নিন্মে কিছু ড্রাগ ও রোগ প্রশমনে এর কলাকৌশল নিয়ে আলোচনা করা হলো:
Anti-Diabetic Drug:
Gliclazide (C15H21N3O3S), Glibenclamide(C23H28ClN3O5S)
ড্রাগ দুটি ডায়বেটিক টাইপ-২ নিয়ন্ত্রনে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়। এই ড্রাগ গুলো Salfonylurea গ্রুপের অšর্তভূক্ত সালফা ড্রাগ, মূলতঃ এন্টিবায়োটিক হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৯৩২ সালে Coal Tar dyes হতে এটি পৃথক করা হয়।
Sulfa drug এর সক্রিয় উপাদান Sulfanilamide ( C6H8N2O2S) এই যৌগটি প্যারা এমাইনোবেনজয়িক এসিড (PABA) কে প্রতিরোধ করে ফলে ফলিক এসিড তৈরি হতে পারে না। Folic acid (C19H19N7O6) ছাড়া কোষের ডিএনএ তৈরি হতে পারে না। ব্যাকটেরিয়া PABA এর সাহায্যে নিজ দেহে ফলিক এসিড তৈরি করে। স্তন্যপায়ী প্রানি (মানুষ) নিজ দেহে ফলিক এসিড তৈরি করতে পারে না।
সালফা ড্রাগ নিয়ে গবেষনা করতে গিয়ে বিজ্ঞানিরা লক্ষ্য করেছেন যে, এটির এন্টিডায়বেটিক কার্যকারীতা রয়েছে। দেহের হার্ট ও প্যাংক্রিয়নাসের বিটা সেল পৃষ্টে সালফোনিলামাইড রিসেপ্টর রয়েছে। Gliclazide শুধুমাত্র বিটাসেল রিসেপ্টর এ যুক্ত হতে পারে। এটি বিটা সেলে যুক্ত হওয়ার পর খুব সক্রিয় ভাবে কোষের ভিতর পটাশিয়াম প্রবেশ বন্ধ করে দেয় এবং ক্যালসিয়াম প্রবেশ বাড়িয়ে দেয়। ক্যালসিয়াম কোষের ভিতর ক্যালমোডিউলিন (একটি প্রোটিন) কে সক্রিয় করে যা বিটা কোষের ইনস্যুলিন থলি গুলো কে ভেঙ্গে দিয়ে এর নিঃসরন ঘটায়।
মেটফরমিন (Metformin C4H11N5) অন্য একটি ড্রাগ যা ডায়বেটিক ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হয়। এ ড্রাগটি লিভারে Glucose উৎপাদন বন্ধ করে, অন্ত্রে Glucose শোষন কমিয়ে দেয় এবং কোষ মধ্যে Glucose প্রবেশ বৃদ্ধি করে। এই ড্রাগটি Biguanide (C2H7N5) একটি জৈব যৌগ, যা গ্যালেগা
অফিসিনালিস উদ্ভিদ থেকে পৃথক করা হয়েছে। গ্যালেগার নির্যাস থেকে ১৯২০ সালে এটি পৃথক করা হয়। ১৯৯৪
এফডিএ, ড্রাগ হিসাবে
ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
এই হার্বটিই বহুশত
বৎসর ধরে ডায়বেটিক
চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে
আসছে।
Pioglitazone (C19H20N2O3S):একটি ড্রাগ যা ডায়বেটিক ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হয়। Glitazone ড্রাগটির কার্যকরী অংশ হচ্ছে থায়াজোলাইডিন(Thaizolidne C3H7NS) যে টি একটি জৈব যৌগ। এ জৈব যৌগ টি থিওল, এলডিহাইড বা কিটোন এর ঘনিভূতকরন থেকে সৃষ্টি হয়েছে। এটি সালফার যুক্ত একটি এলকোহল।
Glitazone জৈব যৌগটি কোষের নিউক্লিয়ার রিসেপ্টর কে সক্রিয় করে। Nucler Receptor একটি বিশেষ ধরনের প্রোটিন যা প্রতিটি কোষের মধ্যে পাওয়া যায়। এটি স্টেরয়েড এবং থাইরয়েড হরমোন এবং কিছু নিশ্চিত অনুর সংস্পর্শে সাড়া জাগায়। রিসেপ্টর গুলো অন্য প্রোটিন এর সাথে কাজ করে , কোষের নির্দিষ্ট জীন কে নিয়ন্ত্রন করে। এভাবে জীন গুলো কোষের ডেভেলপমেন্ট, হমোস্ট্যাসিস এবং মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রন করে। নিউক্লিয়ার রিসেপ্টর সরাসরি কোষের ডিএনএ এর সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতা রাখে এবং নিকটকর্তী জীন কে কাজ করাতে পারে।
পারঅক্সিজোম-প্রোলাইফেরেটর-এক্টিভেটেড রিসেপ্টর গামা (PPAR-Gamma) :
