ক্যালসিয়াম শোষনে ভিটামিন-ডি এর ভূমিকা:
ভিটামিন-ডি সরাসরি ক্যালসিয়াম শোষনে কাজ করে না। এটি লিভার ও কিডনিতে বিপাক হয়ে সক্রিয় ভিটামিন-ডি থ্রী তে (1,2,5
dihydroxycholecalciferol)
পরিনত হয় এবং ক্যালসিয়াম শোষনে কাজ করে।
প্যারাথাইরয়েড হরমোন (প্যরাথর্মোন ৮৪ টি এমাইনোএসিডের চেইন) এবং ভিটামিন-ডি৩ এর উপস্থিতিতে ক্যালসিয়াম শোষিত হয়। রক্ত রসে সামান্য ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি পেলে এটির নিঃসরন শুরু হয়। অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ‘প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি’ কে সব সময় উত্তেজিত রাখে।
ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রনে ক্যালসিটোনিন এর কাজঃ
এটি রক্ত রসের ক্যালসিয়াম ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। হাড়ের কোষ (অষ্টিওব্লাসটিক) এর সক্রিয়তা বাঁধা গ্রস্ত করে এবং নতুন হাড় তৈরিতে বাঁধা দেয়।
অন্ডকোষ গ্রন্থির হরমোন সমূহঃ
অন্ডকোষের ‘লেডিগ কোষ’ টেসটোসটেরন হরমোন উৎপাদন ও
নিঃসরন করে। মস্তিষ্কের ‘পিটুইটরী গ্রন্থি’ এর হরমোন ‘লিউটানাইজিং হরমোন (LU) লেডিগ কোষ কে উত্তেজিত করে ফলে, কোষে ‘কোলেস্টেরল’ প্রবেশ করে এবং ‘টেসটোসটেরন’ সংশ্লেষিত হয়।
ভ্রƒণ অবস্থায় অমরা (প্লাসেন্টা) প্রচুর পরিমান ‘হিউমেন কোরিওনিক গোনাডোট্রফিক হরমোন (hCG’) নিঃসরন করে যা ভ্রƒণের অন্ড কোষের ‘লেডিগ কোষ’ কে উত্তেজিত করে এবং টেসটোসটেরন উৎপাদন ও নিঃসরন ঘটায় এবং ভ্রুনের পুরুষ বৈশিষ্ট্য প্রদান করে।
= টেসটোসটেরন প্রাথমিক ও দ্বিতীয় পর্যায়ের পুরুষ যৌন অঙ্গ এবং অন্যান্য অলংকারিক যেমন,চুল,গোফ,ইত্যাদী তৈরি হয়।
= টেসটোসটেরন মাথার টাক তৈরি করে। যাদের দেহে টেসটোসটেরন নাই তাদের মাথায় টাক হয় না।
= টেসটোসটেরন শরীরের পেশী গঠনে কাজ করে। পেশী কোষে প্রোটিন গঠন এবং হাড়ের কোষে বেশী ক্যালসিয়াম শোষনের মাধ্যমে সুঠাম দেহ তৈরী করে।
স্ত্রী হরমোনঃ
তিন ধরনের হরমোন স্ত্রী হরমোন নিয়ন্ত্রিত হয়।
১/ লিউটানাইজিং হরমোন রিলিজিং হরমোন ( LHRH)
২/ এন্টিরেরিওর পিটুইটরী হরমোন যেমন,FHS,LH
৩/ ওভারিয়ান হরমোন-এসট্রোজেন এবং প্রোজেসটেরন।
ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH) এর কাজঃ
১/ প্রাথমিক ফলিকল গঠনঃ
ডিম্বাশয়ের ২/৩ গুন বৃদ্ধি ঘটে। পরবর্তীতে ডিম্বাশয়ের ‘গ্রানুলোসা কোষ’ এর বৃদ্ধি হয় এবং প্রাথমিক ফলিকল তৈরি হয়। FSH এর প্রভাবে প্রতিমাসে ৬ থেকে ১২ টি প্রাথমিক ফলিকল গঠিত হয়।
