Nature is Life , Life is Nature নিয়ে সেমিনারের লিখিত ্উপস্থাপন
আসসালামুআলাইকুম,
মিশন-১০ আয়োজিত প্রাকৃতিক খাবারে স্বুস্থ্যতা ও রোগ মুক্তি বিষয়ক সেমিনারে উপস্থিত থাকায় আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি আমি ড.শিবেন্দ্র কর্মকার।
আমি আশা করি আপনারা সবাই স্বুস্থ্য আছেন। আজ আমরা এমন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলব যা আমরা সব সময় বলে থাকি, প্রতি মূহুর্তে বেঁচে থাকি, সেটি হচ্ছে আমাদের প্রকৃতি ইংরেজীতে নেচার বলি। জীবনের সব ক্ষেত্রেই নেচারাল শব্দটি কথায় কথায় জুড়ে দেই। নেচারাল লাইফ,নেচারাল ফুড,নেচারাল বিউটি,নেচারাল মেডিসিন, নেচারাল হেলথ ইত্যাদী।
আজকের এ সেমিনার থেকে একটি বিষয় নিজের দেহ নিজে ডাক্তার কিভাবে হবেন সে বিষয়ে বিশ্লেষনধর্মী আলোচনা করা হবে । আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে, যখনেই নিজের দেহের ডাক্তারী অন্যের উপর দিয়েছেন বিপদটা কিন্তু সেখান থেকে শুরু হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানেই এ সমর্থন যুগিয়েছে যে, দেহই সব চেয়ে বড় ডাক্তার। দেহকে অবজ্ঞা বা অবহেলা করে কোন চিকিৎসাই সফল হবে না। চিকিৎসক বা চিকিৎসার সফলতা নির্ভর করে দেহের নিজস্ব ক্ষমতার উপর।
এ সেমিনারে আরও যে কয়েকটি বিষয় অবগত হব ১) কিভাবে আমরা অস্বুস্থ্য হই ২) কিভাবে আমরা স্বুস্থ্য থাকতে পারি ৩) প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক খাবারই একমাত্র স্বুস্থ্য জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারে।
উপরিউক্ত বিষয় গুলোর আলোচনা আপনি যদি মনোযোগ দিয়ে উপভোগ করেন, আমি এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, আপনার ঘরে ডাক্তার ও ড্রাগের প্রবেশ অধিকার সংরক্ষিত থাকবে।
আসুন আমরা মূল পর্বের আলোচনা শুরু করি। আমরা আলোচনার শুরুতেই কোষ বা সেল নিয়ে কথা বলব।
প্রকৃতির সকল প্রান (উদ্ভিদ ও প্রানি) এক কোষি ও বহু কোষি প্রানের সমষ্টি। প্রতিটি কোষ একটি ক্ষুদ্র জীবন। প্রতিটি কোষ খাদ্য গ্রহন করে,বর্জ পরিত্যাগ করে, শ্বাসপ্রশ্বাস ও প্রজনন কাজে অংশ গ্রহন করে এবং স্বাভাবিক ভাবে নির্দিষ্ট সময় পর মৃত্যুবরন করে।
যেহেতু আমরা প্রানি (মানুষ) আমরা আমাদের দেহ কোষ নিয়ে কথা বলব। এ কথা মনে রাখতে হবে যে, প্রকৃতির সকল প্রান (একক কোষ) একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় তার প্রানরাসায়নিক কাজ সম্পন্ন করে খাকে। প্রকৃতির সমস্ত প্রান (উদ্ভিদ ও প্রানি) পুরুষ ও স্ত্রী (মানুষের ক্ষেত্রে ডিম্বানু ও শুক্রানু এবং উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পুঃরেনু ও স্ত্রীরেনু) মিলনের ফলে একটি প্রানের জন্ম হয়। আর সেই ্আদি প্রানটি হচ্ছে একটি কোষ যা,জাইগোট নামে অভিহিত করা হয়। এটিই মূলতঃ আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় স্টেম সেল।
