হৃদ রোগ এর প্রাকৃতিক প্রতিকার:
আমরা জেনেছি হৃদপিন্ড ও রক্ত নালী বিভিন্ন কোষ স্তর দিয়ে তৈরি। হৃদপিন্ড ও রক্ত নালী এর সর্ব বহিস্তঃ আবরনী স্তর ‘এপিথেলিয়াম কোষ ’ দিয়ে তৈরি। ভিতরের আবরনী স্তর ‘এন্ডোথেলিয়াম কোষ’ দিয়ে তৈরি।
হৃদপিন্ডের বাহিরের স্তর কে ‘পেরিকার্ডিয়াম’ এবং
ভিতরের স্তর কে
’এন্ডোকার্ডিয়াম’ বলে।
দুই ধরনের রক্ত নালী দেহে রয়েছে। ধমনী ও শিরা। হৃদপিন্ড হতে রক্ত যে পথে দেহের প্রতিটি কোষ পর্যন্ত পৌঁছায় সেই সমস্ত রক্ত নালী কে ধমনী বলে এবং কোষ প্রান্ত থেকে যে রক্ত নালী ফিরতি পথে রক্ত কে হৃদপিন্ডে ফিরিয়ে নিয়ে আসে সেই সমস্ত রক্ত নালীকে শিরা বলে। ধমনী ও শিরা প্রান্ত ‘রক্তজালিকা’ (ক্যাপিলারি) তে মিলিত হয়। দেহের কোষ গুলি রক্তজালিকা দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। দেহ কোষের চারিদিকে একটি ‘তরল স্তর’ (ইন্টারস্টিশিয়াম) থাকে। এই স্তরের মাধ্যমেই কোষ এবং ক্যাপিলারীর মধ্যে প্রয়োজনীয় গ্রহণ ও বর্জন সম্পন্ন হয়।
প্রতিটি কোষ একটি ক্ষুদ্র জীবন। জীবন ধারনের জন্য খাদ্য গ্রহণ , পরিপাক , রেচন , শ্বসন ও প্রজনন ব্যবস্থা রয়েছে। দেহের প্রতিটি কোষের এ গুলি অপরিহার্য জীবনধারন ব্যবস্থা। এই অপরিহার্য ব্যবস্থা গুলি সক্রিয় থাকার পর কোষ ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে থাকে। বিজ্ঞানিরা কোষের ৭ লক্ষ কাজ সনাক্ত করেছেন। প্রতিটি কোষের জীবন ধারনের জন্য প্রতিদিন পরিমান মত গ্লুকোজ , এমাইনোএসিড, ফ্যাটিএসিড, ভিটামিন , মিনারেল , পানি ও অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। হৃদ পেশি কোষ সক্রিয় থাকার পর একটি বিশেষ কার্য সম্পাদন করে থাকে। আর সেই বিশেষায়িত কাজটি হচ্ছে সংকোচন ও প্রসারন। হৃদ কোষ বিশেষ ধরনের ২টি প্রোটিন তৈরি করে। এই ২টি প্রোটিন হচ্ছে একটিন ও মায়োসিন। একটিন ও মায়োসিন প্রোটিনদ্বয় যখন একত্রিত অবস্থায় থাকে তখন হৃদপেশির সংকোচন (সিসটোল) এবং যখন বিচ্ছিন্ন অবস্থায়
তখন প্রসারন (ডায়াস্টোল) বলে।
হৃদ কোষ সক্রিয় থাকলে নির্দিষ্ট সংখ্যক এমাইনোএসিড
সংযোজন করে এই প্রোটিনদ্বয় তৈরি করে। এই প্রোটিন তৈরির জন্য কোষে এর ক্রমোজমে নির্দিষ্ট ‘ডিএনএ’ (প্রোটিন তৈরি করার গোপন সংকেত) আছে। ডিএনএ অকার্যকর বা ধ্বংশ হলে প্রোটিন দ্বয় তৈরি হয় না । এই ক্ষেত্রে পেশির অকার্যকারীতাকে কখনো সারানো সম্ভব হয় না। প্রোটিনদ্বয় এর সংকোচন ও প্রসারন এর জন্য অজৈব খনিজ লবন (সোডিয়াম , পটাসিয়াম , ক্যালসিয়াম) এর প্রয়োজন হয়। ( এদের কার্য পদ্ধতি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে)।
হৃদপেশিতে সবচেয়ে বেশি রক্ত জালিকা (ক্যাপিলারী) থাকে। প্রতি কিউবিক সেমি পেশি কোষে ১ মিটার অর্থাৎ ৩.৩০ ফুট ক্যাপিলারি বা রক্ত জালিকা রয়েছে এবং এর জন্য ১২মিলি অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। হৃদপেশির সবচেয়ে বেশি অক্সিজেন ও পুষ্টির প্রয়োজন হয়। কারণ হৃদপেশি ২৪ ঘন্টা বিরতিহীন ভাবে কাজ করে।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটিই প্রতিয়মান