২/ ভাসকিউলার ফলিকল গঠনঃ
FSH
ছাড়া আরও দুটি হরমোন LH এবং Estrogen ভাসকিউলার ফলিকল গঠনে কাজ করে।
৩/ পরিপক্ক ফলিকল গঠনঃ
ডিম্ব পাতের পুর্বে একটি ফলিকল বৃদ্ধি পেতে থাকে অন্য গুলো মিলে যায়। বৃদ্ধি প্রাপ্ত ফলিকল টি ‘এসট্রোজেন’ নিঃসরন করে যাতে ফলিকলের ‘গ্রানুলোসা কোষ’ এর FSH
receptor বৃদ্ধি পায় এবং ফলিকলের বৃদ্ধি গঠে।
নিঃসরিত ‘এসট্রোজেন’ মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস এর উপর ক্রিয়া করে এবং পিটুইটরী হরমোন FSH এবং LH এর নিঃসরন কমিয়ে দেয় ফলে বড় ফলিকল টি ছাড়া অন্যান্য ফলিকল গুলো মিশে যায়।
LH ছাড়া ফলিকলের চুড়ান্ত বৃদ্ধি এবং ডিম্বপাত সম্ভব নয়। ডিম্ব পাতের ২ দিন আগে LH এর নিঃসরন ৬ থেকে ১০ গুন বৃদ্ধি গঠে। ডিম্ব পাতের ১৮ ঘন্টা পূর্ব পর্যন্ত এটি এই অবস্থানে থাকে। একই সময়ে FSH দুই গুন বৃদ্ধি পায়।
এই দুই টি হরমোনের পারস্পরিক ক্রিয়ায় ফলিকলটির ডিম্ব, ডিম্বাশয় হতে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়।
ডিম্ব পাতের পর ফলিকলটি ‘করপাস লুটেয়াম’ তৈরি করে এবং এই করপাস লুটেয়াম প্রচুর পরিমান ‘এসট্রোজেন’ এবং ‘প্রোজেসটেরন’ উৎপাদন ও নিঃসরন করে। খঐ এর উপস্থিতিতে করপাস লুটেয়াম এর নিঃসরন ও জীবনকাল বৃদ্ধি পায়।
এসট্রোজেন হরমোন এর কাজঃ
এটির প্রধান কাজ দেহের যৌন অঙ্গ ও প্রজনন অঙ্গ এবং অন্যান্য মেয়েলী সৌন্দর্য বর্ধনকারী অঙ্গ গুলোর পরিপূর্নতা সাধন। যেমন, স্তন ও নিতম্ব এর বৃদ্ধি ,চর্মের মসৃনতা,দেহের প্রোটিন গঠন এবং খনিজ আয়নের ভারসাম্য রক্ষা করা।
প্রোজেসটেরন এর কাজঃ
= এই হরমোন টি মেয়েদের ঋতুচক্র, গর্ভ ব্যবস্থপনা এর জন্য জরুরী। যেমন নিষিক্তকরন ডিম্ব কে জড়ায়ুতে প্রতিস্থাপন ও লালনের জন্য জড়ায়ু কে প্রস্তুত করা।
= জরায়ুর সংকোচন কে নিয়ন্ত্রন করে যাতে প্রতি স্থাপিত নিষিক্ত ডিম্বকটিতে আঘাত না লাগে।
= ওভাম এর পুষ্টি সরবরাহ এর ব্যবস্থা করা।
= স্তন এর উন্নয়ন এবং দূধ নিঃসরন গ্রন্থি গুলোর পরিপক্কতা প্রদান করা।
ঋতুচক্রে হরমোনের ভূমিকা:
ঋতু চক্রের মাসের শেষ দিকে এই হরমোন দ্বয়ের নিঃসরন কমে আসে।ফলে নিষিক্ত ডিম্বানু গ্রহনের জন্য প্রস্তুত জরায়ু ভেঙ্গে যায় এবং মাসিক স্রাব আকারে দেহ থেকে বেড়িয়ে যায়।
= ঋতু চলাকালীন পিটুইটরী হতে FSH
নিঃসরন ঘটে এবং নতুন ফলিকল গঠন প্রক্রিয়া শুরু করে। দুই সপ্তাহের মাথায় পরিপক্ব ফলিকল তৈরি হয়।