একটি সুনির্দিষ্ট নিউক্লিয়ার রিসেপ্টর যা ফ্যাটিএসিড ও ইকোসানয়েড (ফ্যাটি এসিডের বড় চেইন) কে নিয়ন্ত্রন করে। Glitazone কোষ মধ্যে ফ্যাটিএসিড সঞ্চয় করে। ফলে কোষ শক্তি উৎপাদনের জন্য Glucose এর উপর নির্ভর করে।
এই ড্রাগটি বহুল প্রচলিত একটি এন্টিডায়বেটিক এজেন্ট। কিন্তু ড্রাগটির মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া প্রমানিত হওয়ার কারেনে বিভিন্ন দেশে এটি নিষিদ্ধ ড্রাগের তালিকায় রয়েছ।
ডায়বেটিস কে অনিরাময় যোগ্য রোগ বলে একটা ধারনা সৃষ্টি করা হয়েছে। ডায়বেটিস দেহের কি ধরনের সমস্যা সেটি অনেকেই অবগত নয়। ডায়বেটিস হচ্ছে , দীর্ঘদিন ধরে রক্ত ¯্রােতে স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশী Glucose এর উপস্থিতি। রক্ত স্রোতে ৭০মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার থেকে ১০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার পরিমান Glucose ভাসমান থাকলে একে রক্তের স্বাভাবিক Glucose ধরা হয়। এর চেয়ে বেশী হলে হাইপারগালাইসেমিয়া
কম হলে হাইপোগালাইসেমিয়া
ধরা হয়। দেহের Glucose বন্টন ঠিকমত না হলে রক্তে এর কম বা বেশী পরিলক্ষিত হতে পারে।
একজন ৭০ কেজি ওজনের মানুষের ২৪ ঘন্টায় এষঁপড়ংব চাহিদা প্রায় ১৮০ গ্রাম শর্করা যুক্ত খাবার ২৫০/৩০০ গ্রামের সমান। এই এষঁপড়ংব কে কাজে লাগানোর জন্য ২৪ ঘন্টায় ইনস্যুলিন চাহিদা ৩০/৪০ ইউনিট (১ওট= ৩৪.৭ μম )। সুতরাং দেহে এষঁপড়ংব ও ইনস্যুলিন এর অনুপাত ঠিক না থাকে তবে রক্ত ¯্রােতে এষঁপড়ংব কম বা বেশী খাকতে পারে। আবার উৎপাদিত ইনস্যুলিন অব্যবহৃত থাকলেও রক্তে এষঁপড়ংব বেশী থাকতে পারে। রক্তে মাত্রারিক্ত এষঁপড়ংব যে সমস্যা তৈরি করে ,সেটিই মূলতঃ ডায়বেটিস উপসর্গ।
শৃংখলা পূর্ণ জীবন এবং পরিমান মত নির্দিষ্ট খাবার গ্রহনের মাধ্যমেই ডায়বেটিস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। ড্রাগ ব্যবস্থাপনায় ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন, মূলতঃ ডায়বেটিস জনিত বিভিন্ন জটিল রোগের কারন। দেহ ইনস্যুলিন তৈরিতে অক্ষম হলে ইনস্যুলিন ড্রাগ ব্যবহার এর কোন বিক্লপ নেই।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি ড্রাগ :
সিলড্রেনাফিল ( Sildrenafil C22H30N6O4S) :
এই ড্রাগটি লিঙ্গের ইরেকটাইল টিস্যু তে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এই ড্রাগটি PDE-5 (Phospho di esterase enzyme-5) কে ইনহিবিট করে ,যাতে CGMP receptor এর ভাঙ্গন প্রতিরোধ হয়। লিঙ্গের ইরেকটাইল টিস্যু কোষে বেশী পরিমানে CGMP
receptor রয়েছে। CGMP (Cylic Guanosine mono phosphate C10H12N5O7P) দেহের রক্ত নালীকে প্রসারিত করে। GTP থেকে CGMP উৎপন্ন হয়। NO (Nitric Oxide), CGMP সিনথেসিস করে। হৃদরোগ ব্যবস্থাপনায় নাইট্রিক অক্সাইড (এনজিসড) জিহ¦ার নীচে দেয়া হয়। দ্রুতগতিতে নাইট্রিক অক্সাইড, CGMP সিনথেসিস শুরু করে এবং রক্ত নালীর প্রসারন ঘটায়।
সিলড্রেনাফিল মূলতঃ উচ্চ রক্তচাপ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত ড্রাগ। গবেষকগন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সিলড্রেনাফিল এর ক্ষমতা পরীক্ষা করতে গিয়ে লক্ষ্য করেন , এই ড্রাগটি যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিরও ক্ষমতা রাখে। তারপর এই ড্রাগটি Sexenhancer
drug হিসাবে
