দেহের প্রতিরক্ষা কোষের
(ইমিউন সেল)
রাসায়নিক গঠন ও কার্যাবলী:
দেহের প্রতিটি কোষের গঠন এবং জীবন ধারন পদ্ধতি একই রকমের। একটি কোষের বাহিরের কাঠামো এবং ভিতরের অঙ্গানু গুলির কাঠামোর রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষন করে জানা গেছে; এটি প্রোটিন, কার্বহাইড্রেট ও ফ্যাট এর সমন্বয় ছাড়া অন্য কিছু নয়।
< প্রোটিন হচ্ছে , এমাইনো এসিডের একটি চেইন >
< কার্বহাইড্রেট হচ্ছে , গ্লুকোজ এর একটি চেইন >
< ফ্যাট হচ্ছে , ফ্যাটি এসিডের চেইন >
মূলতঃ একটি কোষ এর সকল কাঠামো তৈরি হয় ,এমাইনো এসিড, গ্লুকোজ ও ফ্যাটি এসিডের সমন্বয়ে। ভাষা গঠনের যেমন নির্দিষ্ট সংখ্যক বর্ণমালা আছে ,তেমনি দেহ গঠনের বর্নমালা হচ্ছে ৩টি: এমাইনোএসিড, গ্লুকোজ ও ফ্যাটিএসিড। শুধু মাত্র প্রকৃতিই এই বর্নমালা তৈরির রহস্য জানে । কোষের জৈব প্রাণ রাসায়নিক কার্যাবলীর বিশ্লেষন করে জানা গেছে যে , প্রতিটি কোষ এমাইনোএসিড, ফ্যাটিএসিড, গ্লুকোজ, ভিটামিন, মিনারেল, পানি ও অক্সিজেন এর সমন্বয়ে , সর্বক্ষন প্রাণ রাসায়নিক কাজ (বায়ো-ক্যামিক্যাল ) সম্পাদন করে। উপরিউক্ত জৈব রাসায়নিক গুলির ব্যবহারের মাধ্যমে কোষ প্রায় ৭ লক্ষ প্রাণ রাসায়নিক কাজ সম্পন্ন করে। ৭৫০০০ এর মত এনজাইম, কয়েক শত এর বেশী হরমোন এবং বিলিয়ন বিলিয়ন এন্টিবডি তৈরি করে। মানব দেহের প্রকাশিত,অপ্রকাশিত সব সব কাজেরই মুলে রয়েছে, এনজাইম, হরমোন ও এন্টিবডি এর পারস্পরিক যোগসাজসে এক অভূতপূবর্ “জৈব প্রাণ রাসায়নিক কার্যক্রম”। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত আবি®কৃত সব প্রযুক্তি এক সাথ করলেও , কোষের জৈব প্রাণ রাসায়নিক কার্যক্রমের ১০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ এর সমান হবে না। কোষের প্রাণ রাসায়নিক কাজের নির্দেশনার সকল গোপন তথ্য নিহিত থাকে, কোষের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত ‘ক্রমোজম’ এর মধ্যে। ক্রমোজম নির্মিত হয় ‘জিন’ এর সমন্বয়ে। প্রতিটি জিন নির্মিত হয়, ডি এন এ (DNA) এর সমন্বয়ে। প্রতিটি ডি এন এ নির্মিত হয় ৬০০ হতে কয়েক লক্ষ ‘নিউক্লিওটাইড’ এর সমন্বয়ে। প্রতিটি নিউক্লিওটাইড নির্মিত হয় ,একটি ৫ কার্বন বিশিষ্ট (রিবোজ ) চিনি, একটি ক্ষারীয় প্রোটিন পিউরিন বা পাইরিডিমিন ও একটি ফসফরিক এসিড এর সমন্বয়ে। কম্পিউটারের আইসি( IC)
এর ধারণা তৈরি হয়েছে, মানব দেহের নিউক্লিওটাইডের আদলে। কম্পিউটার সকল তথ্য সংরক্ষনের এর ইউনিট হচ্ছে ‘আইসি’। তেমনি মানব কোষের প্রাণ রাসায়নিক কাজের ইউনিট হচ্ছে ‘নিউক্লিওটাইড’। এই নিউক্লিওটাইডের উপকরন গুলি তৈরি হয় প্রকৃতিতে। প্রকৃতির খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমেই প্রতি মুহূর্তে উপাদান গুলি দেহ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং নিয়মাফিক নিউক্লিওটাইড এর ভাঙ্গন ও পূর্ণগঠন চলে। নিউক্লিওটাইডের ভাঙ্গন এর চেয়ে যদি পূর্ণগঠন কম হয়, তখনেই মানুষ রোগে আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।
নিন্ম উল্লেখিত কারনে
‘নিউক্লিওটাইড’
এর ভাঙ্গন বেশী হয়:
১>
সব ধরনের বিকিরন। যেমন,এক্স-রে, বেতার তরঙ্গ।
২> প্যাথলজিক্যাল টেষ্ট। যেমন,বেরিয়াম টেষ্ট,এম আর আই,পেট
স্ক্যান,সব ধরনের ‘স্কোপি’।
৩>
ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ; ক্যামোথ্যারাপি ও রেডিওথেরাপি।
৪>
কিছু বিশেষ ধরনের ড্রাগ। যেমন,এমটিএক্স ((MTX).).
