গ্যাসট্রিক এর চিকিৎসায়;
এ্যলোপ্যাথিক ড্রাগ ও ন্যাচারোপ্যাথিক ঔষুধী খাদ্যের কার্যকারীতার তুলনামূলক আলোচনা
ড. শিবেন্দ্র কর্মকার
এ্যাডাপটো-মেডিসিন কনসালটেন
Doctorate & Ph.D in Natural Medicine
পাকস্থলীর কাজ:
আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই , তা মুখে চর্বিত হয়ে,গলনালী দিয়ে ,পাকস্থলী তে পৌছে। পাকস্থলী নিন্মের কার্যগুলো সম্পন্ন করে।
ক) পাকস্থলী পর্যাপ্ত খাদ্য জমা করে।
খ) জমাকৃত খাদ্য পাকস্থলীর নিঃসৃত রসের সাথে মিশ্রণ করে মন্ডে পরিণত করে।
গ) যখন তৈরিকৃত মন্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনায় পরিণত হয় ,তখন ধীরে ধীরে পাকস্থলী হতে ক্ষুদ্রান্তের দিকে এগুতে থাকে,যাতে হজম ও বিশেষন সহজ ভাবে হতে পারে।
ঘ) পাকস্থলী গ্যাসট্রিক রস নিঃসরন করে যা, এসিড,এনজাইম,লবন ধারন করে।
ঙ) পানি,এলকোহল,রক্ত তৈরির উপাদান ভিটামিন বি ১২ ,কিছু ড্রাগ পাকস্থলীতে শোষিত হয়।
চ) প্রোটিন ও ফ্যাট ভাঙ্গন প্রক্রিয়া পাকস্থলীতে শুরু হয়।
বিভিন্ন পর্যায়ে পাকস্থলী হতে গ্যাসট্রিক রস নিঃসৃত হয়:
সেফালিক
পর্যায়:
চিন্তা, দৃশ্য,গন্ধ দ্বারা এক পশ্চমাংশ গ্যাসট্রিক রস নিঃসরন সম্পন্ন হয় খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে।
গ্যাসট্রিক
পর্যায়:
গ্যাসট্রিক পর্যায় শুরু
হয় খাদ্য পাকস্থলীতে পৌঁছার পর।পাকস্থলীর প্রসারন ,স্পর্শ ও স্নায়ুর প্রতিক্রিয়ায় হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিঃসরন বৃদ্ধি পায়।
ক্ষুদ্রান্ত
পর্যায়:
ক্ষুদ্র খাদ্য কনা পাকস্থলী হতে ক্ষুদ্রান্তে প্রবেশের পর ,গ্যাসট্রিক রসের নিঃসরন শুরু হয়।
যে সমস্ত উত্তেজক পাকস্থলীতে উত্তেজনা তৈরি করে গ্যাসট্রিক রস নিঃসরন ঘটায়:
ক) পাকস্থলীর স্ফীতি।
খ) স্পর্শ জনীত কারণ।
গ) রাসায়নিক উত্তেজক যেমন, এ্যমাইনো এসিড, পেপটাইড, গ্যাসট্রিক এসিড।
ঘ) মানসিক উত্তেজনায় পাকস্থলীর স্নায়ু উত্তেজিত হয় এবং উত্তেজক হরমোন ‘গ্যাসট্রিন’ নিঃসরন ঘটে। এই গ্যাসট্রিন স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ গুন বেশী এসিড নিঃসরন ঘটায়।
ঙ) অপ্রাকৃত খাবার।
চ) কিছু ড্রাগ যেমন,ব্যাথা নিবারন ড্রাগ। (প্যারাসিটামল,ডাইক্লোফেনাক,আইব্র“ফেন)
এ ভাবে বিভিন্ন প্রাক্রয়ায় অতিরিক্ত এসিড নিঃসরনের ফলে পাকস্থলীতে গ্যাসট্রিক এর রোগ হয়।
গ্যাসট্রিক নিরাময়ে ;এ্যালোপ্যাথিক ড্রাগ:
এন্টাসিড:
ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোঅক্সাইড, এ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোঅক্সাইড।
কার্যকারীতা:
এাসডের সাথে বিক্রিয়ায়
লবন ও পানি তৈরি করে ,এসিডের ক্ষমতা কে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
পার্শ¦
প্রতিক্রিয়া:
অতিরিক্ত লবন কিডনির জন্য ক্ষতিকর। মাংশপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে।অতিরিক্ত অম্লতা ও ক্ষারীয় অবস্থান পাকস্থলীর ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।
রেনিটিডিন:(জেনেরিক নাম)
কার্যকারীতা:
গ্যাসট্রিক জুস নিঃসরনের সাথে একটি এনজাইম হিস্টামিন-২ এর নিঃসরনের সম্পর্ক রয়েছে। রেনিটিডিন; হিস্টামিন -২ এর পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ,ফলে , এসিড নিঃসরন বন্ধ হয়।
ওমেপ্রাজল:(জেনেরিক নাম)
কার্যকারীতা:
ওমেপ্রাজল সারসরি এসিড তৈরির মৌলিকুল হাইড্রোজেন আয়ন কে বাঁধা প্রদান করে।ফলে এসিড নিঃসরন সরাসরি বন্ধ হয়ে যায়।
রেনিটিডিন ও ওমেপ্রাজল এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
> দীর্ঘ দিন এ ড্রাগ ব্যবহারের ফলে , পাকস্থলীর এসিড নিঃসরন প্রক্রিয়া মারাত্মক ভাবে ব্যহত হয় এবং এক পর্যায়ে এসিড নিঃসরন বন্ধ হয়।
> পাকস্থলীর হজম ক্রীয়া বির্পযস্ত হয়।দেহ কোষের প্রধান পুষ্টি এ্যামাইনো এসিড তৈরী ব্যাহত হয়।
> হাইডোক্লোরিক এসিড নিঃসরনের সাথে একধরনের প্রোটিন নিঃসৃত হয় ,যা ভিটামিন -১২ কে রক্ত স্রোতের মাধ্যমে মেরুমজ্জায় নিযে যায় এবং লাল রক্ত কনিকা তৈরির কাজে ব্যবহার করে।হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিঃসরন বন্ধ থাকলে “পারনিসিয়াস”নামে একধরনের দুরারোগ্য রক্ত রোগ হয়।
গ্যাসট্রিক এর চিকিৎসায় ন্যাচারোপ্যাথিক ঔষুধী খাদ্য:
এ্যাডাপটো-মেডিসিন:
গ্যানোডার্মা (মাশরুম), স্পাইরুলিনা, মরিন্ডা সিট্রাফোলিয়া(ননি ফল), এলোভেরা(ঘৃতকুমারী)
ইউনানী ঔষুধ:
ছাফী,হ্যালাক্স, কারমিনা, সিনকারা
এ্যাডাপটোমেডিসিন কি ভাবে কাজ করে:
এ্যাডাপটো-মেডিসিন মূলতঃ দেহ কোষের মধ্যে কাজ করে।একটি দেহ কোষ এর বাহিরের কাঠামো বিশ্লেষন করে দেখা গেছে যে,এটি লিপিড,প্রোটিন ও লিপিড এর সমন্বয়ে তিন স্তর বিশিষ্ট একটি পর্দা কোষের ভিতরের অঙ্গানুগুলো ও লিপিড ও প্রোটিন দিয়ে তৈরি।
কোষের ভিতরের রাসায়নিক পদার্থ গুলো বিশ্লেষন করে দেখা গেছে ,এগুলো গ্লুকোজ,এ্যামাইনো এসিড ও ফ্যাটি এসিডের ,ভিটামিন,মিনারেল ও পানির সমাবেশ ছাড়া অন্য কিছু নয়।আবার উল্লেখিত প্রতিটি যৌগ কে বিশ্লেষন করলে সোডিয়াম (ঘধ), পটাসিয়াম(K),হাইড্রোজেন(H),অক্সিজেন(O),ফসফরাস(P),আয়োডিন(I),ক্লোরিন(Cl),নাইট্রোজেন(N),ক্যালসিয়াম (Ca),সহ ডজন খানিক মৌলিক পদার্থ। কোষের লক্ষ লক্ষ জৈব রাসায়নিক কাজের সবটায় সম্পাদিত হয়,এ সমস্ত উপাদান গুলির সমন্বয়ে।
যেমন,পাকস্থলীর হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরির কাজ করে যে কোষ গুলো,সে কোষ গুলোর নাম হলো “পেরিয়েটাল সেল”। এই কোষ গুলো পানি হতে হাইড্রেজেন(ঐ),লবন(ঘধঈষ) হতে ক্লোরিন(ঈষ) গ্রহণ করে বিশেষ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCL) তৈরি করে।