= ফলিকল ‘এসট্রোজেন’ নিঃসরন করে যা জরায়ু গঠনে কাজ করে। বৃদ্ধি প্রাপ্ত এসট্রোজেন LH নিঃসরন কে উত্তেজিত করে এবং ২ সপ্তাহের মাথায় ফলিকল হতে ডিম্ব মুক্ত করে। LH ফলিকল ভেঙ্গে ডিম্ব মুক্ত করনে কাজ করে।
= ডিম্ব মুক্ত হওয়ার পর ফলিকল কোষ পরিবর্তিত হয়ে করপাস লুটেয়াম কোষ এ পরিনত হয়। এই করপাস লুটেয়াম হতে ‘এসট্রোজেন’ ও ‘প্রোজেসটেরন’ হরমোন দ্বয় উৎপন্ন ও নিঃসৃত হয়।
= এই হরমোন দ্বয় নিষিক্ত ডিম্ব কে প্রতিস্থাপন ও লালন পালন এর জন্য জরায়ু কে প্রস্তুত করে।
= ঋতু চক্রের শেষ দিকে এই হরমোন দ্বয়ের নিঃসরন কমে আসে এবং নিষিক্ত ডিম্বানু গ্রহন ও লালন পালন এর জন্য প্রস্তুত জরায়ু ভেঙ্গে পড়ে এবং স্রাব
আকারে দেহ থেকে বেড়িয়ে যায়।
হিউমেন কোরিওনিক গোনাডোট্রপিক হরমোন এর কাজ (hCG):
= করপাস লুটেয়াম হতে বেশী পরিমান ‘এসট্রোজেন’ এবং ‘প্রোজেসটেরন’ এবং ভ্রুনের টেসটিস হতে ‘টেসটোসটেরন’ উৎপাদনে কাজ করে।
কিডনি হরমোন ; এনজিওটেনসিন ও ইরাইথ্রোপোয়েটিন এর কজেঃ
এনজিওটেনসিনঃ
কিডনি কোষ রেনিন এনজাইম নিঃসরন করে। এটি লিভার কতৃক প্রস্তুতকৃত ‘এনজিওটেনসিনোজেন প্রোটিন’ এর সাথে ক্রিয়া করে ‘এনজিওটেনসিন’ উৎপন্ন করে। এই হরমোন কিডনিতে সোডিয়াম শোষন এবং পটাশিয়াম নিঃসরন এ কাজ করে। এক কথায় দেহে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম এর ভারসাম্য রক্ষা করে।
ইরাইথ্রোপোয়েটিনঃ
কিডনি কোষ ‘ইরাইথ্রোপোয়েটিন’ হরমোন উৎপন্ন করে। দেহে যখন অক্সিজেন এর অভাব এবং রক্ত শূন্যতা দেখা দেয় এটি তখন মেরু মজ্জায় (Bone
Marrow)এবং প্লীহায় (Spleen) লাল রক্ত তৈরি কে উত্তেজিত করে।
প্রোল্যাকটিন হরমোনঃ
এই হরমোন প্রসব পরবর্তী বুকের দূধ (Breast milk) নিঃসরনে কাজ করে। অতিরিক্ত প্রোল্যাকটিন নিঃসরন ব্রেষ্টের বৃদ্ধি ঘটায় (Breast
enlergement)। ডোপামিন , প্রোল্যাকটিন নিঃসরন কমিয়ে দেয়। মস্তিষ্কের ‘পিটুইটরী গ্ল্যান্ড’ এর কোষে ‘ডোপামিন গ্রাহী’ (Dopamin
receptor) রয়েছে।
প্রষ্টেরিওর পিটুইটরী হরমোনঃ
প্রষ্টেরিওর পিটুইটরী দুই ধরনের হরমোন ধারন করে। ১) এন্টি-ডাই-ইউরেটিক (ADH) ২) অক্সিটোসিন (Oxytocine))
এই হরমোন দ্বয় উৎপন্ন হয় মস্তিষ্কের ‘হাইপোথ্যালামাস এ। হাইপোথ্যালামাসের কিছু স্নায়ুকোষ ‘সুপ্রাঅপটিক নিউক্লি’ ADH বা ভেসোপ্রেসিন এবং ‘প্যারাভ্যান্ট্রিকিউলার নিউক্লি’ অক্সিটোসিন সংশ্লেষন করে। উৎপন্ন হরমোন সমূহ ‘নিউরোফাইসিন’ নামক প্রোটিনের সাথে বন্ধন তৈরি করে এবং স্নায়ুর এক্সন বেয়ে ‘প্রষ্টেরিওর পিটুইটরী’ তে জমা হয়। প্রত্যেক টি হরমোন ৯ টি এমাইনোএসিডের একটি চেইন।