FDA কতৃক অনুমোদিত ড্রাগ। এটি ভায়াগ্রা নামে বেশী পরিচিত ড্রাগ।
দেহ প্রতি
মুহুর্তেই CGMP তৈরি হয়
এবং ধ্বংশ হয়।
ড্রাগের মাধ্যমে কৃত্রিম
CGMP ব্যবস্থাপনা
করে , কৃত্রিম রক্ত
সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
লিঙ্গের যে উত্থান
ঘটে তা স্বাস্ব্যের
জন্য মোটেই শুভকর
নয়। মেয়েদের
ক্লাইটোরিস ড্রাগের প্রভাবে
একই কাজ করে।
এমাইনোএসিড আর্জিনাইন ভেঙ্গে দেহে প্রতিনিয়ত নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয়। নাইট্রিক অক্সাইড প্রতিনিয়ত CGMP তৈরি করে , দেহের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ঠিক রাখে।
মানুষের লিঙ্গটি বিশেষ ধরনের টিস্যু দিয়ে তৈরি। করপাস কভারনোসাম (Corpus covernosum) এবং করপোরা কভারনোসাম ( Corpora covernosum) হচ্ছে বিশেষ ধরনের টিস্যু যেটি লিঙ্গের দেহ তৈরি করে। উত্তেজনার সময় এই টিস্যু সমূহে বালাড (Blood) প্রবেশ করে এবং টিস্যু গুলির আয়তন (লম্বা ও মোটা) বাড়িয়ে যৌন ক্রিয়ার উপযোগী করে তোলে। টিউনিকা এনবিউজিনিয়া (Tunica Anbuginea) বিশেষ ধরনের টিস্যু আবরন দিয়ে লিঙ্গটি ঢাকা থাকে। এই টিস্যুটি ইলাসটিক এর মত আচরন করে। এটি ইলাসটিন ৫% এবং কোলাজেন ৯৫% প্রোটিন দিয়ে তৈরি। এই প্রোটিন গুলো Glysin, Valine, Alanin, Proline, Lysine নামক এমাইনোএসিড দিয়ে তৈরি।
টিউনিকা এনবিউজিনিয়া টিস্যুর প্রধান কাজ হচ্ছে লিঙ্গের গঠন ঠিক রাখা এবং লিঙ্গের শিরা গুলো কে সংকোচিত রাখা যাতে রক্ত শিরা পথে বের না হতে পারে। এইভাবে নির্দিষ্ট সময় পর্যšত টিস্যুতে রক্ত ধরে রেখে লিঙ্গের উত্থান ঠিক রাখে ।
সুতরাং লিঙ্গের শারীরিক গঠন ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় নিশ্চিত পুষ্টির যোগান
দিতে হবে। ড্রাগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কখনো যৌন স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
কিডনি রোগের ড্রাগ:
কিডনিতে নানা ধরনের রোগ হয়। কিডনি ফ্যাইলুর, কিডনি স্টোন, কিডনি ক্যান্সার।
কিডনির প্রধান কাজ হচ্ছে দেহের পানি ও মিনারেল এর ভারসাম্য রক্ষা করা। এই পানি ও মিনারেল এর উপস্থিতিতেই দেহ কোষ এর ভিতর ও বাহিরের প্রয়োজণীয় উপাদান বিনিময় হয়। দেহে কি পরিমান পানি ও মিনারেল থাকবে এটি কিডনিই নির্ধারন করে দেয়। সুতরাং কিডনি রোগাক্রান্ত হলে দেহে পানি ও মিনারেল এর ভারসাম্য নষ্ট হয়।
দেহ কোষের টক্সিন পদার্থ গুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়ে কিডনির মাধ্যমে প্রে¯্রাব দিয়ে বেড়িয়ে যায়। কিডনির অকার্যকর থাকলে প্রে¯্রাব তৈরি হয় না। ফলে পানি ও টক্সিন পদার্থ দেহে জমতে থাকে। অতিরিক্ত পানি, রক্ত এর পরিমান বাড়িযে দেয়, ফলে হৃদপিন্ডের কাজ বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়। পটাসিয়াম বেড়ে গিয়ে,হৃদপেশীর সংকোচন অবস্থা সৃষ্টি হয়ে,হার্ট অকার্যকর হতে পারে। আবার পটামিয়াম কমে গিয়ে ,হৃদপেশীর প্রসারন অবস্থা তৈরি হয়ে, হার্ট অকার্যকর হতে পারে।
ইরাইথ্রোপোয়েটিন (একটি কিডনি হরমোন) যেটি লাল রক্ত তৈরির জন্য প্রয়োজন হয়। কিডনি অকার্যকর হলে লাল রক্ত তৈরি ব্যহত হয়। ফলে হিমোগ্লোবিন কমে যায় । প্রোটিনজাত বর্জ্য পদার্থ ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, বালাড ইউরিয়া, ক্রিায়াটিনিন ইত্যাদী জমে গিয়ে দেহকে বিপদ গ্রস্ত করে।