হয় যে , হৃদপেশি কোষের জীবিত থাকা এবং তার উপর অর্পিত নির্দিষ্ট
দায়িত্ব পালনের জন্য অবশ্যই প্রতিদিন পরিমান মত এমাইনোএসিড, ফ্যাটিএসিড , গ্লুকোজ , ভিটামিন , মিনারেল , পানি ও অক্সিজেন প্রেরন করতে হবে। (দেহের দৈনিক চাহিদার চার্ট দেওয়া আছে)
দেহের রক্ত মোট ১২০০ মিলি অক্সিজেন ধারন করতে পারে যা সর্Ÿোচ্চ ৫মিনিট দেহের চাহিদা মেটাতে পারে। সুতরাং হৃদপেশি কোষের অক্সিজেন সরবরাহ যেন নিরচ্ছিন্ন থাকে , সে জন্য অবস্থান পাশের চর্তুদিক যেন উন্মুক্ত থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দেহ কোষে দেড় মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ থাকলে কোষ মৃত্যু বরন করে। রক্ত সরবরাহকারী নালী ধমণী ও শিরা পথ যেন উন্মুক্ত থাকে সে জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং অতিরিক্ত চর্বি ও চর্বি যুক্ত খাবার বর্জন করতি হবে। কারণ অতিরিক্ত অব্যবহৃত চর্বি রক্ত নালীর প্লাক তৈরি করে। অতিরিক্ত দুঃচিন্তা , মানসিক চাপ , দেহ অভ্যন্তরস্থ চর্বি উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং রক্ত নালীতে জমে রক্ত সরবরাহ পথ সরু করে দেয়। দীর্ঘ দিন রক্ত সরবরাহ বিঘœ ঘটার কারনে , পেশি কোষ এর পুষ্টি ও অক্সিজেন এর অভাবে হৃদপেশি অকার্যকর হয়ে পড়ে। একেই ‘কার্ডিয়াক ইনফার্কশন’ বলে। রোগ নির্নয়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন তেজষ্ক্রিয় রাসায়নিক পদার্থ (আয়োডিন , বেরিয়াম , এবং কোবাল্ট) তেজষ্ক্রিয় মেশিন (সিটি স্ক্যান , এনজিওগ্রাম ) থেকে বিচ্ছুরিত শক্তিশালী রে কোষের ‘ ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিয়িক এসিড- (ডিএনএ) এর ক্ষতি করে। ডিএনএ হচ্ছে কোষের প্রোটিন তৈরির গোপন কোড এবং বংশগতির বাহক।
এ্যাডাপটোমেডিসিন কি ভাবে কাজ করে:
এ্যাডাপটো-মেডিসিন মূলতঃ দেহ কোষের মধ্যে কাজ করে। একটি দেহ কোষ এর বাহিরের কাঠামো বিশ্লেষন করে দেখা গেছে যে, এটি লিপিড, প্রোটিন ও লিপিড এর সমন্বয়ে তিন স্তর বিশিষ্ট একটি পর্দা কোষের ভিতরের অঙ্গানুগুলো ও লিপিড ও প্রোটিন দিয়ে তৈরি।
কোষের ভিতরের রাসায়নিক পদার্থ গুলো বিশ্লেষন করে দেখা গেছে ,এগুলো গ্লুকোজ,এ্যামাইনো এসিড ও ফ্যাটি এসিডের , ভিটামিন, মিনারেল ও পানির সমাবেশ ছাড়া অন্য কিছু নয়। আবার উল্লেখিত প্রতিটি যৌগ কে বিশ্লেষন করলে সোডিয়াম (Na), পটাসিয়াম (K),হাইড্রোজেন (H,অক্সিজেন(O),ফসফরাস(P),আয়োডিন(I),ক্লোরিন(Cl),নাইট্রোজেন(N),ক্যালসিয়াম(Ca) সহ ডজন খানিক মৌলিক পদার্থ। কোষের লক্ষ লক্ষ জৈব রাসায়নিক কাজের সবটায় সম্পাদিত হয় , এ সমস্ত উপাদান গুলির সমন্বয়ে। যেমন, পেশি কোষের সংকোচন ও প্রসারন এর সাথে সম্পৃক্ত দুটি প্রোটিন ‘একটিন ও মায়োসিন ’ তৈরির জন্য সুনির্দিষ্ট দুটি ’ডিএনএ’ রয়েছে। পেশি কোষ গুলো কোষ বহিস্থঃ ‘ ইন্টারস্টিশিয়াল স্পেস ’ হতে ‘এমাইনোএসিড ’ গ্রহণ করে কোষ এর সাইটোপ্লাজমে নিয়ে আসে। বিটাসেলে সংরক্ষিত ‘ডিএনএ’ (প্রোটিন তৈরির গোপন সংকেত) এর নির্দেশে