এন্টি-ডাইইউরেটিক (ADH) হরমোন এর কাজঃ
যখন দেহের তরল পদার্থের ঘনত্ব বেড়ে যায় (পানি কমে যাওয়ার ফলে) তখন রক্ত রসের অসমেটিক চাপ বেড়ে যায়। এই চাপ হাইপোথ্যালামাস এর কোষ ‘সুপ্রাঅপটিক নিউক্লি’ এর রিসেপ্টরে উত্তেজনা তৈরি করে। এতে ADH এবং নিউরোফাইজিন-২ প্রোটিন) সংশ্লেষন হয় এবং প্রষ্টেরিওর পিটুইটরী তে জমা হয়। এবং সেখান থেকে রক্ত স্রোতে প্রবাহিত হয়।
ADH নিন্ম রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রন করে। যখন রক্ত রসের পরিমান কমে যায় (পানি শুন্যতা,রক্ত শূন্যতা) এটি ‘ক্যারোটিড, এ্যওরটিক এবং হৃদপিন্ডের পালমোনারী’ অঞ্চলের
‘ব্যারোরিসেপ্টর’ কে উত্তেজিত করে। ‘ব্যারোরিসেপ্টর’ হাইপোথ্যালামাসে স্নায়ু সংকেত পাঠায় এবং ADH সংশ্লেষন ও নিঃসৃত হয়।
ADH এর কাজঃ
= কিডনির বিভিন্ন অংশের কোষে ADH receptor রয়েছে। এটি কিডনির বিভিন্ন অংশে পানি ও সোডিয়াম শোষন কাজে অংশ নেয়।
= ADH
ধমনীর সংকোচন তৈরি করে রক্ত চাপ বাড়ায়।
= অতিরিক্ত ADH মসৃন পেশি ,অন্ত্রীয় পেশি , পিত্তনালী এবং জড়ায়ুর সংকোচন তৈরি করে।
= ADH অনুপস্থিত থাকলে ‘ডায়বেটিস ইনসিডিপাস’ (বহুমূত্র) রোগ হয়।
অক্সিটোসিন এর কাজঃ
স্তন এর নিপল এ থাকা স্নায়ু যখন উত্তেজিত হয় ,তখন অক্সিটোসিন নিঃসরন ঘটে।
= স্ত্রীযৌনাঙ্গ এবং জরায়ুর প্রসারন ঘটে।
= গর্ভবতীদের জরায়ুর সংকোচনে কাজ করে।
= স্তনের ‘মাইওএপিথিয়াল কোষ’ (এলভিওল এর চারিদিকে দুগ্ধবাহী নালীর ভিতর এই কোষ থাকে) এর সংকোচন অবস্থা তৈরি করে স্তন দূধের নিঃসরন ঘটায়।
স্তনের নিপল শোষন করার ফলে নিপলের স্নায়ুর উত্তেজনা মস্তিষ্কের ‘হাইপোথ্যালামাস এর নির্দিষ্ট নিউরনে উত্তেজনা তৈরি করে। এর ফলে অক্সিটোসিন উৎপন্ন এবং প্রষ্টেরিওর পিটুটুইরী এর মাধ্যমে রক্তে প্রবাহিত হয়। রক্তস্নায়ু তে বাহিত হয়ে এটি স্তনের ‘মাইওএপিথেলিয়াল কোষ’ রিসেপ্টরে বন্ধন এবং সংকোচন অবস্থা তৈরি করে ফলে দুগ্ধ নালী থেকে
দুগ্ধ নিঃসৃত হয়।
এন্ডোক্রাইন গ্রন্থির রোগ ব্যবস্থাপনায় ‘এলোপ্যাথিক ড্রাগ’:
আধুনিক এলোপ্যাথিক ড্রাগ দু-প্রক্রিয়ায় কাজ করে।
১) হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপী (HRT) :
দেহ হরমোনের অনুপস্থিতি বা কম থাকলে এই থেরাপী দেয়া হয়। গবেষনাগারে বিভিন্ন হরমোনের ‘এনালগ’(হুবহু কৃত্রিম হরমোন) তৈরি সম্ভব হয়েছে।