কিডনির স্বাভাবিক কাজ জানার জন্য বিশ্ব জুড়ে একটি স¦ীকৃত সাধারন পরীক্ষা ক্রিয়াটিনিনন টেষ্ট। রক্তে ১ এর বেশী ক্রিয়াটিনিনিন থাকলে এটি কিডনির স্বাভাবিক কাজ নয় বলে ধরা হয়। ৪/৫ হলেই দ্রুত ডায়ালিসিস (রক্ত পরিশোধন যন্ত্র) এর পরামর্শ দেয়া হয়।
ক্রিয়াটিনিনিন (Creatinine C4H7N3O) একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ মাংশ। এটি ফসফোক্রিয়াটিন বা ক্রিয়াটিন ফসফেট এর ভাঙ্গনের ফলে সৃষ্টি হয়। এটি অস্থিপেশী ও ম¯িতষ্কের কাজের জন্য শক্তির উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হয়। Phosphocreatin (
C4H10N3O5P) লিভার ও কিডনিতে প্রস্তুত হয়। এটি প্রস্তুতের জন্য আরজিনিন, গ্লাইসিন, ম্যাথিওনিন এই তিনটি এমাইনো এসিড প্রয়োজন হয়। দেহে ক্রিয়াটিন থেকে ফসফোক্রিয়াটিন আবার ফসফোক্রিয়াটিন পূনরায় ক্রিয়াটিন এ পরিনত হয়। বেশীর ভাগ ফসফো ক্রিয়াটিন , অস্থিপেশী ও মস্তিষ্কে অবস্থান করে। এদের শক্তির প্রয়োজন হয় সব চেয়ে বেশী। ফসফোক্রিয়াটিন শক্তি মুক্ত করার পর ক্রিয়াটিনিনিন এ পরিনত হয়। এ ক্রিয়াটিনিনিন কিডনির মাধ্যমে প্রায় শত ভাগ বেড়িয়ে যায়। রক্তে ক্রিয়াটিনিনিন এর উপস্থিতি বেশী হলে মনে করা হয় ,কিডনি সঠিক কাজ করছে না। কিন্তু অন্য কারনেও বেশী ক্রিয়াটিনিনিন থাকতে পারে। যেমন, অতিরিক্ত মাংশ জাতীয় খাবার, ক্রিয়াটিন যুক্ত খাবার, পেশী ও ম¯িতষ্কের অতিরিক্ত কাজ, ক্রিয়াটিন কাইনেজ (এনজাইম) এর অকার্যকারীতায় , দেহে বেশী ক্রিয়াটিনিনিন থাকতে পারে। সুতরাং ক্রিয়াটিনিনিন
বেশী থাকলেই , কিডনি অকার্যকর বলা ঠিক হবে না।
দেহ বর্জের ৮০% কিডনি দিয়ে বের হয়। সুতরাং খাদ্য গ্রহনে সর্তক থাকলে বর্জ কম তৈরি হয়। কিডনিকে কম ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হয়। প্রোটিন ও চর্বি জাতীয় খাবার এর বিপাকীয় বর্জ হচ্ছে শক্তিশালী এসিড। এগুলোর বের হওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে কিডনি। সকল শর্করা জাতীয় খাবারের বিপাকীয় বর্জ বের হয় ফুসফুস দিয়ে। কিডনি রোগীদের খাবার তালিকায় শর্করা (কম রান্না যুক্ত) সংযুক্ত এবং প্রোটিন ও চর্বি বিযুক্ত করা উচিত। প্রোটিন ও চর্বির চাহিদা মিটানোর জন্যে উদ্ভিদজাত চর্বি ও প্রোটিন এর উপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে।
কিডনি রোগীদের শাকসবজী ও ফলমূল খেতে নিষেধ, সাধারন পরামর্শে পরিনত হয়েছে। অথচ মাছ, মাংশ ও চর্বি খাওয়ার ব্যাপারে শক্ত নিষেধাজ্ঞা নেই। শাকসবজী ও ফলমূল খাবারে নিষেধাজ্ঞার কারন হিসাবে বলা হয় ,এটি পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। অথচ পটামিয়াম ছাড়া প্রকৃতির কোন খাবার তৈরি হয় না। প্রকৃতির প্রতিটি খাবারে সবচেয়ে বেশী থাকে পটাসিয়াম। একজন পূর্ন বয়স্ক মানুষের দেহে প্রায় ২০০গ্রাম পটাসিয়াম রয়েছে। বেশীর ভাগ পটাসিয়াম থাকে কোষের অভ্যন্তরে। পটাসিয়াম ও সোডিয়াম বিনিময় এর মাধ্যমে কোষের বাহির ও ভিতরের সব যোগাযোগ স্থাপিত হয়। সুতরাং দেহের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় পটাসিয়াম একটি প্রধান খনিজ পদার্থ। প্রকৃতির প্রতিটি খাদ্য হচ্ছে পটাসিয়াম এর ভান্ডার। তাই মানুষের দেহে পটাসিয়াম এর অভাব হয় না। স্বুস্থ্য কিডনি, দেহে পটাসিয়াম এর ভারসাম্য রক্ষা করে। দেহে পানি বেড়ে গেলে, পটাসিয়াম বেড়ে যায় আবার পানি কমে গেলে পটাসিয়াম কমে যায়। পটাসিয়াম ভারসাম্য হারালে হৃদপেশীর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে হার্ট এ্যটাক এ রোগীর মৃত্যু ঘটে। হার্টের সমস্যার কারনে ব্রেইন স্ট্রোক এর ঝুঁকি বাড়ে।