এ্যাডাপটো-মেডিসিন কোষের দৈহিক স্বাস্ব্য এবং জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ কারী সকল উপাদান সঠিক ভাবে সরবরাহ করে।
কোষ দুই কারনে কার্যকারীতা হারাতে পারে।
১। নানা আঘাতে , বা জীবানুর আক্রমনে,বা অতি কার্য ¯ম্পাদনের কারনে বা রাসায়নিক বিষের কারনে কোষ দেহ ক্ষতি গ্রস্ত হয়।
২। নির্ধারিত উৎসেসক যেমন,এনজাইম,এন্টিবডি,হরমোন তৈরির ্উপকরন সরবরাহে ব্যতায় ঘটলে। যেমন , ইনসুলিন তৈরির উপকরন,৫১টি এ্যমাইনো এসিড ও জিংক।
কিং এ্যাডাপটো-মেডিসিন:
গ্যানোডার্মা লুসিডাম (মাশরুম): জেনেরিক নাম
এক ধরনের ঔষূধী লাল মাশরুম । জৈব রাসায়নিক বিশ্লেষনে ,এর মধ্যে ৪০০ এর মত প্রাকৃতিক জৈব রাসায়নিক পদার্থ শনাক্ত হয়েছে। ৬৫টি পলিস্যাকারাইড,অর্গানিক জার্মানিয়াম,এডিনোসিন,ট্রাইটারপেনয়েডস+গ্যানোডারিক এসিড ১৫০টি এবাং বাকী গুলো এ্যামাইনো এসিড,গ্লুকোজ,ফ্যাটি এসিড,ভিটামিন,মিনারেল।
কার্যকারিতা:
প্রতিটি জৈব রাসায়নিক পদার্থের ,দেহ কোষের উপর কার্যকারীতা ক্লিনিক্যাল নীরিক্ষার মাধ্যমে প্রমানিত।
পলিস্যাকারাইড:
পলিস্যাকারাইড হচ্ছে, ডি-গ্লুকোজের বিশাল চেইন যা,প্রকৃতির প্রতিটি গাছ এটি তৈরি করে।আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে ,ইমিউন থেরাপীষ্টগন ,পলিস্যাকারাইডকে ‘ইমিউন মডুলেটর’ হিসাবে ব্যবহর করেন। গ্যানোডার্মা লুসিডাম এ নিহিত বিটা গ্লুকান (পলিস্যাকারাইড) ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।বিভিন্ন ভ্যাকসিন তৈরিতে পলিস্যাকারাইড ড্রাগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।এক কথায় জীবানু নাশক উদ্দীপনা তৈরিতে পলিস্যাকারাইড এর কার্যকারীতা চিকিৎসা বিজ্ঞান কতৃত প্রমানিত। দেহের প্রতিটি কোষকে জীবানু মুক্ত রাখতে পলিস্যাকারাইড এর উপস্থিতি অপরিহার্য।
অর্গানিক জার্মানিয়াম:
এটি একটি খনিজ পদার্থ যা, কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ ও ঝরনার পানিতে পাওয়া যায়।মাটিতে পাওয়া অজৈব জার্মানিয়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি একটি অর্ধপরিবাহী ধাতু যা,বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়।এর পারমানবিক সংখ্যা ৩২। এর সর্বশেষ কক্ষে ৪টি মুক্ত ইলেকট্রন থাকায় অতি সহজেই ,দেহ মধ্যে উৎপাদিত মুক্ত আয়ন(ফ্রী রেডিক্যল) গুলোকে গ্রহণ অথবা প্রদান করে , দেহ ব্যবস্থায় অম্লীয় ও ক্ষারীয় সাম্য প্রতিষ্ঠা করে।