৫>
অত্যন্ত শারিরীক ও মানসিক উত্তেজনা।
৬>
বার্ধক্যজনিত
কারণ।
৭>
ত্র“টিপূর্ন খাদ্যগ্রহণ।যেমন,অধিক রান্না,রাসায়নিক সার ও
প্রিজারবেটিভ।
৮>
প্রতিদিন পরিমান মত ‘পুষ্টি’ না গ্রহণ।
৯>
কিছু ধরনের জীবান্ ু। যেমন, ভাইরাস।
১০> ত্র“টিপূর্ন কোষ বিভাজন।
নিউক্লিওটাইড’এর পূর্নগঠনে
‘এডাপটো-মেডিসিনের’
ক্ষমতা:
এ্যাডাপটো-মেডিসিন কি ভাবে কাজ করে:
এ্যাডাপটো-মেডিসিন মূলতঃ দেহ কোষের মধ্যে কাজ করে। একটি দেহ কোষ এর বাহিরের কাঠামো বিশ্লেষন করে দেখা গেছে যে , এটি লিপিড, প্রোটিন ও লিপিড এর সমন্বয়ে তিন স্তর বিশিষ্ট একটি পর্দা । কোষের ভিতরের অঙ্গানু গুলো ও লিপিড ও প্রোটিন দিয়ে তৈরি।
কোষের ভিতরের রাসায়নিক পদার্থ গুলো বিশ্লেষন করে দেখা গেছে ,এগুলো গ্লুকোজ, এ্যামাইনো এসিড ও ফ্যাটি এসিড , ভিটামিন, মিনারেল ও পানির সমাবেশ ছাড়া অন্য কিছু নয়। আবার উল্লেখিত প্রতিটি যৌগ analysis করলে সোডিয়াম(Na),পটাসিয়াম (K),হাইড্রোজেন, (H)অক্সিজেন (O),ফসফরাস, (P)আয়োডিন (I),ক্লোরিন (Cl),নাইট্রোজেন, (N) ক্যালসিয়াম(Ca), Carbon
সহ ডজন খানিক মৌলিক পদার্থ। কোষের লক্ষ লক্ষ জৈব রাসায়নিক কাজের সবটায় সম্পাদিত হয় ,এ সমস্ত মৌলিক উপাদান গুলির সমন্বয়ে। যেমন, পাকস্থলীর হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরির কাজ করে যে কোষ গুলো, সে কোষ গুলোর নাম হলো “পেরিয়েটাল সেল”। এই কোষ গুলো পানি হতে হাইড্রেজেন (H), লবন (NaCl) হতে ক্লোরিন (Cl) গ্রহণ করে বিশেষ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl) তৈরি করে।
এ্যাডাপটো-মেডিসিন কোষের দৈহিক স্বাস্ব্য এবং জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ কারী সকল উপাদান সঠিক ভাবে সরবরাহ করে।
কিং এ্যাডাপটো-মেডিসিন:
গ্যানোডার্মা লুসিডাম (মাশরুম):
এক ধরনের ঔষূধী লাল মাশরুম । ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ। জৈব রাসায়নিক বিশ্লেষনে ,এর মধ্যে ৪০০ এর মত প্রাকৃতিক জৈব রাসায়নিক পদার্থ (Bio-chamical
Ingridients) শনাক্ত হয়েছে।
পলিস্যাকারাইড (৬৫টি) ,অর্গানিক জার্মানিয়াম, এডিনোসিন, ট্রাইটারপেনয়েডস+গ্যানোডারিক এসিড ১৫০টি এবং বাকী গুলো এ্যামাইনো এসিড, গ্লুকোজ, ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন, মিনারেল।
কার্যকারিতা:
প্রতিটি জৈব রাসায়নিক পদার্থের , দেহ কোষের উপর কার্যকারীতা ক্লিনিক্যাল নীরিক্ষার মাধ্যমে প্রমানিত।
পলিস্যাকারাইড:
পলিস্যাকারাইড হচ্ছে, ডি-গ্লুকোজের বিশাল চেইন। প্রকৃতির প্রতিটি গাছ এটি তৈরি করে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে , ইমিউন থেরাপীষ্টগন ,পলিস্যাকারাইডকে ‘ইমিউন মডুলেটর’ হিসাবে ব্যবহার করেন। গ্যানোডার্মা লুসিডাম এ নিহিত বিটা গ্লুকান (পলিস্যাকারাইড) ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন ভ্যাকসিন তৈরিতে পলিস্যাকারাইড ড্রাগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এক কথায় জীবানু নাশক উদ্দীপনা তৈরিতে পলিস্যাকারাইড এর কার্যকারীতা চিকিৎসা বিজ্ঞান কতৃত প্রমানিত। দেহের প্রতিটি কোষকে জীবানু মুক্ত রাখতে পলিস্যাকারাইড এর উপস্থিতি অপরিহার্য।
অর্গানিক জার্মানিয়াম:
এটি একটি খনিজ পদার্থ যা, কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ ও ঝরনার পানিতে পাওয়া যায়। মাটিতে পাওয়া অজৈব জার্মানিয়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি একটি অর্ধপরিবাহী ধাতু যা, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়। এর পারমানবিক সংখ্যা ৩২। এর সর্বশেষ কক্ষে ৪টি মুক্ত ইলেকট্রন থাকায় অতি সহজেই , দেহ মধ্যে উৎপাদিত মুক্ত আয়ন (ফ্রী রেডিক্যল) গুলোকে গ্রহণ অথবা প্রদান করে ,দেহ ব্যবস্থায় অম্লীয় ও ক্ষারীয় সাম্য প্রতিষ্ঠা করে। গবেষনায় দেখা গেছে, মানুষের দেহ সামান্য ক্ষারীয় অবস্থায় জৈব রাসায়নিক কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করে। ক্যানসার গবেষনায় প্রমানিত যে, ক্যানসার কোষ অম্লীয় (এসিডিক) অবস্থায় থাকে। ফলে ক্যানসার কোষের জৈব রাসায়নিক কাজ মারাত্মক ভাবে ব্যহত হয় এবং ক্যানসার ছড়িয়ে পড়তে (মেটাসটেসিস) সাহায্য করে। অর্গানিক জার্মানিয়াম ক্যানসার কোষের অতিরিক্ত মুক্ত আয়ন গ্রহণ করে ,ক্যানসার কোষের মেটাসটেসিস বন্ধ করে। তাই ক্যানসার চিকিৎসায় এর ব্যবহার এ ইউ এস ক্যানসার সোসাইটির স্বীকৃতি আছে।
জাপানী প্রকৌশলী চিকিৎসক ডাঃ কাইজুহাইকী আশাইই ,সর্বপ্রথম ঝরনার পানি হতে এই অর্গানিক জার্মনিয়াম আবিষ্কার করেন এবং এর পেটেন্ট লাভ করেন। তিনি জাপানে অর্র্গানিক জার্মানিয়াম নামে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন যার চিকিৎসার প্রধান উপাদান অর্গানিক জার্মানিয়াম। প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ‘গ্যানোডার্মা লুসিডাম ’ এ সর্বাধিক পরিমানে অগানিক জার্মানিয়াম (১-৫%)আবি®কৃত হয়েছে।
এডিনোসিন:
এডিনোসিন একটি জৈব যৌগ যা, মানব কোষের একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি একটি পিউরিন নিউক্লিউটাইড যা, কোষের ডিএনএ এর একটি উপাদান। একটি প্রোটিন এডিনিন, একটি রিবোজ (৫ কার্বন বিশিষ্ট) সুগার,একটি ফসফরিক এসিড। কোষের ডিএনএ হচ্ছে ক্রমোজমের অংশ যা, বংশগতির ধারক ও বাহক। ডিএনএ দেহ ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন, এনজাইম এবং এন্টিবডির তৈরির গোপন সংকেত ধারন করে। এ ছাড়া কোষের অফুরন্ত শক্তি তৈরির জ্বালানীর উৎস হচ্ছে ‘এডিনোসিন’ এটিপি। এক ধরনের হার্টের রোগীদের ‘এডিনেসিন’ ড্রাগ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের কার্ডিয়াক সেন্টারে ‘সুপ্রভেন্ট্রিকিউলার ট্রাকিকার্ডিয়া’ এসভিটি রোগিদের এডিনোসিন ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করে। এডিনোসিন হৃদপিন্ডের রক্ত নালীর সম্প্রসারন ঘটিয়ে হৃদপেশির স্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। হার্টের সাইনাস নোডে উত্তেজনা তৈরি করে, হার্ট বল্ক রোগীদের হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক কাজ ফিরিয়ে দেয়।
> ফুসফুসের পালমোনারী ধমনীর চাপ কমানোর জন্য এডিনোসিন ব্যবহৃত
হয়।
> এডিনোসিন লিভার এর গ্লাইকোজেন ভেঙ্গে গ্লুকোজ তৈরি এবং দেহ চর্বি
ভাঙ্গন রোধ করে গ্লুকোজ গ্রহণ বৃদ্ধি করে। ফলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন হয়।
> এডিনোসিন স্টেরয়েড হরমোন নিঃসরন বৃদ্ধি করে, ফলে যৌন উত্তেজনা
বৃদ্ধি পায় এবং প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়।
প্রতিাট জীব কোষ প্রকৃতির খাদ্য হতে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন করে। আর এই রাসায়নিক শক্তিই এডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি)। সমস্ত জীব জগতের সকল বৈচিত্রময় সৃষ্টি ও কাজের পেছনে যে রাসায়নিক শক্তি কাজ করে , সেই রাসায়নিক শক্তির মূল জ্বালানি হচ্ছে ‘ গ্লুকোজ’ যা প্রকৃতির উদ্ভিদরাজী প্রতিনিয়ত সূর্যের আলো এবং বাতাস থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড গ্রহনের মাধ্যমে বিশেষ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করে থাকে।