আধুনিক বিজ্ঞানের প্রযুক্তির বদৌলতে এই জাইগোটের আয়তন (.৬ মাইক্রন ,১ মাইক্রন= এক মিটারের ১০ লক্ষ ভাগের এক ভাগ) ্এবং ওজন (১ ন্যানোগ্রাম, ১ গ্রাম এর ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগ) নেয়া সম্ভব হয়েছে।
্এই ক্ষুদ্রাতী ক্ষুদ্র কোষটি মাতৃ জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের ৫দিন পর বিভাজন শুরু করে। এই বিভাজন নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ ১টি কোষ থেকে ২টি,৪টি,৮টি.১৬টি,৩২টি,৬৪টি এভাবে জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে।
বিজ্ঞানিরা লক্ষ্য করেছেন যে,মাত্র ১২০ দিনে এই কোষ টি ৪২০ মিলিয়ন গুন বড় হয়,৫৮ দিনে একটি পুন্র্াঙ্গ মানব শিশুতে পরিনত হয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, মানব শিশুর এই বিকাশ (হাত, পা, চোখ, কান, নাক, হার্ট, কিডনি, লিভার, রক্ত, চর্ম) কোথায় থেকে জন্ম নিল। কোষের ভিতরেই লুকায়িত ছিল। শুধুমাত্র ছবির মত প্রকাশিত হয়েছে। একটি কোষ থেকেই পুরো দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
্এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানেই নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে যে,দেহ তৈরি হয়েছে একটি মূল কোষ স্টেম সেল থেকে, তা হলে সেই দেহের চিকিৎসার দায়িত্বে এত বিশেষায়িত ডাক্তার ও ড্রাগের ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন কেন। স্টেমসেল এর এই ধারনা, আধুনিক চিকিৎসার ধ্যান ধারনাকে বির্তকের মুখে ফেলেছে।
দেহ যেহেতু কোষ দিয়ে তৈরি,দেহের যে কোন অসুখ মানেই কোষের অসুখ। সুতরাং দেহ কোষের চিকিৎসা দিলেই তো সব রেেেগর চিকিৎসা হয়ে যায়। কারন হার্টের যে কোন রোগ এর অর্থ হার্টের কোষের রোগ। অনুরূপ ভাবে কিডনির যে কোন অসুস্থ্যতা এর অর্থ কিডনির কেষের অসুস্থ্যতা। অর্থাৎ যে অঙ্গের রোগই হোক না কেন সেটি সংশ্লিষ্ট কোষেরেই অসুস্থ্যতা ।
সম্প্রতি কোষ বিজ্ঞানীরা আধুনিক মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে জানতে পেরেছেন যে, আদি কোষ স্টেমসেল জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দেহে অবস্থান করে। যখনেই যেখানে দেহে কোষের ঘাটতি (অপারেশন, ইনফেকশন,
স্বাভাবিক মৃত্যু) দেখা দেয় তখনেই স্টেমসেল বিভাজনের মাধ্যমে দ্রুত সেই ঘাটতি পুরন করে।