সুতরাং শাকসবজী , ফলমূল খাওয়া বন্ধ করে পটাসিয়াম এর যে নিয়ন্ত্রন এটি সঠিক নয়। দেহকে দিতে হবে পটাসিয়াম ব্যবস্থাপনা। একটি বিশেষ খাবার না খেয়ে বরং দেহ মারাত্মক বিপর্যয় এর দিকে এগিয়ে যায়। কারন একটি প্রাকৃতিক খাবার,দেহের সব চাহিদা মিটাতে পারে। একজন পূর্ন বয়স্ক মানুষের দৈনিক পটাসিয়াম চাহিদা ৪ গ্রাম।
উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ মাত্রায় ডায়বেটিস ও ব্যাথা নিবারক ঔষধ কিডনির ক্ষতিকে তরান্বিত করে। এই তিনটি রোগের কারনও ভয়ংকর খাদ্য ত্রুটি।
কিডনি সম্পূর্ন অকেজো হলে, ড্রাগ ব্যবস্থাপনা ছাড়া কোন বিক্লপ নেই। ড্রাগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রোগী কে স্বুস্থ করা সম্ভব নয়, কিছু সময় বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। ডায়ালাসিস ও কিডনি সংযোজন রোগীকে কিছু সময় জীবন দান করে। সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই , কিডনি রোগেীদের যথাযত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব।
এন্টি গ্যাসট্রাইটিস ড্রাগ:
রেনিটিডিন (Renitidine C13H22N4O3S) বিশ্ব জুড়ে সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি এন্টি গ্যাসট্রাইটিস ড্রাগ। এই ড্রাগটিকে বলা হয়. H2-receptor antagonist বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন হিস্টামিন-২ একটি (H2) প্রোটিন, পাকস্থলির প্যারিয়েটাল কোষ (হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপন্নকারী কোষ) কে উত্তেজিত করে। ফলে অধিক এসিড ক্ষরন হয়। সিমেটিডিন
, রেনিটিডিন এই ড্রাগ গুলো, হিস্টামিন-২ কে ,প্যারিয়েটাল কোষ এ সংযুক্ত হতে বাঁধা দেয়। ফলে এসিড ক্ষরন বন্ধ হয়।
দেহের রোগ
প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার প্রথম
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শুরু
হয় হিস্টমিন নিঃসরনের
মাধ্যমে। সুতরাং হিস্টামিন-২ নিঃসরনের
পেছনে, দেহের রোগ
প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার কোন
সম্পর্ক রয়েছে। দেহকে
অজানা কোন টক্সিন
এর হাত থেকে
রক্ষার উদ্দেশ্যেই, হিস্টামিন
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে
জাগ্রত করেছে। হাইড্রোক্লোরিক
এসিড এর টক্সিন
(ব্যকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস)
বিনাশী ক্ষমতা রয়েছে।
সুতরাং হিস্টামিন কে
প্রতিরোধের মাধ্যমে, এসিড
ক্ষরন বন্ধ করে,
সাময়িক গ্যাসট্রাটাইটিস থেকে মুক্তি
পেলেও, দেেেহর নিরপিত্তা
ব্যবস্থা মারাত্মক ঝুঁকিতে
ফেলে দেয়।
ওমেপ্রাজল (Omeprazol C17H19N3O3S) :
অন্য একটি শক্তিশালী বহুল ব্যবহৃত এন্টিগ্যাসট্রাইটিস ড্রাগ। এটিকে বলা হয় প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (Proton pump
inhibitor) । প্যারিয়েটাল কোষ এর গ্যাসট্রাইটিস এসিড (HCl) তৈরির শেষ পর্যায়ে হাইড্রোজেন আয়ন কে প্রবেশে বাঁধা দেয়। ফলে এসিড তৈরি ব্যহত হয়।
এন্টিগ্যানট্রাইটিস ড্রাগ গুলো
হাইড্রোক্লোরিকএসিড
নিঃসরনে বাঁধা তৈরি
বা এসিড তৈরি
ব্যহত করার মাধ্যমে
গ্যাসট্রাইটিস লক্ষন দূর