কোন কোন ক্ষেত্রে DNA প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রানিজ হরমোন ও গবেষনাগারে সংশ্লেষন সম্ভব হয়েছে। যেমন, ইনস্যুলিন, থাইরোক্সিন, এসট্রোজেন, প্রোজেসটেরন টেসটোসটেরন, প্রোল্যাকটিন,FHS LH, অক্সিটোসিন, ভেসোপ্রেসিন প্রভৃতি।
২) হরমোন ইনহিবিটরি ড্রাগঃ
এই ধরনের ড্রাগ অতিরিক্ত হরমোন উৎপাদন , নিঃসরন বা নির্দিষ্ট কোষের রিসেপ্টরে বন্ধন তৈরিতে বাঁধা দেয়। যেমন ADH বিরোধী ড্রাগ হচ্ছে ‘ফ্রুসেমাইড’, থাইরোক্সিন বিরোধী ড্রাগ হচ্ছে ‘কার্বামাইজল’।
যেমন কার্বামাইজল ‘থাইরয়েড পারঅক্সিডেজ’ এনজাইম কে বাঁধা প্রদান করে থাইরোক্সিন উৎপাদন ব্যহত করে। ফ্রুসেমাইড,কিডনি কোষের ‘সোডিয়াম রিসেপ্টর’ ব্ল্ক করে সোডিয়াম শোষনে বাঁধা দেয় ফলে পানি শোষিত না হয়ে দেহ থেকে বেড়িয়ে যায়।
এন্ডোক্রিন সিসটেম এর রোগ প্রতিকার এ প্রাকৃতিক ঔষধী খাদ্যের ব্যবস্থাপনাঃ
আমরা উপরের আলোচনা থেকে জেনেছি যে, দেহের ‘এন্ডোক্রিন গ্ল্যান্ড’ সমূহ নির্দিষ্ট হরমোন সংশ্লেষন ,নিঃসরন এবং নির্দিষ্ট প্রান রাসায়নিক কাজ সম্পাদন করে। আর প্রতিটি নির্দিষ্ট হরমোন উৎপাদন,সংরক্ষন ও নিঃসরন এর সাথে নির্দিষ্ট ‘কোষ’দায়িত্ব প্রাপ্ত।
সুতরাং কোষের অসুস্থতা বা অকার্যকারীতাই মূলতঃ হরমোন সংত্রান্ত রোগের কারন।
কোষের অসুস্থতা বা অকার্যকারীতার পিছনে কারন সমূহ অনেকটা জানা গেছে।
১/ প্রত্যেকটি কোষের প্রান রাশায়নিক কার্যত্রম ঠিক রাখার জন্য প্রধান ৬টি জৈব রাশায়নিক উপাদান প্রতিদিন পরিমান মত প্রয়োজন।
নিচে ৬টি জৈব উপাদানের প্রতিদিন এর পরিমান উল্লেখ করা হলোঃ
Amino acid(s)
|
mg per kg body weight
|
mg per 70 kg (154lbs)
|
mg per 100 kg (220lbs)
|
Isoleucine
|
20
|
1,400
|
2,000
|
Leucine
|
39
|
2,730
|
3,900
|
Lysine
|
30
|
2,100
|
3,000
|
Methionine
+ Cysteine
|
10.4
+ 4.1 (15 total)
|
1,050
|
1,500
|
Phenylalanine
+ Tyrosine
|
25
(total)
|
1,750
|
2,500
|
Threonine
|
15
|
1,050
|
1,500
|
Tryptophan
|
4
|
280
|
400
|
Valine
|
26
|
1,820
|
2,600
|
Glucose: 180g
Fatty acid: Intake Recommendations
US Institute of Medicine
The Food and Nutrition Board of the US
Institute of Medicine has established adequate intake (AI) levels for omega-6
and omega-3 fatty
acids
(see the tables below) (1).