প্রথম কোষ টি (ডিম্বানু ও শুক্রানুর মিলনে সৃষ্ট কোষ) ২২০টি বিশেষায়িত কোষে পরিনত হয়েছে এবং প্রতিটি বিশেষায়িত কোষ , দেহের নির্দিষ্ট কার্যকরী কোষে (অঙ্গ) পরিনত হয়েছে। প্রতিটি কার্যকরী কোষ এর নির্দিষ্ট সময় শেষে মৃত্যু ঘটে। মানব দেহের অধিকাংশ রোগ হয় কার্যকরী কোষে। স্টেমসেল রোগাক্রান্ত হলে , রোগ দীর্ঘ স্থায়ী হয়। স্টেমসেলের মৃত্যু হলে,সংশ্লিষ্ট অঙ্গের মৃত্যু ঘটে। স্টেমসেলের জেনিটিক্যাল কোড ক্ষতিগ্রস্থ হলে সংশ্লিষ্ট অঙ্গ ও সম্পর্ক যুক্ত অন্যান্য অঙ্গের রোগ কখনোই আরোগ্য হয় না।
যেমন প্যাংক্রিয়াসের বিটা সেল অকার্যকর হলে, ইনস্যুলিন উৎপাদন আর কখনোই সম্ভব নয়। দেহে ইনস্যুলিন উৎপাদন না হলে দেহের ১০০ ট্রিলিয়ন কোষ আক্রান্ত হয়, কারন ইনস্যুলিন ছাড়া কোষের ভিতর গ্লুকোজ প্রবেশ করতে পারে না। গ্লুকোজ হচ্ছে কোষের জ্বালানী। গ্লুকোজ ছাড়া কোষ শক্তি উৎপাদন করতে পারে না।
সুতরাং দেখা যায় একটি কার্যকরী কোষ (বিটাসেল) অকার্যকর থাকলে পুরো দেহ না না ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরিবেশ তৈরি করে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেন যে, কার্যকরী কোষ গুলোর স্বাভাবিক মৃত্যু (এপপটোসিস) ঘটে বলেই ,এবং নতুন কোষের সৃষ্টি হয় বলেই ,দেহ সব ধরনের রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারে।
শুধু মাত্র এ প্রক্রিয়া ব্যহত হলেই দেহ রোগে আক্রান্ত হয়।
যেমন চর্মের বহিঃস্তর কোষ এর বয়স ১৪ দিন,লাল রক্তের বয়স ১২০ দিন, শ্বেত কনিকার বয়স ৭-১০ , প্লাটিলেটের বয়স ১০দিন, বিটাসেল এর বয়স ১ বৎসর। কোষগুলোর মৃত্যুর সাথে সাথে,সংশ্লিষ্ট রোগের ও মৃত্যু ঘটে যদি সাথেই সাথেই নতুন কোষের সৃষ্টি হয়।
বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষন করেছেন যে, ২/৩ বৎসরের মধ্যে পুরো দেহ একবার নতুন কোষ দ্বারা নির্মিত হয়। ৫০ বৎসরের পর এ প্রক্রিয়া কিছুটা থেমে আসে যার ফলে বার্ধক্যের সুচনা হয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞান নতুন গবেষনায় নিশ্চিত করেছে যে, কোষের প্রানরাসায়নিক কাজ ঠিক রাখতে পারলেই দেহকে রোগ মুক্ত ও স্বুস্থ্য জীবন দেয়া সম্ভব।
সুতরাং দেহের দরকার একজন ডাক্তার,
একটি ্ঔষধ। দেহের ডাক্তার হচ্ছে কোষ আর ঔষধ হচ্ছে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক খাবার।
আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার এত বিশাল আয়োজন, দেহের রোগ নিরাময়ে সামান্যই কাজে লাগে। অপরদিকে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক খাবার ব্যবস্থাপনা যে দেহকে বাঁচিয়ে ও স্বুস্থ্য রাখে এ ব্যপারে বৈজ্ঞানিক প্রমানাদি রয়েছে।
