতিয়ে পড়ে এবং কোষের ক্ষতি করে। ক্ষতিগ্রস্ত আস্তরন এর উপর প্লাটিলেট জমা হয়ে গাঁদ বা প্লাক তৈার করে। পরবর্তীতে উক্ত প্লাকে
‘ক্যালসিয়াম ’ সঞ্চিত হয়ে শক্ত হয়ে যায়। এটিকেই ‘
এথেরোসক্লেরোসিস ’ বলে।
এটির ফলে ধমনীর রক্ত সরবরাহ পথ সরু ও বন্ধ হয়ে ‘ কার্ডিয়াক ইনর্ফাকশন ’ হয়
এ ধরনের সমস্যায় কার্ডিয়াক সার্জন গন ‘বাইপাস সার্জারী’ (ধমণী রক্তনালীর বিক্লপ পথ) , ‘এনজিওপ্লাষ্টি’ করে
প্লাক অপসারন বা রিং
(স্টেন্ট) পড়িয়ে রক্ত নালী উন্মক্ত রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
হৃদ রোগে ব্যবহৃত ‘ এ্যলোপ্যাথিক ড্রাগ সমূহ:
রেমিপ্রিল (Ramipril):
এটি
এসিই (ACE-Angiotensin Converting Enzyme ) ইনহিবিটর ড্রাগ। এনজিওটেনসিনোজেন এক ধরনের প্রোটিন যা লিভারে তৈরি হয়। রেনিন এক
ধরনের এনজাইম যা কিডনিতে তৈরি হয়। এই রেনিন এবং এনজিওটেনসিন একত্রিত হয়ে এনজিওটেনসিনোজেন-১ প্রস্তুত করে। এনজিওটেনসিনোজেন-১ রূপান্তরিত হয়ে এনজিওটেনসিনোজেন-২ তে পরিণত হয়। এনজিওটেনসিনোজেন-১ কে ২ তে রূপান্তরের জন্য ‘Angiotensin Converting Enzyme- ACE প্রভাবক হিসাবে কাজ করে। এই এনজাইম ফুসফুসে উপন্ন হয। এনজিওটেনসিনোজেন-২ , দেহের রক্তনালী সংকোচন করে এবং কিডনির ‘এড্রেনাল কর্টেক্স ’ এর ‘এলডোসটেরন’ হরমোন কে নিঃসৃত করে। স্বাভাবিক ‘এলডোসটেরন’ নিঃসরন, কিডনির সোডিয়াম ও পটাসিয়াম, কে মুত্রের সাথে বেরিয়ে যেতে বাাঁধা প্রদান করে। অতিরিক্ত এলডোসটেরন নিঃসরন , দেহে অতিরিক্ত পানি , পটাসিয়াম ও সোডিয়াম সঞ্চিত করে। ফলে রক্তে তরল পদার্থের ভলিউম বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত
ভলিউম রক্ত
ব্যবস্থাপনা করতে হৃদ পেশিকে অধিক পরিশ্রম করতে হয় । পটাসিয়াম ও সোডিয়াম বেড়ে গিয়ে স্নায়ু , পেশি ও হৃদ পেশির কার্য়ক্রম কে ব্যহত করে। ফলশ্রƒতিতে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।
রেমিপ্রিল , ACE-Angiotensin Converting Enzyme কে বাঁধা দেয়ার মাধ্যমে
এনজিওটেনসিনোজেন-১
কে ২ তে রূপান্তরিত হতে দেয় না।
ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন হয়।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: রক্ত নালীর সংকোচন এবং এলডোসটেরন নিঃসরন দেহের স্বাভাবিক প্রাণরাসায়নিক কাজ। দীর্ঘ দিন রেমিপ্রিল (Ramipril) সেবনে দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘
অতি উচ্চ রক্ত চাপ ’(প্রতিষ্ঠিত রক্তচাপ 160mm/Hg-95mmHg )) নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে।
লর্সাটান পটাশিয়াম (Losartan Potassium):
এটি এনজিওটেনসিন-২ ব্লকিং এজেন্ট। আমরা জেনেছি , দেহে কিভাবে এনজিওটেনসিন-২ তৈরি হয় এবং রক্ত চাপ তৈরিতে এর ভূমিকা। রক্ত নালীর মসৃন টিস্যুতে এবং কিডনির এড্রেনাল গ্ল্যান্ড কোষে এ এনজিওটেনসিন-২ রিসেপ্টর থাকে। এই ড্রাগ কোষের রিস্পেটর কে ব্লক করে , এনজিওটেনসিন-২ কে যুক্ত হতে বিরত রাখে। ফলে রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রন হয়।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: রক্ত নালীর সংকোচন এবং এলডোসটেরন নিঃসরন দেহের স্বাভাবিক প্রাণরাসায়নিক কাজ। দীর্ঘ দিন লর্সাটান পটাশিয়াম (Losartan Potassium) সেবনে
দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘ অতি উচ্চ রক্ত চাপ ’ 160mm/Hg-95mmHg ) নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে।