করে। কিস্তু ক্ষত
সারানোর ব্যাপারে এ
ড্রাগের কোন ভূমিকা
নেই। দেহের নিজস্ব
পুর্নগঠন প্রক্রিয়া মূলতঃ
ক্ষত স্থান কে
সারিয়ে তুলেছে।
খাদ্য থেকে পুষ্টি আলাদা করার প্রথম ধাপটি সম্পন্ন হয় পাকস্থলির এসিড নিঃসরনের মাধমে । পাকস্থলির এসিড বেশী সক্রিয় হয় যদি অপ্রাকৃত থাবার দেহে প্রবেশ করে। প্রাকৃতিক খাবারের এনজাইম ,পাকস্থলী সনাক্ত করতে পারে এবং পরিমান মত এসিড নিঃসরনের মাধ্যমে খাদ্যের প্রাথমিক ভাঙ্গন সম্পন্ন করে। তাপ, চাপ ও দীর্ঘ দিনের মজুদকৃত প্রাকৃতিক খাবারের এনজাইম নষ্ট হয়ে যায়। অপ্রাকৃত খাবারের প্রতি পাকস্থলি সক্রিয় হয়ে উঠে এবং অধিক এসিড নিঃসরন ঘটায়।
পারনিসিয়াস নামে একটি দূরারোগ্য রোগের কারন এন্টিগ্যাসটাইটিস ড্রাগ। এই রোগ ভিটামিন-১২ এর অভাবে হয়। এই ভিটামিন লাল রক্ত তৈরির জন্য প্রয়োজন হয়। ভিটামিন-১২ সরাসরি শোষিত হয় না। প্যারিটেরিয়াল কোষ থেকে নিঃসৃত একটি প্রোটিন ইনট্রিকজিক ফ্যাক্টর এটি শোষনে সাহায্য করে। এই প্রোটিন টি , এসিডের সাথে নিঃসৃত হয়। সুতরাং এন্টিগ্যাসটাইটিস ড্রাগ যখন এসিড নিঃসরন বন্ধ করে, একই সময়ে ইনট্রিকজিক
ফ্যাক্টর নিঃসরন ও বন্ধ থাকে। এভাবে দীর্ঘ
দিন এই ড্রাগ
ব্যবহারের কারনে ভিটামিন-১২ শোষন
ব্যহত হয় এবং
পারনিসিয়াস রোগ হয়।
পাকস্থলির এসিড, এন্টাসিড ড্রাগ দিয়ে ও ব্যবস্থাপনা দেয়া হয়। এসিড ও ক্ষার বিক্রিয়া করে প্রস্পর কে নিরপেক্ষ করে দেয়। অধিক ক্ষার অধিক এসিড নিঃসরনে উদ্দীপনা যোগায়। সুতরাং অপরিকল্পিত এন্টাসিড, পাকস্থলির ক্ষত আরও বাড়াতে পারে।
থ্যালাসিমিয়ায় ব্যবহৃত ড্রাগ:
ডিফেরিপ্রোন (Deferiprone C7H9NO2),
Defrioxime (C25H48N6O8) এই ড্রাগ দুটি থ্যালাসিমিয়া রোগীদের আয়রন ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হয়। থ্যালাসিমিয়া রোগীদের একটি বড় সমস্যা হলো রক্তে আয়রন জমে যাওয়া। এই অতিরিক্ত আয়রন লিভার, কিডনি, ব্রেইন এ জমে গিয়ে ঐ অঙ্গ গুলোর কার্যকারীতা হারায়। এই ড্রাগ গুলো আয়রন চেলেটিং (Iron chelating) ড্রাগ। যা রক্তের আয়রনের সাথে বন্ধন তৈরি করে ,মূত্রের মাধ্যমে বের কেরে দেয়।
থ্যালাসেমিয়া (Thalleassemea) শব্দটি থ্যালাস ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ সমুদ্র এবংহেমিয়া যার অর্থ রক্ত। ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী বসবাসকারী অধিবাসীদের দেহে এই রোগ প্রথম সনাক্ত হয়। তাই এ রোগটির নামকরন এভাবে করা হয়।
থ্যালাসেমিয়া এক ধরনের রক্ত রোগ। মানুষের দেহে তিন ধরনের রক্তকনিকা থাকে। লাল কনিকা, শ্বেত কনিকা ও পালাটিলেট। থ্যালাসেমিয়া
হচ্ছে লাল রক্তকনিকার রোগ। প্রতিটি লাল রক্তকনিকার পৃষ্টদেশ হিমোগ্লোবিন
নামক একটি প্রোটিন অনুর আবরন এ মোড়ানো। এ Hemoglobin এর কাজ হচ্ছে,অক্সিজেন গ্রহন ও বহন করে প্রতিটি কোষে পৌঁছে দেয়া এবং একই সময়ে কোষ দেহের উৎপাদিত বর্জ কার্বন ডাই অক্সাইড বহন করে ফুসফুসে নিয়ে আসে। একটি Hemoglobin অনু চারটি Globin (প্রোটিন অনু, ২ টি আলফা ও ২টি বিটা Globin ) এবং একটি Heme (আয়রন ধারনকারী একটি অনুর) সমন্বয়ে তৈরি হয়। প্রতিটি Globin