বিজ্ঞানিরা সর্বাধুনিক ইলেকট্রনিক মাইক্রেস্কোপ ব্যবহার করে কোষের গঠন ও প্রানরাসায়নিক কাজ পর্যবেক্ষন করতে সক্ষম হয়েছেন।
তারা লক্ষ্য করেছেন যে, কোষের শারীরিক গঠন ও প্রানরাসায়নিক কাজ ৬টি উপাদান দিয়ে সংগঠিত হয়। আর এ ৬টি উপাদান শুধু উদ্ভিদ দেহেই পাওয়া যায়। শুধু উদ্ভিদই এটি তৈরি ও সংরক্ষনের ক্ষমতা রাখে। ্এ ৬টি
উপাদান হচ্ছে ১) এমাইনোএসিড ২)
ফ্যাটিএসিড ৩) গ্লুকোজ ৪) ভিটামিনস ৫)
মিনারেলস ৬) পানি।
বিজ্ঞানিরা নিশ্চিত করেছেন যে, এই খাদ্য উপাদান গুলো উদ্ভিদই পাওয়া যায়,
প্রানিরা উদ্ভিদ ভক্ষনের মাধ্যমে এ উপাদান গুলো পেয়ে থাকে।
প্রানীরা যে উদ্ভিদ গ্রহনের মাধ্যমেই এ উপাদান গুলো পায় এ ব্যাপারে আর কোন প্রশ্ন নেই। আমরা নিজেকেই একটি প্রশ্ন করলে এর উত্তর খুঁঝে পাওয়া যায়। সেটি হচ্ছে আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যে খাদ্য খাই ,সেই খাদ্য গুলো পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে উদ্ভিদ থেকেই আসে।
আপনি বলতে পারেন আমি ভাজা পড়াটা খেয়েছি। কিন্তু পড়াটা তৈরি হয়েছে গম থেকে , গম এসেছে গম গাছ থেকে।
আপনি বলতে পারেন, আমি গরুর ভূনা খেয়েছি,গরু কিন্তু ঘাস খেয়েছে। বলতে পারেন আমি মাছের ঝাল ফ্রাই খেয়েছি,মাছ কিন্তু শ্যাওলা খেয়েছে।
সুতরাং দেখা যায় আমরা খাদ্য হিসাবে যা খাই না কেন এর উৎস প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে উদ্ভিদ থেকেই আসে।
সুতরাং যে খাবারের উৎস উদ্ভিদ নয়, সে খাবার কখনোই দেহের খাবার হতে পারে না। সেই খাবার দেহের কোষের জন্য বিষ (টক্সিন)।
আমাদের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাবারের অধিকাংশই বিষ (টক্সিন)। দেহ কোষের টক্সিন প্রয়োজন নেই কিন্তু প্রতিনিয়ত পাচ্ছে টক্সিন। ফলে কোষ গুলো দ্রুত অসুস্থ্য হয় ও মৃত্যুবরন করে। নতুন কোষের সৃষ্টি কমে যায়। এ ভাবে দেহ অঙ্গ রোগাক্রাস্ত হয়ে পড়ে।
রোগাক্রান্ত হওয়ার পর আমরা কিন্তু এলোপ্যাথিক ডাক্তার ও ড্রাগের কাছে যাই। সিনথেটিক ড্রাগ গ্রহনের ফলে দেহ কোষ দ্বিতীয় মৃত্যুর শিকার হয়। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রে , তৃতীয় মৃত্যুর কারন হচ্ছে ‘প্রেসক্রিপশান মেডিকেশন’। অগ্রিম ড্রাগ প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়ে , এইডস বা গাড়ী দুর্ঘটনার চেয়ে ৫ গুন বেশী মানুষ মারা যায়। প্রতি বৎসর ২০ লক্ষ মানুষ
হাসপাতালে ভর্তি হয় অগ্রিম ড্রাগ প্রতিক্রিয়ায় এবং ১ লক্ষ ৮ হাজার মানুষ মৃত্যু বরন করে। এটি ১৫ বৎসর আগের প্রতিবেদন (Ref.DEATH BY PRESCRIPTION