ট্রাইটারপেনয়েডস:
ট্রাইটারপেনয়েডস হচ্ছে ,ফাইটোক্যামিক্যালস এর একটি বড় গ্র“প। এটি হাইড্রোজেন ও কার্বনের একটি বড় যৌগ। ফাইটোক্যামিক্যল হচ্ছে, প্রাকৃতিক রাসায়নিক পদার্থ যা, উদ্ভিদে জন্মায়। প্রায় ২০,০০০ এর বেশী টাইটারপনেয়েডস প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। গ্যানোডার্মা মাশরুম এ ১০০এর বেশি ধরনের , ১-৫% ট্রাইটারপেনয়েডস আছে। ক্লিনিক্যল ট্রায়ালে জানা গেছে, এটি এন্টিইনফ্লামমেন্টরী, এন্টিএনালজেসিক, লিভারপ্রটেক্টর , কার্ডিওটনিক , সিডেটিভ, এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টিব্যাকটেরিয়াল , এন্টিভায়রাল, এন্টিএলারজিক ,এন্টিটিউমার, এন্টিক্যানসার।
ব্রেস্টক্যানসার এবং ক্যামোপ্রিভেনশান এর চিকিৎসায় ট্রাইটারপেনয়েডস এর কার্যকারীতার উপর ব্যাপক গবেষনা পরিচলিত হয়েছে ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভারসিাট অব ওকালহোমা এর অনকোলজি সেন্টারে , ক্যানসার প্রতিরোধে প্রাকৃতিক ট্রাইটারপেনয়েডস এর কার্যকারীতার ফলাফল বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করেছে।
গ্যানোডারিক এসিড:
গ্যানোডার্মায় ১২ ধরনের এসিড শনাক্ত হয়েছে। এর গঠন অনেকটা ট্রাইটারপেনয়েডস এর মত। বায়োলজিক্যালি এগুলি লিভারপ্রটেক্টটর, এন্টিটিউমার এজেন্ট এবং ৫-আলফা রিডাকটেজ প্রতিরোধক। ৫-আলফা রিডাকটেজ প্রতিরোধক যা , পিত্ত লবন সংশ্লেষন ,এনড্রোজেন, এস্ট্রোজেন মেটাবলিজম এবং প্রোসথেটিক ক্যনসার প্রতিরোধ করে।
এডাপটো-মেডিসিন ‘ স্পাইরুলিনা ’ :
জেনেরিক নাম এবং ট্রেড নাম: স্পাইরুলিনা
এক ধরনের সামুদ্রীক শৈবাল ,যা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। এটির আনুমানিক বয়স ৩.৫০বিলিয়ন বৎসর। ধারণা করা হচ্ছে , পৃথিবীর প্রথম প্রানের অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটে এ ধরনের এক কোষি শৈবাল সৃষ্টির মাধ্যমে। প্রাণরাসায়নিক বিশ্লেষনে প্রায় ৩০০ এর ও বেশি জৈব রাসায়নিক উপাদান আবি®কৃত হয়েছে। প্রধান রাসয়ানিক উপাদান হচ্ছে;
এ্যামাইনো এাসিড ,গ্লুকোজ,ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ও মিনারেল। এ পর্যন্ত গবেষনার ফলাফল হতে জানা গেছে ,স্পাইরুলিনা হচ্ছে সবেেচয়ে বেশি এ্যামাইনো এসিড, ভিটামিন, মিনারেল এর প্রাকৃতিক ভান্ডার। যা মানব দেহ কোষের প্রতিটি পুষ্টি উপাদানের যোগান দেয় এবং কোষের প্রধান প্রধান অসুস্থ্যতা সাড়িয়ে তোলে। দেহ কোষের ৬টি পুষ্টির অন্যতম প্রধান পুষ্টি ‘এ্যামাইনো এসিড’। এই এ্যামাইনো এসিড ছাড়া কোষ বাঁচতে পারেনা। ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাবে অসংখ্য রোগের কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞান নিশ্চিত করেছে।
গবেষনায় নিশ্চিত হওয়া গেছে , দেহ কোষ সামান্য ক্ষারীয় অবস্থায় স্বুস্ব্য থাকে। স্পাইরুলিনা একটি সেরা ‘ক্ষারীয় খাদ্য ’ হিসাবে চিকিৎসা বিজ্ঞান কতৃক স্বীকৃত। নিয়মিত স্পাইরুলিনা সেবনে দেহ কোষের ক্ষারীয় পরিবেশ বজায় থাকে, কোষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট থাকে।
মরিন্ড্রি সিট্রিফোলিয়া (ননি ফল):
ননি ফল প্রাচীন ভারতের সুপরিচিত একটি আর্য়ুরবেদীক ঔষুধ। বৈজ্ঞানিক নাম মরিন্ড্রি সিট্রিফোলিয়া। হাজার হাজার বৎসর ধরে এই ফলটি রোগ নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে আসছে। আধুনিক প্রাণরাসায়নিক গবেষনায় জানা গেছে এতে ১৫০+এর অধিক প্রাণ রাসায়নিক উপাদান রয়েছে।