নির্দিষ্ট এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক এমাইনোএসিড নির্দিষ্ট ছাঁচে (টেম্পপ্লেট) একত্রিত হয়। প্রয়োজনের মুহূর্তে কয়েক সেকেন্ডে এর মধ্যে পেশি কোষ এক অনু একটিন ও মায়োসিন সংশ্লেষন করতে পারে।
এ্যাডাপটো-মেডিসিন কোষের দৈহিক স্বাস্ব্য এবং জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ কারী সকল উপাদান সঠিক ভাবে সরবরাহ করে।
কোষ দুই কারনে কার্যকারীতা হারাতে পারে।
১। নানা আঘাতে , বা জীবানুর আক্রমনে,বা অতি কার্য ¯ম্পাদনের কারনে বা রাসায়নিক বিষের কারনে কোষ দেহ ক্ষতি গ্রস্ত হয়।
২। নির্ধারিত উৎসেসক যেমন, এনজাইম, এন্টিবডি, হরমোন তৈরির ্উপকরন সরবরাহে ব্যতায় ঘটলে। যেমন , ইনসুলিন তৈরির উপকরন,৫১টি এ্যমাইনো এসিড ও জিংক।
কিং এ্যাডাপটো-মেডিসিন:
গ্যানোডার্মা লুসিডাম (মাশরুম): জেনেরিক নাম
এক ধরনের ঔষূধী লাল মাশরুম । জৈব রাসায়নিক বিশ্লেষনে ,এর মধ্যে ৪০০ এর মত প্রাকৃতিক জৈব রাসায়নিক পদার্থ শনাক্ত হয়েছে। ৬৫টি পলিস্যাকারাইড,অর্গানিক জার্মানিয়াম,এডিনোসিন,ট্রাইটারপেনয়েডস+গ্যানোডারিক এসিড ১৫০টি এবাং বাকী গুলো এ্যামাইনো এসিড,গ্লুকোজ,ফ্যাটি এসিড,ভিটামিন,মিনারেল।
কার্যকারিতা:
প্রতিটি জৈব রাসায়নিক পদার্থের ,দেহ কোষের উপর কার্যকারীতা ক্লিনিক্যাল নীরিক্ষার মাধ্যমে প্রমানিত।
পলিস্যাকারাইড:
পলিস্যাকারাইড হচ্ছে, ডি-গ্লুকোজের বিশাল চেইন যা,প্রকৃতির প্রতিটি গাছ এটি তৈরি করে।আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে ,ইমিউন থেরাপীষ্টগন ,পলিস্যাকারাইডকে ‘ইমিউন মডুলেটর’ হিসাবে ব্যবহর করেন। গ্যানোডার্মা লুসিডাম এ নিহিত বিটা গ্লুকান (পলিস্যাকারাইড) ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।বিভিন্ন ভ্যাকসিন তৈরিতে পলিস্যাকারাইড ড্রাগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।এক কথায় জীবানু নাশক উদ্দীপনা তৈরিতে পলিস্যাকারাইড এর কার্যকারীতা চিকিৎসা বিজ্ঞান কতৃত প্রমানিত। দেহের প্রতিটি কোষকে জীবানু মুক্ত রাখতে পলিস্যাকারাইড এর উপস্থিতি অপরিহার্য।
অর্গানিক জার্মানিয়াম:
এটি একটি খনিজ পদার্থ যা, কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ ও ঝরনার পানিতে পাওয়া যায়।মাটিতে পাওয়া অজৈব জার্মানিয়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি একটি অর্ধপরিবাহী ধাতু যা,বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়।এর পারমানবিক সংখ্যা ৩২। এর সর্বশেষ কক্ষে ৪টি মুক্ত ইলেকট্রন থাকায় অতি সহজেই ,দেহ মধ্যে উৎপাদিত মুক্ত আয়ন(ফ্রী রেডিক্যল) গুলোকে গ্রহণ অথবা প্রদান করে ,দেহ ব্যবস্থায় অম্লীয় ও ক্ষারীয় সাম্য প্রতিষ্ঠা করে।