written by: RAY D. STRAND,M.D.) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে র মত দেশে যদি এমন অবস্থা হয়, তবে ভাবুন আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোতে ড্রাগ মেডিকেশন এর যথেচ্ছা ব্যবহারের কুফল, সুস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় চলছে।
সুতরাং দেখা যায় প্রথম অসুস্থ্যতার সূচনা হয় ‘উদ্ভিজ’ উপাদানের অভাবে, দ্বিতীয় পর্যায়ের অসুস্থ্যতা শুরু হয় টক্সিন খাদ্য গ্রহনের ফলে, তৃতীয় পর্যায়ে মৃত্যু শুরু হয় ‘ড্রাগ’ বিপর্যয় এর কারনে।
উদ্ভিদ ও প্রানি পরস্পরের পরিপূরক। বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদ ও প্রানী কোষের সাদৃশ্য পর্যবেক্ষন করে এটি নিশ্চিত হয়েছেন। অসংখ্য প্রানি ও উদ্ভিদ কোষ কে ডাষ্ট করে, বিশ্লেষন করে একই উত্তর খুঁজে পেয়েছেন।
অর্থাৎ প্রকৃতির সব প্রান একই উপাদান দিয়ে তৈরি। এই ৬টি প্রকৃতির উপাদান কে প্রানের বর্নমালা বলা যায়। এই ৬ টি বর্নমালা দিয়েই এই বিশ্ব প্রকৃতি (উদ্ভিদ ও প্রানি) সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিটি উদ্ভিদ, মাটি থেকে মিনারেলস ও পানি সংগ্রহ করে, সূর্যের আলো ও কার্বন ডাই অক্সাইড এর উপস্থিতিতে এমাইনোএসিড, ফ্যাটিএসিড, গ্লুকোজ ও ভিটামিনস প্রস্তুত করে।
মিনারেলস , পানি , এমাইনোএসিড, ফ্যাটিএসিড, গ্লুকোজ ও ভিটামিনস সমূহ সঠিক পরিমানে ও সঠিক উপায়ে দেহ কোষ পর্যন্ত পৌঁছায় না। বিভিন্ন পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষন এর মাধ্যমে , বিজ্ঞান এটি নিশ্চিত করেছে।
প্রথমতঃ দেহের এলিম্যানটারী ট্র্যাক ( মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত ২৯ ফিট লম্বা অঙ্গ) প্রাকৃতিক খাবার গুলোর ভাঙ্গন এবং বিশ্লেষন করে ,৬টি খাদ্য উপাদান কে পৃথক করে এবং আলাদা আলাদা ভাবে পূর্ব নির্ধরিত কৌশলে ,রক্ত স্রোতে প্রেরন করে যা সরাসরি লিভারে প্রবেশ করে। লিভার কোষ (হেপাটোসাইট) গুলো,খাদ্য উপাদান গুলোর কিছু অংশের মধ্যে নানা ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া সংগঠিত করে লক্ষ লক্ষ প্রোটিন,এনজাইম,হরমোন,এন্টিবডি প্রস্তুত করে হৃদপিন্ডে (হৃদপেশী কোষ) প্রেরন করে। হৃদপিন্ড মহাধমনী (এন্ডোথেলিয়াল কোষ) পথে ১০০ ট্রিলিয়ন কোষে পৌঁছে দেয়। প্রতিটি কোষ খাদ্য উপাদান গ্রহন করে (হরমোন,প্রোটিন,এনজাইম এর উপস্থিতিতে) ,লক্ষ লক্ষ প্রান রাসায়নিক কাজ সম্পন্ন করে।
এলিম্যানটারী ট্র্যাক এর খাদ্য উপাদান গ্রহনকারী দায়ীত্ব প্রাপ্ত কোষ গুলো হচ্ছে এনটারোসইট। সুতরাং এনটারোসাইট যদি অকার্যকর থাকে তবে উদ্ভিজ উপাদান রক্ত ¯্রােতে প্রবেশ করতে পারে না। রোগ বিপর্যয়ের প্রথম ধাপ এখান থেকে শুরু হয়।