Adequate Intake (AI) for Omega-6
Fatty Acids (1)
|
||||
Life
Stage
|
Age
|
Source
|
Males (g/day)
|
Females (g/day)
|
Infants
|
0-6
months
|
4.4
|
4.4
|
|
Infants
|
7-12
months
|
Omega-6
PUFA*
|
4.6
|
4.6
|
Children
|
1-3
years
|
LA#
|
7
|
7
|
Children
|
4-8
years
|
LA
|
10
|
10
|
Children
|
9-13
years
|
LA
|
12
|
10
|
Adolescents
|
14-18
years
|
LA
|
16
|
11
|
Adults
|
19-50
years
|
LA
|
17
|
12
|
Adults
|
51
years and older
|
LA
|
14
|
11
|
Pregnancy
|
All
ages
|
LA
|
-
|
13
|
Lactation
|
All
ages
|
LA
|
-
|
13
|
*The various omega-6 polyunsaturated
fatty acids (PUFA) present in human milk can contribute to the AI for infants.
# LA, linoleic acid
Adequate Intake (AI) for Omega-3
Fatty Acids (1)
|
||||
Life
Stage
|
Age
|
Source
|
Males (g/day)
|
Females (g/day)
|
Infants
|
0-6
months
|
ALA,
EPA, DHA*
|
0.5
|
0.5
|
Infants
|
7-12
months
|
ALA,
EPA, DHA
|
0.5
|
0.5
|
Children
|
1-3
years
|
ALA
|
0.7
|
0.7
|
Children
|
4-8
years
|
ALA
|
0.9
|
0.9
|
Children
|
9-13
years
|
ALA
|
1.2
|
1.0
|
Adolescents
|
14-18
years
|
ALA
|
1.6
|
1.1
|
Adults
|
19
years and older
|
ALA
|
1.6
|
1.1
|
Pregnancy
|
All
ages
|
ALA
|
-
|
1.4
|
Lactation
|
All
ages
|
ALA
|
-
|
1.3
|
*All omega-3 polyunsaturated fatty
acids present in human milk can contribute to the AI for infants. ALA,
alpha-linolenic acid; EPA, eicosapentaenoic acid; DHA, docosahexaenoic acid.
Recommended daily intake of vitamins
and minerals
Humans need a certain daily intake
of food supplements. This page summarizes recommended daily intakes by
various health experts and agencies in order to provide an overview of
recommended daily allowances of all vitamins and minerals.
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
Table 1: Recommended daily intakes
of various food supplements
|
Water:2.50 to 3 l/daily
২/
কোষের কার্য ক্ষমতা হ্রাস (ডিজেনেরেশন):
কোষের হরমোন উৎপাদন ও নিঃসরন দেহের প্রয়োজন অনুসারে সম্পন্ন হয়। সুতরাং দেহ ব্যবস্থা অতিরিক্ত সক্রিয় থাকলে, সংশ্লিষ্ট হরমোন উৎপাদন ও নিঃসরন বেশি ঘটে। ফলে নির্দিষ্ট বয়স পর দেহের চাহিদা অনুযায়ী হরমোন উৎপাদন হয় না। তখন স্বাভাবিক ভাবেই দেহের প্রান রাসায়নিক ব্যবস্থায় বিশৃংখলা দেখা দেয়। এটিই মূলতঃ হরমোনাল রোগ।
যেমন,ইনস্যুলিন ব্যবস্থাপনায় ধস নামার কারনেই ‘ডায়বেটিস’ রোগ হয়। দীর্ঘ দিন ধরে অতিরিক্ত ‘গ্লুকোজ’ ব্যবস্থাপনার কারনে ইনস্যুলিন ক্ষয় প্রাপ্ত হয়। জীবনের
শেষ দিন পর্যন্ত দেহ ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কোষের ‘গ্লুকোজ’ প্রয়োজন হয়। ঠিক কোষের অভ্যন্তরে গ্লুকোজ প্রবেশের জন্য ‘ইনস্যুলিন’ প্রয়োজন হয়। কিন্তু একটা সময় প্যাংক্রিয়াসের ‘বিটাসেল’ এর ইনস্যুলিন তৈরির ক্ষমতা হ্রাস পায়। তখন রক্তের গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করতে পারে না। আর দেহের এই অবস্থা থেকে সৃষ্ট জটিলতাকেই ‘ডায়বেটিস’ বলে।