গবেষনায় দেখা গেছে,মানুষের দেহ সামান্য ক্ষারীয় অবস্থায় জৈব রাসায়নিক কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করে। ক্যানসার গবেষনায় প্রমানিত যে, ক্যানসার কোষ অম্লীয় অবস্থায় থাকে।ফলে ক্যানসার কোষের জৈব রাসায়নিক কাজ মারাত্মক ভাবে ব্যহত হয় এবং ক্যানসার ছড়িয়ে পড়তে (মেটাসটেসিস)সাহায্য করে।অর্গানিক জার্মানিয়াম ক্যানসার কোষের অতিরিক্ত মুক্ত আয়ন গ্রহণ করে ,ক্যনসার কোষের মেটাসটেসিস বন্ধ করে। তাই ক্যানসার চিকিৎসায় এর ব্যবহার এ ইউ এস ক্যানসার সোসাইটির স্বীকৃতি আছে।
জাপানী প্রকৌশলী চিকিৎসক ডাঃ কাইজুহাইকী আশাইই ,সর্বপ্রথম ঝরনার পানি হতে এই অর্গানিক জার্মনিয়াম আবিষ্কার করেন এবং এর পেটেন্ট লাভ করেন।তিনি জাপানে অর্র্গানিক জার্মানিয়াম নামে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন যার চিকিৎসার প্রধান উপাদান অর্গানিক জার্মানিয়াম। প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ‘গ্যানোডার্মা লুসিডাম ’ এ সর্বাধিক পরিমানে অগানিক জার্মানিয়াম (১-৫%)আবি®কৃত হয়েছে।
এডিনোসিন:
এডিনোসিন একটি জৈব যৌগ যা,মানব কোষের একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি একটি পিউরিন নিউক্লিউটাইড যা, কোষের ডিএনএ এর একটি উপাদান।একটি প্রোটিন এডিনিন,একটি রিবোজ (৫ কার্বন বিশিষ্ট)সুগার,একটি ফসফরিক এসিড।কোষের ডিএনএ হচ্ছে ক্রমোজমের অংশ যা,বংশগতির ধারক ও বাহক। ডিএনএ দেহ ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন,এনজাইম এবং এন্টিবডির তৈরির গোপন সংকেত ধারন করে।এ ছাড়া কোষের অফুরন্ত শক্তি তৈরির জ্বালানীর উৎস হচ্ছে ‘এডিনোসিন’ এটিপি।
এক ধরনের হার্টের রোগীদের ‘এডিনেসিন’ ড্রাগ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের কার্ডিয়াক সেন্টারে ‘সুপ্রভেন্ট্রিকিউলার ট্রাকিকার্ডিয়া’ এসভিটি রোগিদের এডিনোসিন ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করে। এডিনোসিন হৃদপিন্ডের রক্ত নালীর সম্প্রসারন ঘটিয়ে হৃদপেশির স্পন্দন বাড়িয়ে দেয়।হার্টের সাইনাস নোডে উত্তেজনা তৈরি করে,হার্ট বল্ক রোগীদের হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক কাজ ফিরিয়ে দেয়।
ফুসফুসের পালমোনারী ধমনীর চাপ কমানোর জন্য এডিনোসিন ব্যবহৃত হয়।
এডিনোসিন লিভার এর গ্লাইকোজেন ভেঙ্গে গ্লুকোজ তৈরি এবং দেহ চর্বি ভাঙ্গন রোধ করে গ্লুকোজ গ্রহণ বৃদ্ধি করে। ফলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন হয়।
এডিনোসিন স্টেরয়েড হরমোন নিঃসরন বৃদ্ধি করে, ফলে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়।
প্রতিাট জীব কোষ প্রকৃতির খাদ্য হতে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন করে। আর এই রাসায়নিক শক্তিই এডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি)।সমস্ত জীব জগতের সকল বৈচিত্রময় সৃষ্টি ও কাজের পেছনে যে রাসায়নিক শক্তি কাজ করে ,সেই রাসায়নিক শক্তির মূল জ্বালানি হচ্ছে ‘ গ্লুকোজ ’যা প্রকৃতির উদ্ভিদ রাজী প্রতিনিয়ত সূযের্র আলো এবং বাতাস থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড
গ্রহনের মাধ্যমে বিশেষ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া প্রস্তুত করে থাকে।
ট্রাইটারপেনয়েডস:
ট্রাইটারপেনয়েডস হচ্ছে ,ফাইটোক্যামিক্যালস
এর একটি বড় গ্রপ।এটি হাইড্রোজেন ও কার্বনের একটি বড় যৌগ।ফাইটোক্যামিক্যল হচ্ছে, প্রাকৃতিক রাসায়নিক পদার্থ যা,উদ্ভিদে জন্মায়। প্রায় ২০,০০০ এর বেশী টাইটারপনেয়েডস প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। গ্যানোডার্মা মাশরুম এ ১০০এর বেশি ধরনের ,১-৫% ট্রাইটারপেনয়েডস আছে। ক্লিনিক্যল ট্রায়ালে জানা গেছে, এটি এন্টিইনফ্লামমেন্টরী, এন্টিএনালজেসিক,লিভারপ্রটেক্টর , কার্ডিওটনিক , সিডেটিভ, এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টিব্যাকটেরিয়াল , এন্টিভায়রাল, এন্টিএলারজিক ,এন্টিটিউমার
, এন্টিক্যানসার।
ব্রেস্টক্যানসার এবং ক্যামোপ্রিভেনশান এর চিকিৎসায় ট্রাইটারপেনয়েডস এর কার্যকারীতার
উপর ব্যাপক গবেষনা পরিচলিত হয়েছে ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভারসিাট অব ওকালহোমা এর অনকোলজি সেন্টারে।এবং ক্যানসার প্রতিরোধে প্রাকৃতিক ট্রাইটারপেনয়েডস এর
কার্যকারীতার ফলাফল বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করেছে।
গ্যানোডারিক এসিড:
গ্যানোডার্মায় ১২ ধরনের
এসিড শনাক্ত হয়েছে।এর গঠন অনেকটা ট্রাইটারপেনয়েডস এর মত।বায়োলজিক্যল এগুলি লিভারপ্রটেক্টটর,এন্টিটিউমার এজেন্ট এবং ৫-আলফা রিডাকটেজ প্রতিরোধক।৫-আলফা রিডাকটেজ প্রতিরোধক যা , পিত্তলবন সংশ্লেষন ,এনড্রোজেন,এস্ট্রোজেন মেটাবলিজম এবং প্রোসথেটিক ক্যনসার প্রতিরাধ করে।
এডাপটোমেডিসিন ‘ স্পাইরুলিনা ’ :
জেনেরিক নাম এবং ট্রেড নাম:স্পাইরুলিনা
এক ধরনের সামুদ্রীক শৈবাল ,যা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। এটির আনুমানিক বয়স ৩.৫০বিলিয়ন বৎসর।ধারণা করা হচ্ছে , পৃথিবীর প্রথম প্রানের অস্তিত্বের
প্রকাশ ঘটে এধরনের এক কোষি শৈবাল সৃষ্টির মাধ্যমে।প্রাণরাসায়নিক বিশ্লেষনে প্রায় ৩০০ এর ও বেশি জৈব রাসায়নিক উপাদান আবি®কৃত হয়েছে। প্রধান রাসয়ানিক উপাদান হচ্ছে; এ্যামাইনো এাসিড ,গ্লুকোজ,ফ্যাটি এসিড,ভিটামিন ও মিনারেল।এ পর্যন্ত গবেষনার ফলাফল হতে জানা গেছে,স্পাইরুলিনা হচ্ছে সবেেচয়ে বেশি এ্যামাইনো এসিড,ভিটামিন,মিনারেল এর প্রাকৃতিক ভান্ডার। যা মানব দেহ কোষের প্রধান তিনটি পুষ্টি উপাদানের যোগান দেয় এবং কোষের প্রধান প্রধান অসুস্থ্যতা সাড়িয়ে তোলে।দেহ কোষের ৬টি পুষ্টির অন্যতম প্রধান পুষ্টি ‘এ্যামাইনো এসিড’। এই এ্যামাইনো এসিড ছাড়া কোষ বাঁচতে পারেনা। ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাবে অসংখ্য রোগের কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞান
নিশ্চিত করেছে।
গবেষনায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, দেহ কোষ সামান্য ক্ষারীয় অবস্থায় স্বুস্ব্য থাকে। স্পাইরুলিনা একটি সেরা ‘ক্ষারীয় খাদ্য ’ হিসাবে চিকিৎসা বিজ্ঞান কতৃক স্বীকৃত।নিয়মিত স্পাইরুলিনা সেবনে দেহ কোষের ক্ষারীয় পরিবেশ বজায় থাকে,কোষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট থাকে।
মরিন্ড্রি সিট্রিফোলিয়া (ননি ফল):
ননি ফল প্রাচীন ভারতের সুপরিচিত একটি আর্য়ুরবেদীক ঔষুধ। বৈজ্ঞানিক নাম মরিন্ড্রি সিট্রিফোলিয়া। হাজার হাজার বৎসর ধরে এই ফলটি রোগ নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে আসছে।আধুনিক প্রাণরাসায়নিক গবেষনায় জানা গেছে এতে ১৫০+এর অধিক প্রাণ রাসায়নিক উপাদান রয়েছে।
ননি ফলে প্রোজেরোরিন নামে একটি জৈব যৌগ আছে ।দেহের লিভার কোষ
গুলো এই উপাদান তৈরি করে। প্রজেরনিনের প্রধান কাজ হচ্ছে ,লিভার কোষে তৈরি কিছু ধরনের প্রোটিন বহন করে দেহের
অন্যান্য কোষে পৌছে দেয়।বয়স বাড়ার সাথে সাথে লিভার কোষে এই প্রজেরনিন তৈরি করার ক্ষমতা কমতে থাকে । তাই বয়স্ক লোকদের প্রতিদিন পরমিান মত এই ফল খাওয়া উচিত।
> ‘প্রজেরনিন‘ ব্যাথানাশক এবং অবশকারক হিসাবে কার্যকর।
> ১৯৯৩ সালে ডা: রাল্ফ গবেষনা চালিয়ে ননির মধ্যে বিদ্যমান ‘ড্যামনাক্যানন্থল” আবিষ্কার করেন।ড্যামনাক্যান্থল প্রি-ক্যান্সার কোষগুলিকে স্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির সুচনা ঘটায়।
> রকফোর্ড ইউনিভারসিটি অফ ইলিনয় কলেজের এক গবেষনায় প্রমানিত যে,ননি ৫০% ফুসফুস,৬০%হৃদযন্ত্র,৭০%যকৃত, ৯০%কিডনি ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি কমায়।
গ্যাসট্রিক নিরাময়ে ‘স্বাভাবিক খাদ্য’ এবং ‘এডাপটো-মেডিসিন’ এর পরিমান:
দ্ব
কার্বহাইড্রেট (ভাত,আটা,শাকশবজি,ফল,মূল):৩০০-৪০০গ্রাম
দ্ব
প্রোটিন (মাছ,মাংশ,ডিম):প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১গ্রাম।
দ্ব
চর্বি (সব ধরনের তৈল): প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১গ্রাম।
দ্ব
এডাপটো-মেডিসিন:গ্যানোডার্মা:সকালে ১ গ্রাম-রাতে ১গ্রাম (খালি পেটে)
দ্ব
এডাপটোমেডিসিন:স্পাইরুলিনা: সকালে ২ গ্রাম-দুপুরে২গ্রাম-রাতে ২গ্রাম (খালি পেটে)
দ্ব
এডাপটো-মেডিসিন:ননি ফল:সকালে৩টেবিল চামচ-রাতে ৩টেবিল চামচ
দ্ব
প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস বিশুদ্ধ মিনারেল পানি।
যে সমস্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।
>অতিরিক্ত তৈল,লবন,চিনি যুক্ত খাদ্য >অতিরিক্ত রান্না করা খাবার > বেকারী ও ভাজাপোড়া খাবার >বাসী খাবার >যে কোন পশুর মাংশ (গরু,ছাগল ,ভেড়া,মহিষ,উট) পরামর্শ ছাড়া ‘ড্রাগ’
No comments:
Post a Comment