দ্বিতীয়তঃ উদ্ভিজ উপাদান সমূহ নানা ধাপে ধ্বংশ প্রাপ্ত হওয়ার কারনে ,দেহ কোষে পৌঁছায় না।
প্রথম ধাপে খাদ্য উপাদান নষ্ট হয় ত্রুটি পূর্ন চাষ আবাদের কারনে। চাষ আবাদের শুরুতেই কৃষক এমন সব কীটনাশক (হার্বিসাইট,পেষ্টিসইট),গ্রোথ হরমোন ব্যবহার করে যার শুরুতেই খাদ্য উপাদান গুলো বিষাক্ত হতে শুরু করে।
দ্বিতীয় ধাপে খাদ্য উপাদান নষ্ট হয় ত্রুটি পূর্ন সংরক্ষনের কারনে। প্রাকৃতিক খাবার গুলো প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে নষ্ট হতে শুরু করে। তারপর সেই খাবার গুলো নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে দীর্ঘ দিন সংরক্ষন করা হয়।
তৃতীয় ধাপে খাদ্য উপাদান নষ্ট হয় ত্রুটি পূর্ন রান্না বান্নার কারনে। খাদ্য গুলোর কাটাকুটি ও ধোঁয়া পদ্ধতি সবই ত্রুটি পূর্ন। এর পর খাদ্য গুলো গরম তেলে ভাজা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ,খাদ্য উপাদান গুলোর তাপ সহ্য ক্ষমতার উপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছে। সেখানে পর্যবেক্ষনে পাওয়া গেছে যে, মাত্র ৬৫0 সেঃ তাপমাত্রায় খাদ্য উপাদান গুলো নষ্ট হতে শুরু করে।
তাপে খাদ্য যখন বাদামী রং ধারন করে, তখন বুঝতে হবে খাদ্য উপাদান গ্লুকোজ পুড়ে গেছে। প্রোটিন ও ফ্যাট পুড়ে গেলে একটি ঘ্রান বেরোয়। এটি খাদ্য উপাদান এমাইনোএসিড পুড়ে গেলে এমনটি হয়।
দেহ গঠনের প্রধান উপাদান এমাইনোএসিড। কোষের লক্ষ লক্ষ প্রানরাসায়নিক কাজের প্রধান উপাদান এটি। এই এসিড প্রায় ১লক্ষ ৪০ হাজার প্রোটিন তৈরি করে, ৬৫ হাজার এনজাইম তৈরি করে,অসংখ্য হরমোন ও বিলিয়ন বিলিয়ন এন্টিবডি তৈরি করে।
গ্লুকোজ হচ্ছে কোষের জ্বালানী । গ্লুকোজ ছাড়া কোষ শক্তি উৎপাদন করতে পারে না।
দেহের যে কোন রোগের কারন হচ্ছে, দেহ কোষের প্রোটিন, এনজাইম, হরমোন ও এন্টিবডি উৎপাদন ব্যবস্থায় ত্রুটি। ভিন্ন ভিন্ন কোষ এর উৎপাদন কাজে নিয়োজিত।
সুতরাং কোষের অসুস্থ্যতার কারনেই এর উৎপাদন ব্যহত হয়। আর কোষের অসুস্থ্যতার কারন নির্দিষ্ট পরিমান উদ্ভিজ খাদ্যের অভাব এবং তৎপরিবর্তে টক্সিন যুক্ত খাদ্য গ্রহন।
উপরিউক্ত আলোচনায় আমরা বিজ্ঞানের আলোকে রোগের কারন ও প্রতিকার জেনেছি। এর প্রতিকার একমাত্র প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই করতে হবে, এর মধ্যে বির্তকের কোন সুযোগ নেই।
যেহেতু আমাদের প্রাকৃতিক খাদ্য গুলো নানা ধাপে নষ্ট হয়ে যায়,সেহেতু শত চেষ্টা থাকলেও আমাদের পক্ষে স্বুস্ব্য থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক খাবার ব্যতিত অন্য কোন বিক্লপ উপায়ে স্বুস্থ্য থাকা সম্ভব নয়।
বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন হার্বাল পন্য উৎপাদনকারী কোম্পানী গুলো প্রাকৃতিক খাদ্যের সঠিক উৎপাদন, সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রকৃত স্বাস্থ্য সেবার দায়িত্বটি পালন করে যাচ্ছে।
প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক খাদ্যই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে,স্বুস্থ্য ও সবল রাখে। পৃথিবীর সব চিকিৎসা ব্যবস্থা সফল হয় ,যদি দেহ কোষ প্রাকৃতিক খাদ্যে সাড়া দেয়।
একটি ছোট উদাহরন দিলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। কোন রোগী যখন খেতে পারে না, তখন তাকে ডেক্সট্রোজ সেলাইন দেয়া হয়। এর অর্থ দাঁড়ায় যে,দেহ প্রাকৃতিক খাদ্য থেকে গ্লুকোজ সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই ড্রাগ আকারে ইনজেকশন এর মাধ্যমে দেহে গ্লুকোজ প্রবেশ করানো হয়। এর পরের অংশে কিন্তু চিকিৎসকের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। অর্থাৎ গ্লুকোজ দেহে প্রবেশের পর ,এটি নিয়ে কাজ করবে কি করবে না এটি কোষের সম্পূর্ন নিজস্ব ব্যাপার। কোষ যদি কাজ করে চিকিৎসক সফল,না করলে চিকিৎসক ব্যর্থ।
ডায়বেটিস মিলিটাস-১ (ইনস্যুলিন নির্ভর ডায়বেটিস) রোগেীদের ইনস্যুলিন দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা দেয়া হয়। প্যাংক্রিয়াসের বিটাসেল ইনস্যুলিন তৈরিতে অক্ষম হলেই ড্রাগ আকারে ইনস্যুলিন ইনজেকশান নিতে হয়। ইনস্যুলিন একটি প্রোটিন , যেটি বিটাসেলে তৈরি হয়। ইনস্যুলিন এর প্রধান কাজ হচ্ছে ,দেহের গ্লুকোজ ব্যবস্থাপনা করা। কোষের অভ্যন্তরে গ্লুকোজ ইনজেকট করা ইনস্যুলিন এর একটি প্রধান কাজ। কোষ যদি ইনস্যুলিন নিয়ে কাজ করতে ব্যর্থ হয় , তবে ইনস্যুলিন মেডিকেশন কোন কাজে আসবে না।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে যে,
প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়া স্বুস্থ্য থাকা সম্ভব নয়। আর এটির একটি সঠিক,
কার্যকরী সমাধান দিতে পারে মিশন-১০ এর প্রাকৃতিক খাদ্য সম্ভার।
মিশন-১০ প্রাকৃতিক খাবার গুলোর এমন ভাবে সমাবেশ ও সমন্বয় করেছে, যা সঠিক মাত্রায় সঠিক নিয়মে ,নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে রোগমুক্ত স্বুস্থ্য জীবন যাপন সম্ভব। মিশন-১০ এর অঙ্গিকার হচ্ছে রোগ মুক্ত ,স্বুস্থ্য সবল মানুষ, যারা নিজের জন্য ,পরিবারের জন্য,সমাজের জন্য তথা রাষ্ট্রের সম্পদ হতে পারে।
সু-স্বাস্থ্য রক্ষায় মিশন-১০ এর পন্যের ব্যবহার বিধি নিয়ে নিয়মিত সেমিনারে অংশ গ্রহন করুন,স্বুস্থ থাকুন অন্যকে স্বুস্থ্য রাখুন।
খাদ্য দিয়ে স্বুস্থ্য হোন
মিশন-১০ ডায়বেটিস প্যাকেজ