ক্লোপিডোগ্রেল (Clopidogrel): রক্তের প্লাটিলেট একত্রিত না হওয়ার প্রতিরোধক ড্রাগ। এটি রক্ত কোষ প্লাটিলেট এর এডিপি রিস্পেটর ব্লক করে। এডিপি (এডিনোসিন ডাই ফসফেট), গ্লাইকোপ্রোটিন (Gp11b/111a) এনজাইম কে সক্রিয় করে যা প্লাটিলেট একত্রিত করার ব্যাপারে সাহায্য করে। এডিপি ব্লক করার কারনে প্লাটিলেট একত্রিত হতে পারে না। ফলে রক্ত নালীকায় রক্তের জমাট বাঁধা প্রেিতরোধ করে এবং রক্ত নালীর প্লাক তৈরি বাঁধা গ্রস্ত হয়। রক্ত নালীতে রক্ত সরবরাহ বিঘœ না ঘটায় উচ্চ রক্ত চাপ প্রতিরোধ হয়।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :ক্লোপিডোগ্রেল (Clopidogrel) সেবনে
দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। রক্ত নালী কেটে গেলে রক্তের প্লাটিলেট একত্রিত
হয়ে রক্ত পাত বন্ধ করে। ক্লোপিডোগ্রেল এই প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।
তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘ অতি উচ্চ রক্ত চাপ ’(প্রতিষ্ঠিত রক্তচাপ 160mm/Hg-95mmHg )নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে।
এসপিরিন (Aspirine) :
এটি এন্টি প্লাটিলেট ড্রাগ। এটি সাইক্লো-অক্সিনেজ এনজাইম প্রতিরোধ করে। এই এনজাইম থ্রম্বোসিস-এ টু উপন্ন করে যা রক্ত নালীর প্রদাহ ঘটায়।
এছাড়া রক্ত নালীর প্লাটিলেট সংঘবদ্ধ হওয়ায় বাঁধা প্রদান করার মাধ্যমে রক্ত নালীর প্লাক প্রতিরোধ করে।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :এসপিরিন) (Aspirine) সেবনে
দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। রক্ত নালী কেটে গেলে রক্তের প্লাটিলেট একত্রিত
হয়ে রক্ত পাত বন্ধ করে। এসপিরিন এই প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।
তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘ অতি উচ্চ রক্ত চাপ ’(প্রতিষ্ঠিত রক্তচাপ 160mm/Hg-95mmHg ) নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে।
মেটোপ্রোলল (Metoprolol):
এটি বিটা-এডরেনারজিক রিসেপ্টর ব্লকিং ড্রাগ। হৃদ পেশি কোষে বিটা-১ এডরেনোরিসেপ্টর আছে। বিটা-১ এডরেনারজিক কিডনির ‘এড্রেনাল গ্ল্যান্ডে ’ এর একটি হরমোন যা হৃদ পেশি কোষের এডরেনোরিস্পেটর এর সাথে বন্ধন তৈরি করে এবং হৃদ পেশির সংকোচন বৃদ্ধি করে। বিটা-১ ব্লকিং মেটোপ্রোলল (প্রোলাক) হৃদ পেশি কোষের রিস্পেটর কে ব্লক করে , বিটা-১ এডরেনারজিক হরমোন কে যুক্ত হতে বিরত করে। ফলে পেশির অতি সংকোচন ক্ষমতা কমে আসে এবং উচ্চ রক্ত চাপ প্রতিরোধ হয়। এই শ্রেনির আরেকটি ড্রাগ ‘প্রোপানলল’।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : মেটোপ্রোলল ((Metoprolol) সেবনে
দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। কোন র্দূঘটনা , ভয় , বিপদ হলে দেহে অতিরিক্ত রক্ত সরবরাহ এর প্রয়োজন হয়। বিটা-১ এডরেনারজিক হরমোন
হৃদ পেশির সংকোচন বৃদ্ধি করে রক্ত সরবরাহ নিশ্চিত করে। এই মেটোপ্রোলল
প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।
তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘ অতি উচ্চ রক্ত চাপ ’(প্রতিষ্ঠিত রক্তচাপ
160mm/Hg-95mmHg) নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে।
এমলোডিপিন (Amlodipine):
এটি ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার ড্রাগ। আমরা জেনেছি হৃদ পেশি কোষে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম প্রবেশ করলে কোষের প্রোটিন, একটিন ও মায়োসিন এর একত্রিত থাকার প্রবনতা বেড়ে যায়। আর প্রোটিন দ্বয় একত্রিত হলে হৃদ পেশির সংকোচন অবস্থা তৈরি হয়। অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম হৃদ পেশির সংকোচন কে স্থায়ী করে ফেলতে পারে এবং হৃদ কাজ বন্ধ করে দিতে পারে।