গবেষনায় দেখা গেছে,মানুষের দেহ সামান্য ক্ষারীয় অবস্থায় জৈব রাসায়নিক কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করে। ক্যানসার গবেষনায় প্রমানিত যে, ক্যানসার কোষ অম্লীয় অবস্থায় থাকে।ফলে ক্যানসার কোষের জৈব রাসায়নিক কাজ মারাত্মক ভাবে ব্যহত হয় এবং ক্যানসার ছড়িয়ে পড়তে (মেটাসটেসিস)সাহায্য করে।অর্গানিক জার্মানিয়াম ক্যানসার কোষের অতিরিক্ত মুক্ত আয়ন গ্রহণ করে ,ক্যনসার কোষের মেটাসটেসিস বন্ধ করে। তাই ক্যানসার চিকিৎসায় এর ব্যবহার এ ইউ এস ক্যানসার সোসাইটির স্বীকৃতি আছে।
জাপানী প্রকৌশলী চিকিৎসক ডাঃ কাইজুহাইকী আশাইই ,সর্বপ্রথম ঝরনার পানি হতে এই অর্গানিক জার্মনিয়াম আবিষ্কার করেন এবং এর পেটেন্ট লাভ করেন।তিনি জাপানে অর্র্গানিক জার্মানিয়াম নামে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন যার চিকিৎসার প্রধান উপাদান অর্গানিক জার্মানিয়াম।
প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ‘গ্যানোডার্মা লুসিডাম ’ এ সর্বাধিক পরিমানে অগানিক জার্মানিয়াম (১-৫%)আবি®কৃত হয়েছে।
এডিনোসিন:
এডিনোসিন একটি জৈব যৌগ যা,মানব কোষের একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি একটি পিউরিন নিউক্লিউটাইড যা,কোষের ডিএনএ এর একটি উপাদান। একটি প্রোটিন এডিনিন ,একটি রিবোজ (৫ কার্বন বিশিষ্ট)সুগার,একটি ফসফরিক এসিড। কোষের ডিএনএ হচ্ছে ক্রমোজমের অংশ যা,বংশগতির ধারক ও বাহক। ডিএনএ দেহ ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন ,এনজাইম এবং এন্টিবডির তৈরির গোপন সংকেত ধারন করে। এ ছাড়া কোষের অফুরন্ত শক্তি তৈরির জ্বালানীর উৎস হচ্ছে ‘এডিনোসিন’ এটিপি।
এক ধরনের হার্টের রোগীদের ‘এডিনেসিন’ ড্রাগ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের কার্ডিয়াক সেন্টারে ‘সুপ্রভেন্ট্রিকিউলার ট্রাকিকার্ডিয়া’ এসভিটি রোগিদের এডিনোসিন ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করে। এডিনোসিন হৃদপিন্ডের রক্ত নালীর সম্প্রসারন ঘটিয়ে হৃদপেশির স্পন্দন বাড়িয়ে দেয়।হার্টের সাইনাস নোডে উত্তেজনা তৈরি কওে ,হার্ট বল্ক রোগীদের হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক কাজ ফিরিয়ে দেয়।
ফুসফুসের পালমোনারী ধমনীর চাপ কমানোর জন্য এডিনোসিন ব্যবহৃত হয়।
এডিনোসিন লিভার এর গ্লাইকোজেন ভেঙ্গে গ্লুকোজ তৈরি এবং দেহ চর্বি ভাঙ্গন রোধ করে গ্লুকোজ গ্রহণ বৃদ্ধি করে। ফলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন হয়।
এডিনোসিন স্টেরয়েড হরমোন নিঃসরন বৃদ্ধি করে, ফলে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়।
প্রতিাট জীব কোষ প্রকৃতির খাদ্য হতে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন করে। আর এই রাসায়নিক শক্তিই এডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি)।সমস্ত জীব জগতের সকল বৈচিত্রময় সৃষ্টি ও কাজের পেছনে যে রাসায়নিক শক্তি কাজ করে ,সেই রাসায়নিক শক্তির মূল জ্বালানি হচ্ছে ‘ গ্লুকোজ ’যা প্রকৃতির উদ্ভিদ রাজী প্রতিনিয়ত সূযের্র আলো এবং বাতাস থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড
গ্রহনের মাধ্যমে বিশেষ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া প্রস্তুত করে থাকে।
ট্রাইটারপেনয়েডস:
ট্রাইটারপেনয়েডস হচ্ছে ,ফাইটোক্যামিক্যালস
এর একটি বড় গ্রপ। এটি হাইড্রোজেন ও কার্বনের একটি বড় যৌগ।ফাইটোক্যামিক্যল হচ্ছে, প্রাকৃতিক রাসায়নিক পদার্থ যা,উদ্ভিদে জন্মায়। প্রায় ২০,০০০ এর বেশী টাইটারপনেয়েডস প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। গ্যানোডার্মা মাশরুম এ ১০০এর বেশি ধরনের ,১-৫% ট্রাইটারপেনয়েডস আছে। ক্লিনিক্যল ট্রায়ালে জানা গেছে, এটি এন্টিইনফ্লামমেন্টরী, এন্টিএনালজেসিক, লিভারপ্রটেক্টর , কার্ডিওটনিক , সিডেটিভ, এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টিব্যাকটেরিয়াল , এন্টিভায়রাল, এন্টিএলারজিক ,এন্টিটিউমার
, এন্টিক্যানসার। ব্রেস্টক্যানসার এবং ক্যামোপ্রিভেনশান এর চিকিৎসায় ট্রাইটারপেনয়েডস এর কার্যকারীতার উপর ব্যাপক গবেষনা পরিচলিত হয়েছে ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভারসিাট অব ওকালহোমা এর অনকোলজি সেন্টারে।
এবং ক্যানসার প্রতিরোধে প্রাকৃতিক ট্রাইটারপেনয়েডস এর
কার্যকারীতার ফলাফল বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করেছে।
গ্যানোডারিক এসিড:
গ্যানোডার্মায় ১২ ধরনের
এসিড শনাক্ত হয়েছে।এর গঠন অনেকটা ট্রাইটারপেনয়েডস এর মত।বায়োলজিক্যল এগুলি লিভারপ্রটেক্টটর,এন্টিটিউমার এজেন্ট এবং ৫-আলফা রিডাকটেজ প্রতিরোধক। ৫-আলফা রিডাকটেজ প্রতিরোধক যা , পিত্তলবন সংশ্লেষন ,এনড্রোজেন,এস্ট্রোজেন মেটাবলিজম এবং প্রোসথেটিক ক্যনসার প্রতিরাধ করে।
এডাপটোমেডিসিন
‘ স্পাইরুলিনা
’ :
জেনেরিক নাম এবং ট্রেড নাম:স্পাইরুলিনা
এক ধরনের সামুদ্রীক শৈবাল ,যা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। এটির আনুমানিক বয়স ৩.৫০বিলিয়ন বৎসর।ধারণা করা হচ্ছে , পৃথিবীর প্রথম প্রানের অস্তিত্বের
প্রকাশ ঘটে এধরনের এক কোষি শৈবাল সৃষ্টির মাধ্যমে।প্রাণরাসায়নিক বিশ্লেষনে প্রায় ৩০০ এর ও বেশি জৈব রাসায়নিক উপাদান আবি®কৃত হয়েছে। প্রধান রাসয়ানিক উপাদান হচ্ছে;
এ্যামাইনো এাসিড ,গ্লুকোজ,ফ্যাটি এসিড,ভিটামিন ও মিনারেল।এ পর্যন্ত গবেষনার ফলাফল হতে জানা গেছে,স্পাইরুলিনা হচ্ছে সবেেচয়ে বেশি এ্যামাইনো এসিড,ভিটামিন,মিনারেল এর প্রাকৃতিক ভান্ডার। যা মানব দেহ কোষের প্রধান তিনটি পুষ্টি উপাদানের যোগান দেয় এবং কোষের প্রধান প্রধান অসুস্থ্যতা সাড়িয়ে তোলে।দেহ কোষের ৬টি পুষ্টির অন্যতম প্রধান পুষ্টি ‘এ্যামাইনো এসিড’। এই এ্যামাইনো এসিড ছাড়া কোষ বাঁচতে পারেনা। ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাবে অসংখ্য রোগের কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞান
নিশ্চিত করেছে। গবেষনায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, দেহ কোষ সামান্য ক্ষারীয় অবস্থায় স্বুস্ব্য থাকে। স্পাইরুলিনা একটি সেরা ‘ক্ষারীয় খাদ্য ’ হিসাবে চিকিৎসা বিজ্ঞান কতৃক স্বীকৃত।নিয়মিত স্পাইরুলিনা সেবনে দেহ কোষের ক্ষারীয় পরিবেশ
বজায় থাকে,কোষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট থাকে।
মরিন্ড্রি সিট্রিফোলিয়া (ননি ফল):
ট্রেড নেইম:মরিনঝি
ননি ফল প্রাচীন ভারতের সুপরিচিত একটি আর্য়ুরবেদীক ঔষুধ। বৈজ্ঞানিক নাম মরিন্ড্রি সিট্রিফোলিয়া। হাজার হাজার বৎসর ধরে এই ফলটি রোগ নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে আসছে।আধুনিক প্রাণরাসায়নিক গবেষনায় জানা গেছে এতে ১৫০+এর অধিক প্রাণ রাসায়নিক উপাদান রয়েছে।
ননি ফলে প্রোজেরোরিন নামে একটি জৈব যৌগ আছে ।দেহের লিভার কোষ
গুলো এই উপাদান তৈরি করে। প্রজেরনিনের প্রধান কাজ হচ্ছে ,লিভার কোষে তৈরি কিছু ধরনের প্রোটিন বহন করে দেহের
অন্যান্য কোষে পৌছে দেয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে লিভার কোষে এই প্রজেরনিন তৈরি করার ক্ষমতা কমতে থাকে । তাই বয়স্ক লোকদের প্রতিদিন পরমিান মত এই ফল খাওয়া উচিত।
> ‘প্রজেরনিন‘ ব্যাথানাশক এবং অবশকারক হিসাবে কার্যকর।
> ১৯৯৩ সালে ডা: রাল্ফ গবেষনা চালিয়ে ননির মধ্যে বিদ্যমান ‘ড্যামনাক্যানন্থল” আবিষ্কার করেন।ড্যামনাক্যান্থল প্রি-ক্যান্সার কোষগুলিকে স্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির সুচনা ঘটায়।
> রকফোর্ড ইউনিভারসিটি অফ ইলিনয় কলেজের এক গবেষনায় প্রমানিত যে,ননি ৫০% ফুসফুস,৬০%হৃদযন্ত্র,৭০%যকৃত, ৯০%কিডনি ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি কমায়।
হৃদ রোগ প্রতিরোধে ‘স্বাভাবিক খাদ্য’ এবং ‘এডাপটো-মেডিসিন’ এর পরিমান:
১/ কার্বহাইড্রেট (ভাত,আটা,শাকশবজি,ফল,মূল): ২০০-৩০০ গ্রাম
২/ প্রোটিন (মাছ,মাংশ,ডিম):প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১ গ্রাম।
৩/ চর্বি (সব ধরনের তৈল): প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১ গ্রাম।
৪/ এডাপটো-মেডিসিন:গ্যানোডার্মা:সকালে ১ গ্রাম-রাতে ১ গ্রাম (খালি পেটে)
৫/ এডাপটোমেডিসিন:স্পাইরুলিনা: সকালে ২ গ্রাম-দুপুরে ২গ্রাম-রাতে ২গ্রাম (খালি
পেটে)
৬/ এডাপটো-মেডিসিন: ননি ফল:সকালে ৩ টেবিল চামচ-রাতে ৩ টেবিল চামচ
প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস বিশুদ্ধ মিনারেল পানি।
যে সমস্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।
> অতিরিক্ত তৈল, লবন, চিনি যুক্ত খাদ্য > অতিরিক্ত রান্না করা খাবার > বেকারী ও ভাজাপোড়া খাবার > বাসী খাবার > যে কোন পশুর মাংশ (গরু, ছাগল , ভেড়া, মহিষ, উট)
> ডাক্টারের পরামর্শ ছাড়া ‘ড্রাগ’।
------------------------------------------
No comments:
Post a Comment