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন ও নিরাময় এ ডায়বেটিস প্যাকেজ অত্যন্ত ফলদায়ক। এই প্যাকেজটি নিয়মমত ও নিয়মিত ব্যবহারে ১৫-৩০ দিনের মধ্যে ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রন ও ৬ মাস-১বৎসর মধ্যে নিরাময় এর সুযোগ তৈরি হতে পারে।
ডায়বেটিস খাদ্য ব্যবস্থাপনত্রা
খাদ্য
|
পরিমান
|
আকার
|
|
কার্বহাইড্রেট
(ভাত/রুটি)
|
২৫০ গ্রাম/৩০০ গ্রাম
|
১ কাপ ভাত ও ২/৩টি
ছোট রুটি
|
|
প্রোটিন(কাঁচা)
মাছ, মাংশ, ডিম
|
৩০ গ্রাম/৪০ গ্রাম
|
অর্ধেক তাসের বান্ডেল
|
|
কাঁচা,সবুজ পাতা বহুল
শাক শবজি।
|
৪০ গ্রাম/৫০ গ্রাম
|
১ কাপ বা বড় হাতের
এক মুঠো।
|
|
বীজ জাতীয় খাবার
|
১০ গ্রাম
|
একটিছোট লেবুর সমান
|
|
তৈল
নরিকেল/জলপাই/তিষি
|
১৫ গ্রাম
|
১ টেবিল চামচ
|
|
ফল
|
৫০ গ্রাম
|
মাঝারি ১ বাটি
|
|
& ্এর সাথে যোগ হবে মিশন-১০ এর ডায়বেটিস প্যাকেজ:
পন্যের নাম
|
সকাল
|
দুপুর
|
রাত
|
ফ্রেশ অন
খাবারের ১ঘন্টা
আগে
|
২ চা চামচ
|
00
|
২ চা চামচ
|
গুড ডে
ফ্রেশঅন খাওয়ার
১০মি:পর
|
২ চা চামচ
|
00
|
২ চা চামচ
|
স্পাইরুলিনা
গুড ডে খাওয়ার
২০ মি: পর।
|
১ গ্রাম
২টি ক্যাপসুল
|
১ গ্রাম
২টি ক্যাপসুল
|
১ গ্রাম
২টি ক্যাপসুল
|
সয়াকেয়ার
স্পাইরুলিনা খাওয়ার
১০ মি: পর।
|
১০ গ্রাম
২ টেবিল চামচ
|
১০ গ্রাম
২ টেবিল চামচ
|
১০ গ্রাম
২ টেবিল চামচ
|
ডায়াকো
মূল খাবরের
২০ মি: পর
|
১০ গ্রাম
২ টেবিল চামচ
|
১০ গ্রাম
২ টেবিল চামচ
|
১০ গ্রাম
২ টেবিল চামচ
|
৯৫% ডায়বেটিসই একটি খাদ্য ত্রুটি জনিত রোগ। সুতরাং এর নিরাময় ও নিয়ন্ত্রনও করতে হবে সঠিক প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা র মাধ্যমে। ড্রাগ মেডিকেশন , ডায়বেটিস কিছু সময়ের জন্য (৬ ঘন্টা-২৪ ঘন্টা) নিয়ন্ত্রন করে। সঠিক প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা নিরাময় ও নিয়ন্ত্রন উভয় ক্ষমতাই রাখে। ডায়বেটিস নিরাময় ও নিয়ন্ত্রন না হওয়া পর্যন্ত ,প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ড্রাগ মেডিকেশন চালিয়ে যেতে হবে। প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চলবে, অন্যদিকে ড্রাগ মেডিকেশন যত টুকু সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে।
প্রতিদিন আধা ঘন্টা ব্যায়াম করতে হবে:
নিন্মের খাবার গুলো কম অথবা বর্জন করতে হবে:
### তৈলাক্ত
ভাজা পোড়া খাবার।
### বেকারী
খাবার (প্ডারুটি/কেক/বিস্কুট/চানাচুর
### সব
ধরনের পশু প্রোটিন
(গরু ,খাসী ও
অন্যান্য)
### সিগারেট,এলকোহল
ধন্যবাদান্তে
Copy Right:
Dr.Shebendra Karmakar
Ph.D in Natural Health,USA
E-mail:shebendrak@yahoo.com
Facebook: shebendra
Mobile: +88 01712 393053