অনু সুনির্দিষ্ট এমাইনো এসিডের চেইন। প্রতিটি আলফা চেইন ১৪১টি এবং বিটা চেইন ১৪৬টি এমাইনোএসিডের চেইন। Hemoglobin তৈরি হয় মেরূমজ্জায় (Bone marrow tissue) অর্থাৎ হাড়ের ভিতর। মেরুমজ্জা কোষের সাইটোপালাজম (Cytoplasm) এ সিনথেসিস Heme ও Globin যুক্ত হয়ে একটি Hemoglobin অনু তৈরি হয়। সম¯ত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে মেরুমজ্জা কোষের সময় প্রয়োজন এক মিনিটের একটু বেশী। প্রতিটি স্বুস্থ্য দেহে ৯৮% হচ্ছে Hemoglobin A
(২টি আলফা ,২টি বিটা চেইন) বাকী ২% Hemoglobin E (২ট আলফা ,২টি ডেলটা চেইন)। ডেলটা চেইন ও বিটা চেইন এর মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে শুধুমাত্র কিছু এমাইনোএসিড এর পরিবর্তন এর কারেনে। সামান্য এমাইনোএসিডের পরিবর্তনের কারনে পুরো Hemoglobin এর আচরনে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। দ্রুত Hemoglobin ভেঙ্গে গেলে যে রোগটি হয় তার নাম বিটা
থ্যালাসেমিয়া বা থ্যালাসেমিয়া
মেজর বলে।
একজন ৭০ কেজি ওজনের মানুষের প্রায় ৯০০ গ্রাম Hemoglobin থাকে। প্রতি ঘন্টায় ৩ গ্রাম Hemoglobin ধ্বংশ হয় এবং ৩ গ্রাম উৎপন্ন হয়। মানুষের দেহে ৩০ ট্রিলিয়ন লাল রক্তকনিকা রয়েছে। প্রতি সেকেন্ডে ৩০ লক্ষ লাল কনিকা ধ্বংশ হয়। প্রতিটি লাল রক্ত কোষে ২৮০ মিলিয়ন Hemoglobin অনু রয়েছে। প্রতিটি বয়স্ক মানুষের দেহে প্রতি সেকেন্ডে ৯০০ ট্রিলিয়ন Hemoglobin অনু তৈরি হয়। ২৪ ঘন্টায় মাত্র ৮গ্রাম Hemoglobin তৈরি হয়।
দেহে Hemoglobin অব্যবস্থাপনা হচ্ছে থ্যালাসেমিয়া রোগ। এ রোগে দ্রুত (স্বাভাবিক সময় ১২০দিন) ভেঙ্গে যায়। Hemoglobin
ভেঙ্গে গিয়ে আয়রন বেরিয়ে পড়ে। অতিরিক্ত আয়রন দেহে জমে গিয়ে বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এ ধরনের রোগীদের Spleen
এ সমস্যা দেখা দেয়। ত্রুটিপূর্ন রক্তকনিকা গুলো অপসারনের কাজ করে Spleen । ফলে Spleen ফুলে যায়। ধীরে ধীরে লিভার আক্রাšত হয়। Hemoglobin স্বল্পতার কারনে দেহে অক্সিজেন স্বল্পতা এবং কার্বন ডাই অক্সাইড আধিক্য দেখা দেয়। Hemoglobin দেহের এসিড ও ক্ষার এর ভারসাম্য রক্ষা করে। ফলে এর প্রভাবে দেহ এসিড ভারাক্রাšত হয়ে পড়ে। দেহ কোষের প্রানরাসায়নিক কাজ সম্পন্ন হয় সামান্য ক্ষারীয় পরিবেশে। এসিড আধিক্যের কারনে ধীরে ধীরে দেহ কোষ বিনষ্ট হতে থাকে।
স্বুস্ব্য Hemoglobin এ ২টি আলফা ও ২টি বিটা চেইন থাকে। আলফা ও বিটা চেইন তৈরির ফরমায়েস আসে , কোষে সংরক্ষিত জেনিটিক্যাল কোড অর্থাৎ জীন থেকে। জন্মগত ভাবে যদি একটি জীন (আলফা বা বিটা) এর ত্রুটি থাকে , তবে লাল রক্তকনিকা Sickle অর্থাৎ কাঁচির আকার ধারন করে। এটির আকার পরিবর্তনের কারনে, রক্তজালিকা অতিক্রম করার সময় ভেঙ্গে যায়। এটি ধীরে ধীরে সমস্যা তৈরি করে। এ ধরনের থ্যালাসেমিয়া কে সীকল চেইন ট্রেইট বলে। দুটি জীন (আলফা ও বিটা চেইন) ত্রুটিপূর্ন থাকলে তবে এ ধরনের থ্যালাসেমিয়া কে সীকল চেইন ডিজিজ বলে। এটি কখনো আরোগ্য হয় না। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা স্টেম সেল প্রতিস্থাপন অত্যন্ত ব্যয় বহুল ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ,ঝুঁকি পূর্ন এবং সাফ্যল্যের হার অত্যন্ত কম।
জন্ম নিয়স্ত্রন ড্রাগ (Contraceptive Pill) :
Estradiol ( C18H24O2)
& Progersteron (C12H30O2)