এ ভাবেই দেহের যে কোন হরমোন ব্যবস্থাপনায় বিপযস্ত হয়ে নির্দিষ্ট রোগ তৈরি করে।
৩/
কোষের
‘জিন’
ত্রুটিঃ
প্রতিটি কোষের অভ্যন্তরে একটি ‘নিউক্লিয়াস’ রয়েছে। একেই কোষের প্রান কেন্দ্র বল্। প্রতিটি নিউক্লিয়াসে রয়েছে নির্দিষ্ট সংখ্যক ‘ক্রমোজম’। প্রতিটি মানব কোষে ৪৬টি (২৩ জোড়া) ক্রমোজম রয়েছে। প্রতিটি ক্রমোজম অসংখ্য ‘জিন’ (বংশ গতির সংকেত) দিয়ে তৈরি। প্রতিটি ‘জিন’ তৈরি হয় অসংখ্য (DNA) ’। প্রতিটি ‘ডিএনএ’ গঠিত হয় অনেক গুলো ‘নিউক্লাইড’ দিয়ে। প্রতিটি নিউক্লাইড নির্মিত হয় একটি ‘রিবোজ সুগার’একটি ‘পিউরিন বা পাইরিমিডিন (প্রোটিন অনু), একটি ফসফরিক এসিড।
দেহের বংশগতির সকল বৈশিষ্ট্য, কোষের লক্ষ লক্ষ প্রানরাসায়নিক কার্য সম্পাদনের জন্য লক্ষাধিক প্রোটিন (১লক্ষ৪০হাজার),প্রায় ৬৫ হাজার এনজাইম,বিলিয়ন বিলিয়ন এন্টিবডী তৈরির গোপন সংকেত যেখানে সংরক্ষিত থাকে সেটিই মূলত ‘জিন’।
এই জিন ৩ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১/ ভ্রুনের কোষ বিভাজনের সময়।
২/ দেহ কোষ ও যৌন কোষ বিভাজন এর সময়।
৩/ বিভিন্ন স্টেরয়েড ড্রাগ, তেজষ্ক্রিয় ঔষধ, তেজষ্ক্রিয় বিকিরনকারী যন্ত্রপাতীর সংস্পর্শে আস্লে ‘জিন’এর গঠনের পরিবর্তন বা ধ্বংশ হয়।
এভাবে জিনের ক্রুটির কারনে কোষের স্থায়ী রোগ হয়। আর এ সংক্রান্ত চিকিৎসায় HRT (Hormone
replacement therapy) ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়।
যেমন ‘বিটাসেল’ এর ইনস্যুলিন তৈরির গোপন সংকেত (জিন) নষ্ট হলে আর কখনো ইনস্যুলিন উৎপাদন হবে না। আবার ইনস্যুলিন ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে ‘ড্রাগ’ আকারে ইনস্যুলিন নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়।
কিন্তু আমাদের কোষ দেহ অসুস্থ বা অকার্যকর হওয়ার কারন সমূহ চিহিৃত এবং প্রতিকারের ব্যবস্থা নিলে অনেক বড় রোগ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
বিজ্ঞানীরা মানুষের জীবন আচার ,সঠিক খাদ্য ও খাদ্য গ্রহন প্রনালী এবং প্রাকৃতিক খাবারের একটি কার্যকরী ও পরিক্ষীত নমুনা আবিষ্কার করেছেন।
এ পদ্ধতি ব্যবহার ও অনুশীলনের মাধ্যমে যে কোন রোগ প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্ভব। সঠিক প্রাকৃতিক ব্যবস্থাপনা বজায় থাকলে ‘জিন’ ক্রুটি দূর করা যায়।কারন কোষ বিভাজনের সময় জিন এর হুবহু কপি নতুন কোষে স্থানান্তরিত হয়। জিন এর কপি তৈরি হওয়ার সময় প্রাকৃতিক পরিবেশ,প্রানরাসায়নিক উপাদান ঠিক থাকলে প্রতিটি কোষ ‘ত্রুটি পূর্ন জিন’ এর মেরামত সম্পন্ন করতে পারে। প্রতি মূহুর্তে দেহের কয়েক ট্রিলিয়ন কোষ বিভাজনরত অবস্থায় থাকে। যে কোন ভূল ত্রুটি সাথে সাথে সংরশাধন হয় বলেই আমরা সুস্থ ও বেঁচে থাকি।
সুতরাং দেহ কোষের এই ক্ষমতা কে কাজে লাগিয়ে সুস্থ জীবন ও রোগ মুক্ত থাকা সম্ভব।
No comments:
Post a Comment