এই অবস্থায় ক্যালসিয়াম প্রবেশ বন্ধ করতে পারলে একটিন ও মায়োসিন এর একত্রিত থাকা কমে আসে এবং হৃদপিন্ডের প্রসারন বা ডায়াস্টোলিক অবস্থা তৈরি হয়। হৃদ পেশি কোষে ক্যালসিয়াম রিস্পেটর আছে। এমলোডিপিন কোষের ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লক করে রাখে ফলে ক্যালসিয়াম কোষ রিস্পেটর এর সাথে বন্ধন তৈরি করতে পারে না। এ ভাবে হৃদ পেশির সংকোচন নিয়ন্ত্রন এর মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন হয়।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : এমলোডিপিন (Amlodipine)
সেবনে
দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। হৃদ পেশির সংকোচন ও প্রসারন এবং স্নায়ু পেশির স্পন্দন সৃষ্টির জন্য ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। তা ছাড়া হাড়ের ও দাাঁতের ৯৯% ক্যালসিয়াম দিয়ে তৈরি । দীর্ঘ দিন ক্যালসিয়াম ব্লক করলে ,পেশি , স্নায়ূ , হাড় ও দাঁতের জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘ অতি উচ্চ রক্ত চাপ ’(প্রতিষ্ঠিত রক্তচাপ 160mm/Hg-95mmHg ) নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে। এই শ্রেনির অন্য একটি ড্রাগ ‘লারকাডিপিন’।
ফ্রুসেমাইড (Frusemide):
ক্লোরাইড, সোডিয়ম ও পটাসিয়াম প্রতিরোধক ড্রাগ। এই ড্রাগ কিডনি তে ক্লোরাইড, সোডিয়াম ও পটাসিয়াম এর পুন:শোষন বাঁধা গ্রস্ত করার মাধ্যমে মুত্রের নিঃসরন বাড়িয়ে দেয়।
কারন কিডনির পানি শোষন ; ক্লোরাইড, সোডিয়াম ও পটাসিয়াম এর শোষন এর উপর নির্ভর করে। এ ভাবে দেহের অতিরিক্ত পানি বের করার মাধ্যমে রক্তের ভলিউম কমে আসে এবং হৃদ পেশির উপর অতিরিক্ত চাপ কমার মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন হয়। একই শ্রেনির অন্য আরেকটি ড্রাগ ‘ইনডাপামাইড’।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : ফ্রুসেমাইড
(Frusemide) সেবনে দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। হৃদ পেশির সংকোচন ও প্রসারন এবং স্নায়ু পেশির স্পন্দন সৃষ্টির জন্য সোডিয়াম ও পটাসিয়াম
অপরিহার্য। দেহ হতে অতিরিক্ত সোডিয়াম ও পটাসিয়াম বের হওয়ার কারনে হৃদপেশি , দেহপেশি ও স্নায়ুপেশির নানা জটিল সমস্যা দেখা দেয়। তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘ অতি উচ্চ রক্ত চাপ ’(প্রতিষ্ঠিত রক্তচাপ 160mm/Hg-95mmHg ) নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে। এই শ্রেনির অন্য একটি ড্রাগ ‘লারকাডিপিন’।
এটরোভাসটাটিন(Atrovastatin):
এন্টি কোলেষ্টরল ড্রাগ। এটি দেহে কোলেষ্টরল সিনথেসিস প্রতিরোধ করে। HMG-CoA ( Hidrooxymithyl Glutaryl Co-enzyme A) একটি কো এনজাইম যা লিভারে কোলেষ্টরল তৈরিতে প্রভাবক হিসাবে কাজ করে। এটরোভাসটাটিন , এই এনজাইম কে বাঁধা দেয়ার
মাধ্যমে কোলেষ্টরল সিনথেসিস প্রতিরোধ করে।
দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : এটরোভাসটাটিন সেবনে
দেহের গুরুত্বপূর্ন প্রান রাসায়নিক কাজ ব্যহত হয় এবং
স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। কোলেষ্টরল দেহ কোষের অপরিহার্য প্রাণ রাসায়নিক উপাদান । এই কোলেষ্টরল হতে দেহের স্টেরয়েড হরমোন (যৌন হরমোন ও কিডনির এড্রনাল গ্ল্য্যান্ডের হরমোন ) গুলি তৈরি হয়। দীর্ঘ দিন কোলেষ্টরল সিনথেসিস ব্যহত হওয়ার কারনে কোষ প্রাচির ক্ষতি গ্রস্ত হয় । স্নায়ু কোষের একটি প্রধান অংশ ‘কোলেষ্টরল ’। স্টেরয়েড হরমোন তৈরি ব্যহত হওয়ার কারনে যৌন সমস্যা , প্রজনন সমস্যা , স্নায়বিক সমস্যা ও সংক্রমক প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তবে স্বাভাবিক ভাবে ‘
অতি কোলেষ্টরল ’ নিয়ন্ত্রন না হলে ,ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী এই ড্রাগ গ্রহণ করতে হবে।
Continue:
Continue:
---------------------------------------------------------------------------------------------