ননি ফলে প্রোজেরোরিন নামে একটি জৈব যৌগ আছে । দেহের লিভার কোষ গুলো এই উপাদান তৈরি করে। প্রোজেরনিনের প্রধান কাজ হচ্ছে ,লিভার কোষে তৈরি কিছু ধরনের প্রোটিন বহন করে দেহের অন্যান্য কোষে পৌছে দেয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে লিভার কোষে এই প্রোজেরনিন তৈরি করার ক্ষমতা কমতে থাকে । তাই বয়স্ক লোকদের প্রতিদিন পরমিান মত এই ফলের রস খাওয়া উচিত।
> ‘প্রজেরনিন‘ ব্যাথানাশক এবং অবশকারক হিসাবে কার্যকর।
> ১৯৯৩ সালে ডা: রাল্ফ গবেষনা চালিয়ে ননির মধ্যে বিদ্যমান ‘ড্যামনাক্যানন্থল” আবিষ্কার করেন। ড্যামনাক্যান্থল প্রি-ক্যান্সার কোষগুলিকে স্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির সুচনা ঘটায়।
> রকফোর্ড ইউনিভারসিটি অফ ইলিনয় কলেজের এক গবেষনায় প্রমানিত যে,ননি ৫০% ফুসফুস,৬০%হৃদযন্ত্র,৭০%যকৃত, ৯০%কিডনি ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি কমায়।
উপরিউক্ত বিস্তারিত আলোচনা থেকে বুঝা যায় য়ে,দেহ কোষ জীবানু ,টক্সিন বা ফরেইন ম্যাটার দ্বারা আক্রান্ত হলে,প্রদাহ সৃষ্টি হয়। যেহেতু, দেহ কোষ নিদিষ্ট এন্টিবডি তৈরির মাধ্যমে সব ধরনরে ফরেইন ম্যাটার কে ধ্বংশ করে, সেহেতু ঐ নির্দিষ্ট এন্টিবডি উৎপাদনের নির্দেশকারী ডিএনএর (DNA)
একক নিউক্লিওটাইড নষ্ট হলে, নির্দিষ্ট এন্টিবডি তৈরি হয় না। ফলে আক্রমনকারী বর্হিশত্র“ দ্বারা দেহে প্রদাহের সৃষ্টি হয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠিত কিছু কার্যকর উপায়:
এসপেরিন:
উইলো (Willow) গাছের ছাল থেকে আবি®কৃত এসপেরিন (এসিটাইল স্যালিসাইলিক এসিড) একটি বিস্ময়কর ড্রাগ হিসাবে পরিচিত। এটি ইমিউন সিসটেম এর দুটি প্রধান প্রোটিন ইন্টারলিউকিন-২, এবং ইন্টারফেরন উৎপাদনকে উৎসাহিত করে যা ক্যান্সার কোষ ধ্বংশে দেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কাজে লাগায়। এসপেরিন ব্যবহারে গলা ,পাকস্থলী, বৃহদান্ত্র, এবং মলাশয় এর ক্যান্সার ৪০শতংিশ কমিয়ে আনতে পারে। (Miuhal Thun :Analytical Epidermiological Departmentof American
Cancer Society) পাকস্থলী, পিত্তথলী এবং স্তন ক্যান্সার ৩০% হতে ৪০% কমিয়ে আনতে পারে।(National Cancer Institute
of Sweden) । এসপেরিন কোল-রেকটাল ক্যান্সার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধে করে।
আনারস:
পাইন আপেল গাছ ব্রোমিলেইন (Bromelain) এনজাইম ধারন করে। ব্রোমিলেইন ক্যান্সার কোষ এর প্রতিরোধক প্রোটিন কে ভেঙ্গে দিতে পারে। প্রতিরোধ প্রোটিন ভেঙ্গে গেলে রক্তের শ্বেত কনিকা ক্যান্সার কোষ গুলিকে ধ্বংশ করতে পারে। পাইন আপেল একই ধরনের এনজাইম ধারন করে । এটি ভিটামিন –এ, ভিটামিন-সি এবং দ্রবনীয় তন্তু ধারন করে। এই সব উপাদানই ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্রিয় ভুমিকা প্রমানিত।
এন্টিঅক্সিডেন্ট:
এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক রাসায়নিক পদার্থ যা ক্যান্সার এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এটি বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত যে, দেহের নিজস্ব এন্টিঅক্সিডেন্ট (গ্লুটাথায়ন) ব্যবস্থা প্রতি মূহূর্তে ক্যান্সার উৎপাদন কারী (ফ্রী রেডিক্যাল) পদার্থ কে নিষ্ক্রিয় করার মাধ্যমে দেহকে ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন এ,ই,সি দেহের প্রধান এন্টিঅক্সিডেন্ট। নিন্মে এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলির ক্যান্সার বিরোধী কার্যক্রম আলোচনা করা হলো:
ভিটামিন-এ:
মানব দেহের সকল অঙ্গের বাহির ও ভিতর এর স্তর ‘এপিথেলিয়াল কোষ ’ স্তর দ্বারা আবৃত থাকে। ভিটামিন-এ ,এপিথেলিয়াম কোষের কার্যক্রমকে সঠিক ভাবে পালন করতে সাহায্য করে। ফুসফুস, মুখগহবর, গলনালী,স্তন, জরায়ূ মুখের ক্যান্সার এর ঝুঁকি কম রাখতে সাহায্য করে। (Bjelke
1975, Garison 1985)..মানুষের মোট ক্যান্সার এর অর্ধেকইে ‘এপিথেলিয়াল ক্যান্সার’। ভিটামিন-এ একটি শক্তিশালী ‘এন্টি কার্সিনোজেন’। ভিটামিন-এ কোষের DNA কে পরিবর্তন এর হাত থেকে রক্ষা করে।(Hirayama 1994)। এটি ভিটামিন সি, সেলেনিয়াম (মিনারেল) কে কাজ করাতে সাহায্য করে। (McMichael
1994)| একটি ছোট আকারের গাজর বা ১কাপ রান্না করা ব্রোকোলি প্রতিদিনের ভিটামিন-এ এর চাহিদা মেটাতে পারে।
ভিটামিন-সি:
ভিটামিন-সি একটি সেরা ক্যান্সার বিরোধী এজেন্ট। এটি দেহের প্রধান ফ্রী রেডিক্যাল শিকারী। পাকস্থলী ও মুখ গহবরের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। (Dungal
et,al 1967)। ভিটামিন-সি ‘ নাইট্রোসএমাইন’ গঠনে বাঁধা প্রদানের মাধ্যমে পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। (Garison
1985)। এটি গ্যাসট্রিক ক্যান্সার ,ব্লাডার ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমিয়ে আনে।(Schlegel 1975) । ভিটামিন-সি কোলেষ্টেরল সংশ্লেষনে ভূমিকা রাখে। এবং ব্লাড কোলেষ্টেরল HDLবৃদ্ধি করে। HDL কোলেষ্টেরল রক্ত নালীতে চর্বি জমতে বাঁধা প্রদান করে। ভিটামিন-সি ,লালরক্ত কনিকা ও শ্বেতরক্ত কনিকা কে পরিণত (ম্যাচিউর) হতে সাহায্য করে।
আমলকি, পেয়ারা, চুকাফল এবং পাতা যুক্ত শাকশবজি (কাঁচা) প্রতিদিন অল্প পরিমান খেলেই দেহে ভিটামিন-সি এর অভাব পূরন হয়।
ভিটামিন-ই:
ভিটামিন-ই একটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট। এর ক্যান্সার বিরোধী কার্যকারীতা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত। ভিটামিন-ই ,বাতাস দুষনজনীত কারনে ফুসফুস ক্যান্সার এর হাত থেকে রক্ষা করে। বিকিরনজনীত কারনে টিউমার ,ক্যামোথ্যারাপীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ,এবং ভিটামিন-এ কে ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষা করে। এটি হার্ট ও পেশীতে অক্সিজেন শোষনে সাহায্য করে। স্নায়ু তন্ত্র ও দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন-ই, সিসটিক ফাইব্রোসিস , ক্রনিক লিভার ডিজিজ, ব্লাড কোলেষ্টেরল HDL বৃদ্ধি, সিকেল সেল এনিমিয়া, পেশির অবসাদ দূর করে। (Helber
1986 Vit,Min & Nutrition)। ভিটামিন-ই,LDL বিজারন প্রতিরোধ করে। LDL বিজারিত হয়ে ম্যাক্রোফ্যাজ (এক ধরনের শ্বেতকনিকা) দ্বারা গৃহিত হয় এবং ধমণী ও শিরা পথে আটকা পড়ে। এ ভাবে ধমনী ও শিরা পথে রক্ত চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে। ভিটামিন-ই এর এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতার জন্য ধমনী ও শিরা পথে গাঁদ জমতে বাঁধা দেয়। ভিটামিন-ই রক্তের প্লাটিলেট কে জমাট বাঁধতে দেয় না। ভিটামিন-ই দেহের ইমিউন সিসটেমকে জাগ্রত করে। (Human
Nutrition Communication 1994). ‘হুইট জার্ম ওয়েল ’ সবচেয়ে বেশি ভিটামিন-ই ধারন করে। ১০০ গ্রাম সয়াবিন তেলে ৯৩.৭৪মি:গ্র: ভিটামিন-ই থাকে।
ভিটামিন-বি ৬:
ভিটামিন-বি ৬ , ইমিউন সিসটেমকে শক্তিশালী করে। ভিটামিন-বি ৬ এর উপস্থিতিতে দেহে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়। (Hendler 1985).