এই দুটি হরমোন জন্ম নিয়ন্ত্রন ড্রাগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই হরমোন দুটি মেয়েদের ডিম্বাশয়ে তৈরি হয়। এই হরমোন দ্বয় তৈরির নির্দেশ আসে ম¯িতষ্কের পিটুইটারী গ্রন্থি হতে। পিটুইটারী গ্রন্থির দুটি হরমোন ,ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH) ও লিউইআাইটাইজিং হরমোন, (LH) পর্যায়ক্রমে এসট্রোজেন , (এসট্রাডিয়ল, এসট্রোল, এসট্রোন ) ও প্রোজেসটেরন হরমোন তৈরির নির্দেশ দেয়। এসট্রোজেন ও প্রোজেসটেরন
মেয়েদের প্রজনন তন্ত্রের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা ও মেয়েলি অঙ্গ গুলোর গঠন নির্দেশনা প্রদান করে। বয়ঃসন্ধি (Puberty) থেকে রজঃনিবৃত্তি (Manopause) সময়কাল পর্যšত এই এসট্রোজেন ও প্রোজেসটেরন এর নিঃসরন ঘটে।
একটি গবেষনায় বিজ্ঞানিরা লক্ষ্য করেছেন, অতিরিক্ত এসট্রোজেন ও প্রোজেসটেরন, এর মাধ্যমে গর্ভধারন প্রক্রিয়া কে বাঁধাগ্র¯ত করে। এসট্রোজেন ও প্রোজেসটেরন, ম¯িতষ্কের হরমোন FSH ও LH এর নিঃসরন বন্ধ করে দেয়। অধিকাংশ জন্মনিয়ন্ত্রন ড্রাগ গুলো শুধুমাত্র প্রোজেসটেরন ( প্রোজেসটিন ) দিয়ে তৈরি। ড্রাগ প্রোজেসটেরন জরায়ুর গঠন কে ত্বরান্বিত ও ঘন করে, যার ফলে শুক্রানুর প্রবেশ র্দুভেদ্য হয়ে পড়ে।
ঋতু চক্রের প্রথম ১৫দিন, ডিম্বাশয় থেকে এসট্রোজেন এবং ডিম্বানু নিষিক্ত করন সময় থেকে সšতান প্রসব সময় পূর্ব পর্যšত প্রোজেসটেরন এর নিঃসরন অব্যাহত থাকে।
নারীর বৈশিষ্ট্য প্রদানকারী হরমোন এট্রোজেন (Estrogen
C18H24O2) নারীর ¯তন, আর্কষনীয় চর্ম, নিতম্ব, প্রজনন তন্ত্রেও বিকাশ ও উন্নয়ন অর্থাৎ ডিম্বানুর পরিপক্ককরন, নিষিক্তকরন, জরায়ুতে প্রতিস্থাপন ও লালন পালন এবং সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যšত সকল প্রান রাসায়নিক কাজের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। পুরুষের প্রতি যৌন আর্কষন এই হরমোন এর জন্যই হয়ে থাকে।
অন্যদিকে টেসটোসটেরন,(Testosterom
C19H28O2) পুুরুষের সকল বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রনকারী হরমোন। পেশীবহুল দেহ, দাঁড়ি, গোঁফ, শুক্রানু তৈরি, যৌন অঙ্গের বিকাশ ও নারীর প্রতি যৌন আর্কষন এই হরমোন এর নির্দেশই হয়ে থাকে।
অথচ Estrogen C18H24O2 &
Testosterom C19H28O2 এর পারমানবিক গঠন লক্ষ্য দেখা যাবে , Testosterom C19H28O2 মাত্র একটি কার্বন পরমানু ও ৪টি হাইড্রোজেন পরমানু বেশী নিয়ে পুরুষত্ব দেখায়। অন্যদিকে Estrogen C18H24O2 মেয়েলিত্ব দেখায়।
অর্থাৎ একটি বস্তুর পুরো বৈশিষ্ট্য পাল্টে যায় বস্তু গঠনের পরমানু ¯তরে একটি বা দুটি পরমানু কম বা বেশী থাকার কারনে।
নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রন
পিল ব্যবহারের কারনে
ঋতুচক্রে, প্রজনন তন্ত্রে
ও শারীরিক গঠনে
নানা ধরনের বিশৃংখলা
দেখা দেয়। যা
পরবর্তীতে ক্যান্সার থেকে
শুরু করে সন্তান
ধারনে অক্ষমতা সব
সমস্যাই তৈরি হতে
পারে।
জন্মনিয়ন্ত্রনে প্রাকৃতিক ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি, যার কোন ধরনের শারীরিক কোন ক্ষতি নেই। ঋতুচক্রের ১০ তারিখ থেকে ২০তারিখ পর্যšত যৌনমিলন থেকে বিরত থাকলে গর্ভধারনের সুযোগ থাকে না। গবেষনায় দেখা গেছে, ঋতুচক্রের ১৪ দিনের মাথায় (২দিন আগে বা পরে) ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম্বানু মুক্ত হয়। আর শুক্রানু ৫/৭ দিন জরায়ুতে বেঁচে থাকে। মুক্ত ডিম্বানু বেঁচে থাকে ২/৩ দিন। সুতরাং ঋতুচত্রের ১০ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যšত যৌনমিলন না হলে গর্ভসঞ্চার হয় না।
End
No comments:
Post a Comment