ফলিক এসিড:
এটি ভিটামিন-বি গ্র“পের অর্ন্তভূক্ত একটি ভিটামিন। এটির প্রধান কাজ হচ্ছে কোষের বংশগতির তথ্য উঘঅ এর (জেনেটিক কোড) গঠন ও সংরক্ষন করা এবং কোষের স্বাভাবিক কোষ বিভাজন কে পরিচালিত করা। ফলিক এসিডের অভাব হলে কোষ নষ্ট হয়ে যায় এবং ক্যান্সার এর প্রথম পদক্ষেপ শুরু হয়। ফলিক এসিড স্বাভাবিক কোষকে ক্যান্সার কোষে যেতে বাঁধা প্রদান এবং অস্বুস্ব্য কোষকে স্বাভাবিক স্বুস্ব্য কোষে পরিণত হতে সাহায্য করে। (Yunis
1984,Butterworth 1980)
সবচেয়ে বেশি ফলিক এসিড এর উৎস হচ্ছে, সবুজ পাতা সমৃদ্ধ শাকশবজি । তাপে ফলিক এসিড সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে যায়। সঠিক ভাবে খাদ্য সংরক্ষন না করলে, শাকশবজি বেশি রান্না করলে ,রান্না করা পানি ফেলে দিলে কোন ফলিক এসিড খাদ্যে বিদ্যমান থাকে না।
ভিটামিন-ডি:
ভিটামিন-ডি স্তন ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এবং কিছু ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে থামিয়ে দেয়।(Shamberger 1982, Garland 1985)
ট্রেস এলিমেন্ট:
দেহ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় কিছু মৌলিক পদার্থের সামান্য পরিমান উপস্থিতি অপরিহার্য। এ ধরনের পদার্থের অভাব ঘটলে দেহে ক্যান্সার এর ঝুঁকি থাকে।
>সেলেনিয়াম:
সেলেনিয়াম একটি খনিজ পদার্থ। এটি বিভিন্ন এনজাইম গঠনে অংশ নেয়। এই এনজাইম গুলো দেহকে ফ্রী রেডিক্যাল এর ধ্বংশাত্মক কাজ থেকে রক্ষা করে। (Willet
et,al 1983,Griffin 1979)। সেলেনিয়াম ভিটামিন-ই এর কার্যক্রমকে শক্তিশালী করে। এটি দেহকে দুটি টক্সিক ধাতু ক্যাডমিয়াম, ও মারকারীর বিষক্রিয়া কে প্রতিরোধ করে। (National
Research Council 1982) । সেলেনিয়াম এর অভাবে পরিপাকতন্ত্র, ফুসফুস, স্তন এবং লিম্ফ সিসটেম এ ক্যান্সার এর সম্ভবনা বাড়ে। (Shamberger
et,al 1976) প্রাইমারী লিভার কারসিনোমা (PLC) এর সাথে সেলেনিয়াম এর অভাব গবেষনার মাধ্যমে প্রমানিত। (Cancer Institute ,Chinese
Academy of Medical Science)| রসুন (র্গালিক) এ সেলেনিয়াম ও জার্মািনয়াম পাওয়া যায়।
>জিংক:
প্রতি কোষের উঘঅ এর গঠন এবং কার্যকারীতা ঠিক রাখার জন্য ‘জিংক’ এর প্রয়োজন। শিশূদের লিউকিমিয়ায় ‘জিংক’ এর উপস্থিতি কম পাওয়া যায়। ফুসফুস ক্যান্সার ও জিংক এর পরিমান স্বাভাবিক এর চেয়ে কম থাকে। শিশুর বৃদ্ধির জন্য জিংক এর প্রয়োজন হয়।
কলা, কালোজাম, খেজুর,কিসমিস, সবুজ মটর ও ডাল এ ভাল পাওয়া যায়।
মোলিবডেনাম, ম্যাঙ্গানিজ, জার্মানিয়াম।
এদের সামান্য উপস্থিতির অভাবে দেহে ক্যান্সার সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হয়।
আমেরিকার ক্যান্সার সোসাইটি (২০০০) নিরূপিত দেহের কতিপয় অঙ্গের ক্যানসার ঝুঁকির কারণ :
ক) স্তনের ক্যান্সার:
বয়স বাড়ার সাথে স্তন ক্যান্সার এর ঝুঁকি রয়েছে । পারিবারিক ইতিহাস স্তন ক্যান্সার এর অন্যতম কারণ। কিছু বিনাইন ব্রেষ্ট টিউমার এর কারণ দেরীতে রজঃনিবৃত্তি, দীর্ঘ দিন এসট্রোজেন চিকিৎসা, কোন সন্তান না নেওয়া, অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত খাবার এবং পশু প্রোটিন, নিয়মিত ব্যায়াম না করা , পেষ্টিসসাইড ও এ্যালকোহল গ্রহণ, ভ্রুন নষ্ট করা।
খ) জরায়ুর যৌন মূখের ক্যান্সার (সারভিক্স ক্যান্সার):
যৌন মুখের ক্যান্সার সাথে এক ধরনের ভাইরাস HPV (Human papiloma virus) এর সংক্রমন দায়ী। এই ভাইরাস যৌন সম্পর্ক এর মাধ্যমে ছড়ায়। কম বয়সে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, বহুগামীতা ,ধুমপান, অস্বাস্ব্যকর জীবনযাপন সারভিক্স ক্যান্সার এর কারণ।
গ) জরায়ুর এন্ড্রোমেট্রিয়াম ক্যান্সার :
জরায়ু গহবরের ক্যান্সার এর সাথে এসট্রোজেন হরমোন চিকিৎসার সম্পর্ক আছে। এছাড়া বন্ধ্যাত্ব ,ডায়বেটিস, পিত্তথলীর রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ওবেসিটি, বংশগত নন-পলিপোসিস কোলন ক্যান্সার এর সাথে যোগসুত্র রয়েছে।
ঘ) ওভারিয়ান ক্যান্সার (ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার):
যে সমস্ত মেয়েরা কখনো সন্তান ধারন করে না তাদের ওভারিয়ান ক্যান্সার এর ঝুঁকি থাকে।
ঙ) কোলন এবং মলাশয়ের ক্যান্সার:
নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম না করা , উচ্চ চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ,তন্তু যুক্ত খাদ্য না গ্রহণ এর সাথে কোলন ও রেকটাম ক্যান্সার এর সম্পর্ক আছে।
চ) প্রোসট্রেট ক্যান্সার :
৬৫ বৎসরের উর্দ্ধে সকল পুরুষের এই প্রোস্ট্রেট ক্যান্সার এর ঝুঁকি থাকে। ৫% থেকে ১০% ক্যান্সার এর সাথে পারিবারিক ইতিহাস জড়িত। খাদ্যে অতিরিক্ত চর্বি ও এ ক্যান্সার এর জন্য দায়ী।
ছ) মূত্র থলির ক্যান্সার:
ধুমপান এই ক্যান্সার এর প্রধান কারণ বলে চিহিৃত হয়েছে।
জ) মুখ গহবর এবং ফ্যারিনজিয়াল ক্যান্সার:
সিগারেট, সিগার, জর্দ্দা, অতিরিক্ত মদ্যপান, প্রধান ঝুঁকি হিসাবে চিহিৃত
ঝ) প্যাংক্রিয়াস ক্যান্সার :
ধুমপান এবং বয়স বৃদ্ধি ,উচ্চ চর্বি যুক্ত খাবার প্রধান ঝুঁকি।
ঞ) ফুসফুস ক্যান্সার :
৯০ শতাংশ ফুসফুস ক্যান্সার এর জন্য দায়ী ধুমপান। অন্যান্য উপাদান হচ্ছে,আর্সেনিক, এসবেষ্টর, বিকিরন, দূষন,। (WHO TRS 797)
ট) ব্লাড ক্যন্সার::
তেজষ্ক্রিয় বিকিরন, বেনজিন, ব্লাড ক্যান্সার এর অন্যতম কারণ। কিছু ধরনের লিউকিমিয়ার কারণ HTLV-1 (Human T-cell Leukimia &
Lymphoma virus-1) ভাইরাস।
ঠ) স্কিন ক্যান্সার:
অতি বেগুনি রশ্মি (Ultra violet Ray), ফেয়ার কমপ্লেক্সান, পেশাগত কারনে কয়লা, আলকাতরা, আর্সেনিক প্রভৃতি পদার্থের দেহে প্রবেশ। তিল বা আঁচিল এর পরিবর্তন।
ক্যান্সার এর প্রাথমিক প্রতিরোধ সমূহ:
যে গুলি এড়িয়ে চলতে হবে:
১) ধুমপান,তামাকজাত দ্রব্য,অতিরিক্ত এলকোহল।
২) অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত খাবার।
৩) লবন, স্মোকড ও নাইট্রাইট সংরক্ষিত ফুড।
৪) দীর্ঘ দিনের মজুদ খাদ্য শস্য।
৫) বিকিরন,পরিবেশ উদ্ভূত টক্সিন,শিল্প বর্জ প্রভৃতি।
৬) অল্প বয়সে বিয়ে , ঘন ঘন প্রসব, বহুগামীতা, এসট্রোজেন চিকিৎসা।
৭) প্রখর রোদ।
৮) অস্বাস্ব্য কর খাবার।
৯) হেপাটাইটিস-বি ও সি।
১০) অতিরিক্ত রান্নাকরা খাবার ,বাসী খাবার, ভাজা, পোড়া ও তৈলাক্ত
খাবার।
যে গুলি অনুশীলন করতে হবে:
১) HBV ভ্যাকসিন।
২) সময় মত বিয়ে, কম সন্তান প্রসব, বুকের দুধ খাওয়ানো।
৩) যোৗনাঙ্গের স্বাস্ব্য পরিচর্যা।
৪) মুখ গহবরে স্বাস্ব্য পরিচর্যা।
৫) সুষম খাদ্য গ্রহণ।
৬) দৈহিক ওজন ঠিক রাখা।
৭) নিয়মিত ব্যায়াম।
পুষ্টি ও খাদ্য:
১) নিয়মিত শাকশবজি ও ফল গ্রহণ।
২) উচ্চ শর্করা ও নিন্ম চর্বি যুক্ত খাবার।
৩) পরিমান মত প্রোটিন গ্রহণ,পশু প্রোটিন বর্জন।
যে গুলো নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে:
১) এন্টিঅক্সিডেন্ট ;ভিটামিন - এ,ই,সি।
২) ভিটামিন-৬, ফলিক এসিড।
৩) সামান্য পরিমান;সেলেনিয়াম, জিংক, মলিবডেনাম, ম্যাঙ্গানিজ,
জার্মানিয়াম।
৪) এসপিরিন, সপ্তাহে ২/৩টি , মধ্য বয়স থেকে।
No comments:
Post a Comment